বরিশালে মহাসমাবেশকে সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে সড়ক পরিবহন ধর্মঘট সহ বিভিন্নস্থানে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পাশাপাশি নানামুখি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জনশ্রোত বন্ধ করা যাবেনা বলে দলীয় নেতৃবৃন্দ দাবী করেছেন। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জ¦ালানী তেল সহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী শণিবার বরিশালের বিভগীয় মহাসমাবেশের বিষয়ে সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে বুধবার দুপুরে বরিশাল প্রেস ক্লাবে আহুত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটি’র সদস্য বেগম সেলিমা রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়াকে ‘ মাদার অব ডেমোক্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করে তাকে মুক্ত করা সহ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার অঙ্গিকার ব্যাক্ত করেন। তিনি জানান, সরকারী দল ও প্রশাসনের সব বাঁধা বিপত্তি মোকাবেলা করে ইতোপূর্বে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ,খুলনা ও রংপুরবাসীর স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনের মধ্যে দিয়ে গনসমাবেশগুলো জনসমুদ্রে পরিনত হয়েছিল। শণিবার বরিশালের গনসমাবেশও মহাসমাবেশে রূপান্তরিত হবে বলে জানান তিনি। সেলিমা রহমান বলেন, এসব মহাসমাবেমেশের মধ্যে দিয়ে প্রমানিত হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকারকে জনগন আর ক্ষমতায় দেখতে চায়না। দেশের সব বিরোধী দল ইতোমধ্যে সরকার পতনের লক্ষ্যে যুগপত ভাবে বিএনপি’র সাথে আন্দোলন করার ঘোষনা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আগামী শণিবার দক্ষিণাঞ্চলের জনগন সব বাধা বিপত্তি উপেক্ষ করে গনসমাবেশ সফল করার মাধ্যমে প্রমান করে দেবে ‘আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা নয়, দেশের গনতন্ত্র প্রিয় মানুষ ভোটের অধিকার হরনকারী বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চায়।
সাংবাদিক সম্মেলনে গনসমাবেশের প্রস্তুতি কর্মকান্ডে বরিশালের গড়িয়ারপাড়, উজিরপুর, বানরীপাড়া,বাকেগঞ্জ, পটুয়াখালী ও ভোলার চরফ্যাশনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার কথাও তুলে ধরা হয়। এমনকি বুধবার সকালে ভোলার চরফ্যাশনে যুবদল কর্মীদের ওপর হামলার ছবিও প্রদর্শন করেন ভোলা জেলা বিএনপি নেতা। বরিশালের গৌরনদীÑআগৈলঝাড়ার সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন তার এলাকার কোন বিএনপি নেতা-কর্মী বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না বলেও উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, শণিবারের মহাসমাবেশের দিন ও আগের দিন বরিশালে পরিবহন ধর্মঘট না করার জন্য পরিবহন মালিকÑশ্রমিকদের চিঠি দিয়েও অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কোন উত্তর মেলেনি। মূলত সরকারী দলের ছত্রচ্ছায়ায় এ গনবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ ও প্রশাসনের পেশাদার অংশকে ধন্যবাদ জানিয়ে আশ^স্ত করা হয় যে, ‘গুটি কতেক দলবাজ কর্মকর্তার কারণে গোটা পুলিশ ও প্রশাসনকে জনগন যাতে ভুল না বোঝে, বিএনপি সে বিষয়ে সজাগ আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে’।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জনগনের অধিকার আদায়ের এ লড়াই শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত জনগনকে সাথে নিয়ে চুড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমে গনবিরোধী সরকারের পতন ঘটিয়ে দল নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই অব্যাহত থাকবে।
প্রেস ক্লাবের এ সংবাদ সম্মেলনে গন সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল, ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান, সহকারী সমন্বয়কারী আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহবুবুবল হক নান্নু সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বুধবারও বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিবিন্ন এলাকায় মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মহাসমাবেশে যোগদানের লক্ষে জনগনের মাঝে লিফলেট বিতরন করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ারও লিফলেট বিতরনে অংশ নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন