টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে গ্রæপ-২ এ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বৃষ্টি আইনে প্রোটিয়াদের হারিয়ে আসরে টিকে থাকলো পাকিস্তান। গতকাল অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে পাকিস্তান ৩৩ রানে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য বৃষ্টি কখনো আশীর্বাদ বয়ে আনেনি। যার প্রমাণ এবারো পেলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কাল সিডনিতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ছিল ১৮৬ রান। কিন্তু বৃষ্টি অনেকটা সময় ধরে ঝরলে পরে ১৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪২। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অনেকটাই অসহায় দেখা গেছে প্রোটিয়াদের। শেষ পর্যন্ত তারা ম্যাচটি হেরে গেলে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে খেলার ক্ষীণ আশা বেঁচে রইলো।
বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই বিপদে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তার চেয়েও বড় দুঃসংবাদ ছিল ডেভিড মিলার নেই ম্যাচে নেই! তার অনুপস্থিতি দলে কেমন প্রভাব ফেলে তার ফলটা তো হাতেনাতেই পেয়েছে প্রোটিয়ারা।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮ ওভারের মধ্যে ৬৯ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ৪ উইকেট। কুইন্টন ডি কক (০) এবং রাইলি রুশো (৭) জ্বলে ওঠার আগেই কাটা পড়েন। ইনিংসের অষ্টম ওভারে তাদের সর্বনাশ করেছেন মূলত শাদাব খান। জোড়া আঘাতে তিনি ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার দুই সেট ব্যাটার তেম্বা বাভুমা (৩৬) ও এইডেন মারক্রামকে (২০)। বৃষ্টির পর ওভার কমে গেলে তখন চাপটাও বাড়ে বেশি। সেই চাপে পিষ্ট হয়ে প্রোটিয়ারা আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। হাইনরিখ ক্লাসেন ও ত্রিস্টান স্টাবসের উপর অনেক কিছু নির্ভর করলেও তারা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। ক্লাসেন ১৫ রানে ফেরেন। তারপর একে একে সাজঘরে ফিরেছেন ওয়েইন পারনেল (৩), ত্রিস্টান স্টাবস (১৮)। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে ১০৮ রান তুলতেই শেষ করে ১৪ ওভার।
শাহীন আফ্রিদি ১৪ রানে পান ৩ উইকেট। ১৬ রানে ২টি উইকেট নেন শাদাব খান। ১৩, ১৯ ও ৪৪ রানে একটি করে উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম, নাসিম শাহ ও হারিস রউফ ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামলেও পাকিস্তানের স্বীকৃত টপ অর্ডার পুরোপুরিই ব্যর্থ ছিল। ৪৩ রানে বিদায় নেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (৪), মোহাম্মদ হারিস (২৮), বাবর আজম (৬) ও শান মাসুদ (২)। দলীয় ৯৫ রানে মোহাম্মদ নওয়াজ ফিরলে তখনো বোঝা যায়নি শেষটায় কি অপেক্ষায় করছে? ১৮.৫ ওভার পর্যন্ত মাত্র ৩৬ বলে ৮২ রানের জুটি উপহার দিয়ে স্কোরবোর্ডের চেহারাই বদলে দেন শাদাব খান ও ইফতিখার আহমেদ। দুজনেই পান বিস্ফোরক ফিফটি। তাদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ১৮.৫ ওভারে পাকিস্তান পায় ৬ উইকেটে ১৭৭ রান! শাদাব খান ২২ বলে ৩ চার ও ৪ ছয়ের মারে ৫২ রান করে ফিরলে ভাঙে জুটি ভাঙে। পরের বলে শূন্য রানে বিদায় নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ১৯.১ ওভারে ইফতিখার আহমেদের দুর্দান্ত ইনিংসও থামে। ৩ চার ও ২ ছক্কায় তার ৩৫ বলের ইনিংসে তিনি করেন ৫১ রান। টানা তিন বলে উইকেট পড়ায় শেষটা হয়ে পড়ে ধীরগতির। তারপরেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। এই সংগ্রহে দক্ষিণ আফ্রিকার বাজে ফিল্ডিংও অবদান রাখে। ইনিংসে ক্যাচ মিসের ঘটনা ঘটেছে ৫টি!
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪১ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন এনরিখ নর্কিয়া। একটি করে উইকেট পান ওয়েইন পারনেল, কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি ও তাবরেইজ শামসি। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে অবদান রাখায় ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান শাদাব খান।
ম্যাচ জিতে এই গ্রæপে চার খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তৃতীয়স্থানে উঠেছে পাকিস্তান। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয়স্থানে থাকলেও ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে ভারত। আর চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে চতুর্থস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
আজকের খেলা
নিউজিল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড, সকাল ১০টা
অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান, দুপুর ২টা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন