শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইসরায়েলি বসতি প্রশ্নে জাতিসঙ্ঘের ভোটাভুটি স্থগিতের নেপথ্যে ট্রাম্প

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে ফোন করার পরই পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি বন্ধের প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘের ভোটাভুটি স্থগিত করে মিসর।
এ ইস্যুটি মোকাবেলা করার জন্য ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারকে সুযোগ দেয়ার ব্যাপারে দুই নেতা সম্মত হওয়ার পরই ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়েছে। মিসরের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এর আগে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিও প্রস্তাবটি পাস না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, গত বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিসর একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। তাতে দাবি জানানো হয়, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ জরুরি ভিত্তিতে ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ করতে হবে। মিসরের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘ইসরায়েলের ওইসব বসতির কোনও বৈধতা নেই। আর তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতিসংঘে এ নিয়ে ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ মিসর প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়ায় ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। কেন হঠাৎ করে মিসর তার সিদ্ধান্ত পাল্টালো তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। শুরু থেকেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল এর নেপথ্যে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের কথা। কেননা, প্রস্তাবটি যেন পাস না হয় সে ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পক্ষে ছিল বলে গুঞ্জন শোনা যাওয়ার পর এ প্রচেষ্টা শুরু হয়। ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী দলের সঙ্গেও যোগাযোগ করে ইসরায়েল সরকার। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সকালেই নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি প্রস্তাব পাস না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাতেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। যেকোনওভাবে হোক প্রস্তাবটি ঠেকাতে উদ্যোক্তা দেশকেই রাজি করানোর কথা ভাবেন তিনি। আর সেই লক্ষ্যে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আর সিসিকে ফোন করেন ট্রাম্প।
গতকাল সিসির মুখপাত্র আলা ইউসেফ জানান, ‘দায়িত্বগ্রহণের অপেক্ষায় থাকা ট্রাম্পের  প্রশাসনকে এ ইস্যুটি মোকাবেলা করার সুযোগ দিতে দুই নেতা একমত হন। তিনি বলেন, ‘ফোনালাপে তারা দুজন আঞ্চলিক বিষয়গুলো ও মধ্যপ্রাচ্যের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছে এবং সেই প্রেক্ষিত থেকে ইসরায়েলি বসতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনকে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে মোকাবেলা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।’
২০১১ সালে একই রকমের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলি বসতি
মার্কিন এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, জাতিসংঘে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার সুযোগ করে দিতে ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী সরকার। দেশটির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সে খবর পেয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসরায়েল। এ ব্যাপারে ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী দলের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। মিসরের প্রস্তাবের পরই যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ এর দশকের শুরু থেকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ১শ’রও বেশি বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে চায় না। -সূত্র : ওয়েবসাইট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন