নগরীর কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ‘যৌন হয়রানির’ অভিযোগে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। গতকাল রোববার নগরীর চকবাজার এলাকায় অবস্থিত ঐ স্কুলে বই উৎসব অনুষ্ঠান বন্ধ রেখে এ বিক্ষোভ করা হয়। দুই ঘণ্টা বিক্ষোভের পর স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওই শিক্ষককে সরিয়ে নতুন নারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রীদের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ ক্লাস রুম থেকে ছাত্রীদের কথা বলতে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গায়ে হাত দেয়াসহ বিভিন্নভাবে যৌন নিপীড়ন করে থাকেন। এছাড়াও স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলার নামেও নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন ছাত্রীদের। বিক্ষোভকারী দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন স্কুলের রেডক্রিসেন্ট, গালর্স গাইড, বার্ষিক পুরস্কার বিতরণীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে ছবি তোলার নামে হয়রানি করেন। পাশাপাশি কেউ তার পাশে ছবি তুলতে দাঁড়ালে মাস্ক খুলে ছবি তোলার জন্য জোরাজোরি করে থাকেন এবং গায়ে হাত দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় কোন ছাত্রী সেটার প্রতিবাদ করলে তাকে নানাভাবে হুমকি দিতেন। এর আগেও তার নামে অনেকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ক্ষমতার ভয়ে সবাই এতদিন চুপ ছিল। আমরা তার অপসারণ চাই। নিজের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা দাবি করে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমাকে স্কুল থেকে বদলি করতে সাবেক ও বর্তমান কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে এ ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে। বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে স্থানীয় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষককের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছিল। পরে আমি সেখানে গিয়ে মেয়রকে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনি প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনকে স্কুল থেকে সরিয়ে দিয়ে নতুন করে নারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা ও তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়ার পর ছাত্রীরা বিক্ষোভ থেকে সরে আসেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৩ সালে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে হয়েছিলেন বরখাস্তও। ৫ বছর পর বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয়ে ফের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন