বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, মহান আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর মাধ্যমে যে বিধান দিয়েছেন, সেই বিধান অনুযায়ীই চলতে হবে। আল্লাহ যে পদ্ধতিকে হালাল করেছেন তা মেনে চলতে হবে। যারা দ্বীন বুঝেন তারা আল্লাহর বিধানের বিন্দুমাত্র লঙ্ঘন করতে পারেন না। আল্লাহর রাসূল (সা.) যে পথ দেখিয়েছেন সেপথেই হাটতে হবে।
খতিব বলেন, আল্লাহ মোমেন-মোমেনাতের জান-মাল, ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন। সমস্ত মাখলুকাতকে মানবজাতির উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর হক, বান্দার হক যথাযথ ভাবে আদায় করতে হবে। আল্লাহর মর্জি অনুযায়ীই জীবন-যাপন করতে হবে।
মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান মানবজাতির জন্য কল্যাণকর ও যুগোপযোগী। প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষায় ইসলাম দিয়েছে বাস্তবধর্মী নির্দেশনা। মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ সড়ক বা চলাচলের রাস্তা ব্যবহারেও ইসলাম যুগান্তকারী বিধান দিয়েছে। রাস্তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও উন্মুক্ত রাখার জন্য সওয়াব ও আকর্ষণীয় প্রতিদানের ঘোষণার পাশাপাশি রাস্তায় জনগণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো কিংবা অপ্রয়োজনে রাস্তা বন্ধ রাখলে কঠিন শাস্তির কথাও কোরআন-হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
একজন মুসলমান রাস্তায় নিজের নিরাপদ চলাচলের অধিকারের ব্যাপারে যেমন সচেতন থাকবে, তেমনি অন্যের অধিকারের ব্যাপারেও সচেতন থাকবে। রাস্তাকে এমনভাবে ব্যবহার করতে পারবে না, যেটা অন্যের দুর্ভোগ ও ভোগান্তির কারণ হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে রাস্তার মোড়ে বড় প্রজেক্টর কিংবা মনিটর স্থাপন করে জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হচ্ছে। ঠিক তেমনই গভীর রাতে পছন্দের দলের বিজয়ে উল্লাস, চিৎকার, চেঁচামেচি করে মানুষকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু বাচ্চা, অসুস্থ এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে তাদের জীবন এবং মানসিক বিকাশ হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। এটা পরিষ্কার হারাম ও অমার্জনীয় অপরাধ। ইসলামের অনন্য সৌন্দর্য হচ্ছে, কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না, রাস্তা আটকিয়ে জনগণের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। রাস্তা নিরাপদ ও পরিচ্ছন্নকরণের এ বিষয়টি সরাসরি ঈমানের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং ঈমানের পরিচায়ক। এ প্রসঙ্গে নবীজি (সা.) বলেন, ‘ঈমানের ৭০টিরও বেশি শাখা আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান শাখা হলো, এ কথার স্বীকৃতি দেয়া যে, আল্লাহ তা’য়ালা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আর সর্বনিম্ন শাখা হল রাস্তায় কোনো কষ্টদায়ক বস্তু থাকলে তা সরিয়ে দেয়া।’ (বুখারি-৯)।
খতিব আরো বলেন, আখেরাতকে ভুলে আমরা দুনিয়ার খেলা-তামাশায় মত্ত রয়েছি। অথচ মহান আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, “তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনকে নিয়ে পরিতুষ্ট হয়েছ? জেনে রাখ, আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনে ভোগের উপকরণ একেবারেই নগণ্য ও তুচ্ছ।” (সূরা তাওবা, আয়াত নং-৩৮)। অন্য আয়াতে আরো বলেছেন, “দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত!” (সূরা আনকাবুত, আয়াত নং-৬৪)। মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে দুনিয়ার স্বল্প সময়কে কাজে লাগিয়ে আখেরাতের অনন্তকালের জীবনে অনাবিল শান্তি লাভের তৌফিক দান করেন, আমীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন