নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়সহ (ঢাবি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শীতার্তদের মাঝে প্রায় দুই সহস্রাধিক কম্বল বিতরণ করেছে ছাত্রলীগ। একই দিনে ঢাবির ঐতিহাসিক বটতলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ)।
এর আগে গতকাল সকাল ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়ে পরে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালন করেন ছাত্রলীগ।
বিকেল ৩ টায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ উপলক্ষে ঢাবির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে সংগঠনটি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, এমপি। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ও বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। আজকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। ইতোমধ্যে ৫ কোটি শিক্ষার্থী স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে। আমরা স্মার্ট ক্যাম্পাসও স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থার কথা বলছি। শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সংকটে আমরা পাশে থাকব। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্র সমাজের প্রতি আমাদের আহ্বান, আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা লাখো শহীদের উত্তরাধিকার। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা বাস্তবায়ন করব। আজকে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ মনে করে শেখ হাসিনাকে পুননির্বাচিত করা হচ্ছে দেশপ্রেমের অংশ, আমাদের নৈতিক কর্তব্য। এসময় তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পুননির্বাচিত করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় আলোচকের বক্তব্যে প্রফেসর মাকসুদ কামাল ছাত্রলীগের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আগামী দিনেও ছাত্রলীগকে সকল দুর্যোগ দুর্বিপাকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আমিনুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ একটা সময় অলীক কল্পনা হলেও এখন তা বাস্তব। আর এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কারণে। তাই বঙ্গবন্ধু কন্যার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার জন্য ছাত্রলীগের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমি ছাত্রলীগকে তাদের কর্মের জন্য ভালোবাসি। যখন কৃষকের ধান কাটার লোক থাকে না তখন ছাত্রলীগ তাদের ধান কেটে দেন। দুর্যোগ দুর্বিপাকে ছাত্রলীগ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। করোনার সময় মানুষের মাঝে অক্সিজেন নিয়ে সেবা দিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে ছাত্রলীগ যেভাবে সকল দুর্যোগ দুর্বিপাকে দুঃস্থ অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে, যেভাবে নিজেদেরকে সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হতে পেরেছে ঠিক সেভাবেই আগামী দিনেও ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়ায় সেই আহ্বান জানান ডা. এনামুর রহমান। এসময় তিনি দেশব্যাপী দুঃস্থ অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য ছাত্রলীগকে আরো ৫ হাজার কম্বল অনুমোদন দেয়ার কথা জানান।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুধু রাজধানীতে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়েছে এবং দেশব্যাপী সকল ইউনিট নিজেদের মতো করে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাসব্যাপী শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের কথা জানান ইনান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন