শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়বে কি না সিদ্ধান্ত আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আগামীকাল সোমবার সিদ্ধান্ত জানাবে। গতকাল রোববার বিইআরসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সোমবার বেলা ১২টায় বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যহার পুনর্নিধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত কমিশন আদেশ প্রদান করবে। গত ১৩ অক্টোবর বিইআরসি পিডিবির আবেদনে তথ্যের অস্পষ্টতা, বিতরণ কোম্পানি ও ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বিশ্লেষণ না থাকাসহ কয়েকটি কারণে দাম বৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে দেয়। গত১৪ নভেম্বর পিডিবি ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বর্তমান দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৫৮ টাকা করার আবেদন করে। বিপিডিবির এই প্রস্তাব গ্যাসের আগের দর ইউনিট প্রতি ৪.৪৫ টাকা বিবেচনায়। ওই প্রস্তাবের পর ইউনিট প্রতি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৫৭ পয়সা করে। বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটি ভর্তুকি ছাড়া ৮.১৬ টাকা করার মতামত দেয়। অতীতে কখনও এতো বেশি পরিমাণে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়ার নজির নেই। ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি হলেও তাও হবে নজির বিহীন। সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দর ইউনিট প্রতি ৫.১৭ টাকা নির্ধারণ করে।

বিপিডিবির পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিদ্যুতে গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২.১৩ টাকা, গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১৬ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, কয়লার মুসক বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ৪.২৪ টাকায়। পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে। বিপিডিবি বিদ্যুতের একক পাইকারি বিক্রেতা। ৫টি বিতরণ কোম্পানির কাছে পাইকারি দরে বিক্রির পাশাপাশি নিজে ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের শহরাঞ্চলে বিতরণ করে যাচ্ছে। তবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কোন যৌক্তিকতা দেখছেন না ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, ব্যয়বহুল বলে ডিজেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে, একই কারণে স্পর্ট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ। এখনতো বিদ্যুতের দাম কমানো উচিত।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সম্প্রতি গ্যাসের দাম বেড়েছে। এরপর জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। সেই ধাক্কা এখনও সামাল দিতে পারছেনা জনগণ। এসব দাম বৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। পাইকারি দাম বৃদ্ধি হলে সরাসরি ভোক্তাদের উপর প্রভাব পড়বে না। তবে পাইকারি দাম বাড়লেই খুচরা দাম বৃদ্ধি আবশ্যক হয়ে পড়বে। তাতে বাজার পরিস্থিতি নাজুক পড়ে পড়বে।

অন্যদিকে পাইকারি দাম বৃদ্ধিকে কোম্পানিগুলো ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। সাধারণত সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণকে বিবেচনায় নিয়ে বিতরণ কোম্পানির রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়। সরবরাহকৃত বিদ্যুতের দামের সঙ্গে বিতরণ কোম্পানির পরিচালন ব্যয় যোগ-বিয়োগ করে খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ায় বিতরণ কোম্পানিগুলো রাজস্ব কমে গেছে। পাইকারি দাম বৃদ্ধি পেলে সেই সুযোগে কম উৎপাদনকে সামনে এনে বেশি করে দাম বৃদ্ধির চাইবে। যা কৌশলগতভাবে উপেক্ষা করার সুযোগ থাকবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন