গতবছর মেলা থেকে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য রফতানির আদেশ এবার ছাড়িয়ে যাবে ৫০০ কোটির অংক। বিগত দিনের শীত আর যানজটের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন মেলায় ছিলো লক্ষাধিক লোকের সমাগম। তবে রাজধানী থেকে আসা দর্শনার্থীদের পরিবহনের বিআরটিসি ও স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে মেলার প্রবেশ করতে দেখা গেছে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীর। বেচাকেনাও হয়েছে গত দিনের তুলনায় বেশি। মেলার অভ্যন্তরীণ প্যাভিলিয়ন ও সল্টগুলো ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। শীতের কাপড়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। ফলে বেড়েছে বেচাকেনা। এদিকে মেলায় আয়োজকদের প্রত্যাশা এবার ৫০০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাবে মেলা থেকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আরো ১০টি পণ্য রফতানি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এতোদিন শীত আর নানা সংকটে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকলেও রোদের দেখা দেওয়ায় পর থেকে জমে উঠতে শুরু করেছিলো। গতকাল ইজতেমা ও স্থানীয় ঢাকা বাইপাস সড়কের দুর্ঘটনার কারণে সারাদিন ছিলো ক্রেতাশুণ্যতা। গতকাল সকালে তেমন লোক না আসলেও দুপুর থেকে শুরু হয় দর্শনার্থীদের আনাগোনা। এদিকে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মেলার ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যমূল্যে ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
মেলার দর্শনার্থী শুনানদা চক্রবর্তী জানান, এ বছর মেলায় প্রথমবারের মতো আসলাম। স্থায়ী প্যাভিলিয়নে বিশাল পরিসরের চমৎকার আয়োজন ভালো লাগছে। তবে মেলার ভেতরের কিছু পণ্যের দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা নিরুৎসাহিত হবে।
নিকুঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মাহফুজ মিয়া জানান, আমি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেলা ঘুরে দেখেছি। আমাদের মেলার আয়োজন আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। দেশের অতীতের সব মেলার আয়োজনই প্রথম ১০ দিন খুব একটা জমে না, এরপর থেকে জমে ওঠে।
এদিকে মেলায় আগতদের যাতায়াতে ৬৫টি বিআরটিসি বাসের ভাড়া কুড়িল থেকে মেলা প্রাঙ্গণে ৩৫ টাকা বলা হলেও তা রাখা হচ্ছে ৪০ টাকা। এছাড়াও মেলা থেকে ৫০০ মিটার দূরে নামিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন দর্শনার্থীরা। বাহিরে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহীনি ছাড়াও রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত সদস্যরা কাজ করছেন। এখানে ৭৪১ জন পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্বরত রয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সিএনজি চালক বাবুল মিয়া বলেন, মেলার প্রবেশ করতে যানজটের শিকার হতে হয়। তাই ভাড়া একটু বেশি রাখা হয়। আর মেলা তো সব সময় না। গরীব মানুষ হিসেবে চেয়ে নেই এতে কারো অভিযোগ থাকে না। ডেমরা থেকে মেলায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, মেলার সরকারী ছুটির দিন থাকায় লোকজন বেশি। ভীড় ঠেলে কেনাকাটা করতে হয়েছে। তবে সব কিছু একসাথে পেয়েছি, ভালো লাগছে।
মি. বাইট নামের খাবার হোটেলের পরিচালক প্রকৌশলী খোকন বলেন, বাণিজ্য মেলার আসর রূপগঞ্জে হওয়াতে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। এবার গতবারের তুলনায় দর্শনার্থী হচ্ছে বহুগুন বেশি। তিনি আরো বলেন, মেলার শুরু থেকে স্কুলে ভর্তি নিয়ে ব্যস্ততা আর শীত বেশি থাকায় লোকজন প্রথমে আসেনি। এখন সময় পেয়ে সবাই আসা শুরু করেছে। মধুখালী এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী ইমলা মুহান্না বলেন, পূর্বাচলে দ্বিতীয়বারের মতো বাণিজ্য মেলায় শিশুপার্ক রাখায় আমাদের ভালো লেগেছে। তবে মেলার খেলনা পণ্যের দাম রাখা হচ্ছে বেশি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন