মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাঙ্গ হল ঢাবির ফুটবল উন্মাদনা

রাহাদ উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:৫৪ এএম

বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই দেশজুড়ে এক বিরাট উন্মাদনা। এবার সেই উন্মাদনার রাজধানী ছিল প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই এবার ঢাবি ক্যাম্পাসে ফুটবলের দুই পরাশক্তি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল দেখার মতো। প্রতিটি হলের দেয়াল ছিল দু’দলের পতাকা মিশ্রিত আবেগ অনুভূতির চাদরে আবৃত। ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার খেলার দিন ছিল সমর্থকদের বিশেষ দিন। এদিন প্রিয় দলের জার্সি পরিধান করে ক্যাম্পাস মাতিয়ে বেড়াতো সমর্থকরা। টিএসসি আর মুহসীন হল মাঠে বড় পর্দায় দেখানো হতো খেলা। এ আয়োজন নজর কাড়ে খোদ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক সংস্থা ফিফার। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলার দিন টিএসসি আর মুহসীন হল মাঠের চিত্র স্থান পায় বিশ্ব মিডিয়ায়। প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও হয় দেশজুড়ে। তবে উন্মাদনা কিংবা উদযাপন যা-ই হোক না কেন ফুটবলপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে এ আয়োজন ছিল বিরাট কর্মযজ্ঞ।

কাতার বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে থাকা ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে লাখো সমর্থককে কাঁদিয়ে বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে। অপরদিকে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সউদী আরবের কাছে হেরে খাদের কিনারে পড়া আর্জেন্টিনা ঘুরে দাঁড়ায় বীরদর্পে। একে একে শক্তিশালী সব দলকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে দলটি। ফাইনালের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত দলটিকে ঘিরে সমর্থকদের ছিল আকাশসম প্রত্যাশা। গতকাল রোববার বাংলাদেশী সময় রাত ৯টায় শুরু হয় কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা। লড়াই হয় ফুটবলের দুই পরাশক্তি আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের মধ্যে। সমর্থকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। লাখো আর্জেন্টিনা সমর্থকদের একটাই প্রত্যাশা ছিল যে, মেসির হাতেই এবার শিরোপা উঠুক।

গতকাল সন্ধ্যা থেকেই ঢাবির টিএসসি ও মুহসীন হল মাঠে খেলা দেখার জন্য ভীড় জমায় হাজার হাজার ফুটবল প্রেমী। চোখে মুখে সবার একটাই স্বপ্ন। এবারের বিশ্বকাপটা গ্রহের সেরা জাদুকর লিওনেল মেসির হাতেই উঠুক। সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল, প্রথম ম্যাচে হেরে একের পর এক নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ফাইনালে শেষ হাসি হাসবেন মেসির দল আর্জেন্টিনা। সব ধরণের আক্ষেপ পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েই ঘরে ফিরবে তারা।

আর্জেন্টিনা সমর্থক ঢাবি শিক্ষার্থী তানি তামান্না বলেন, আর্জেন্টিনা সাপোর্টারেরা ছাড়াও সারাবিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষেরা মেসির নান্দনিক এবং শৈল্পিক পায়ের যাদুতে মুগ্ধ। তারা নিশ্চয়ই এবারের বিশ্বকাপের ট্রফিটি মেসির হাতে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন। টিম আর্জেন্টিনা এবার অনেক পরিণত, অনেক নিবেদিত। টিমে অনেক মেধাবী ইয়াংস্টারসহ মেসি দুর্দান্ত ফর্মে আছে। যদিও ফ্রান্স যোগ্য প্রতিপক্ষ তবে আর্জেন্টিনা জিতবে এ ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।

মেসিভক্ত ঢাবির আরেক শিক্ষার্থী শেখ মোহাম্মদ আরমান বলেন, ‘জীবনে যতদিন বাঁচি আর্জেন্টিনার হাতে ট্রফি না দেখলেও কোনো দুঃখ থাকবে না, শুধু কাতার বিশ্বকাপটা মেসির হাতে দেখতে চাই। আমরা যারা আর্জেন্টিনা করি এবং আমাদের যাদের বয়স ৩০ এর মধ্যে, আমরা কখনো আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখি নাই। এটা নিয়ে অন্যান্য দলের সমর্থকরা আমাদের টিপ্পনী কাটে, কিন্তু আমরা হতাশ হই না। কোনো ট্রপির জন্য আমরা দল সাপোর্ট করি না। তবে মেসি যেই মানের খেলোয়াড় তার হাতেই ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফিটা বেশি মানাবে বলে আমার বিশ্বাস। শুধু এই জন্যই চাই যেন ট্রফিটা আর্জেন্টিনা পায়।’

শক্তিশালী দল ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়ের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে স্মৃতি আফরোজ সুমি নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আর্জেন্টিনার অপনেন্ট ফ্র্যান্স অবশ্যই শক্তিশালী একটি দল। ইতিমধ্যে ফাইনালে ওঠার মাধ্যমে তারা সেটা প্রমাণ করেছে। আর্জেন্টিনার চাইতে ফ্রান্স বেশকিছু দিক দিয়ে এগিয়ে আছে, তবে আর্জেন্টিনার বিগত ম্যাচ গুলো দেখলে বোঝা যায় তারা প্রতি ম্যাচেই আগের তুলনায় সেরাটা দিচ্ছে। খুব চমৎকার একটা ম্যাচ উপভোগ করতে যাচ্ছি আজ আমরা। যেহেতু মেসি, ডি মারিয়ার শেষ বিশ্বকাপ এটা। খুব করে চাইবো এই কিংবদন্তীর হাতে বিশ্বকাপ ট্রফিটা উঠুক।’
এতক্ষণে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন কি ঘটেছে তার ভাগ্যে!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন