দাম নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ বেক্সিমকোসহ কয়েকটি কোম্পানির আমেরিকায় রপ্তানির অনুমোদন : ৩৯টি বাদে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি বন্ধ
হাসান সোহেল : ওষুধ শিল্পে শৃঙ্খলা ফিরছে। ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ, প্রস্তুতকরণ, বিক্রি ও আমদানিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকার জাতীয় ‘ওষুধ নীতি-২০১৬’ অনুমোদন দিয়েছে। এই নীতির মাধ্যমে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি ও বিপণন রোধে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। যখন তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা রোধে প্রতি বছর ওষুধের দাম হালনাগাদ করার বিধান রাখা হয়েছে ওই নীতিমালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবুল কালাম লুৎফুল কবীর সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি কার্যকর হলে দেশের সম্ভাবনাময় ওষুধ শিল্পে গতিময়তা আসবে, মানুষ সুফল পাবে।
ওষুধ পণ্যটি সরাসরি মানুষের জীবন-মরণের সাথে জড়িত। ওষুধে যদি ভেজাল থাকে, মান বজায় রাখা না হয়Ñ তা হলে ওই ওষুধ খেয়ে রোগ তো সারবেই না বরং রোগী মারা যাবে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পর্যাপ্ত জনবলের অভাব, অনিয়ম-দুর্নীতি এবং আন্তরিকতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে ওষুধ নীতির দুর্বলতায় বাজারে অবাধে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল এবং অনুমোদনহীন ওষুধে বাজার ছেয়ে গেছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি হিসেবে দাঁড়িয়েছে। আর তাই ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ওষুধ প্রস্তুত, বিক্রি ও আমদানিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি সরকার জাতীয় ‘ওষুধ নীতি ২০১৬’ অনুমোদন দিয়েছে। এই নীতির মাধ্যমে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি ও বিপণন রোধে জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। যারা ওষুধের মান থেকে শুরু করে কাঁচামাল ও অন্যান্য সরঞ্জামের মান যাচাই করবে। একই সঙ্গে যেকোনো ওষুধ তৈরি, বিক্রি ও আমদানি করতে হলে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পাশাপাশি যখন তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা রোধে প্রতি বছর ওষুধের দাম হালনাগাদ করার বিধান রাখা হয়েছে। কোন ওষুধের দাম কত- তা বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকবে। ফলে চাইলেই কেউ নিজের মতো করে ওষুধের দাম বাড়াতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায়শই কোনো ওষুধের চাহিদা বাড়লেই দাম বাড়ানোর প্রবণতা আছে। এমনকি কৃত্রিম সংকট তৈরি করেও মাঝেমধ্যে দাম বাড়ানো হয়েছে। যা এখন অনেকটা বন্ধ হবে। তাদের মতে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে অনেক সময় অনেক ভালো উদ্যোগ শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। এর সুফল জনগণ পায় না। তাই খুব শিগগরিই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই জনগণ এর সুফল পাবে। তারা জানান, বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা আর বিশ্ববাজারের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ওষুধ রপ্তানিতে এশিয়ার শীর্ষে উঠে আসবে বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবুল কালাম লুৎফুল কবীর বলেন, এটা অবশ্যই অনেক ভালো একটা উদ্যোগ। এটি কার্যকর হলে দেশের সম্ভাবনাময় ওষুধ শিল্পে গতিময়তা আসবে, মানুষ সুফল পাবে। একই সঙ্গে বাড়বে ওষুধের মান। এবং দূর হবে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরির চিন্তা। তবে এই উদ্যোগ যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় না পড়ে সে দিকে গুরুত্বারোপ করেন এই ওষুধ বিশেষজ্ঞ।
ওষুধ নীতির খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব প্রফেসর ডা. ইকবাল আর্সলান ইনকিলাবকে বলেন, অনুমোদন হওয়া ওষুধ নীতিটি তিনি এখনো হাতে পাননি। হাতে পেয়ে মন্তব্য করলে ভালো হতো। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওষুধ খসড়া প্রণয়নে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাধান্য ছিলো। শুরু থেকেই বিএমএ জনসাধারণের স্বার্থ বিরোধী কোন বিষয় নীতিতে না রাখার অনুরোধ জানিয়ে আসছিলো। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মডেল অনুযায়ী কাঁচামালের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ওষুধের দাম নির্ধারণের দাবি ছিলো। তাই ওষুধ নীতির খসড়া হাতে পেয়ে পরবর্তী প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করার কথা বলেন।
সূত্র মতে, ওষুধের বাজারে দেশী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ শুরু হয় আশির দশকের গোড়ার দিকে। এরপর মাত্র ৩০ বছরে বদলে গেছে এ বাজারের চিত্র। গার্মেন্ট শিল্পের মতোই এ শিল্পের অগ্রগতি উল্লেখ করার মতোই। এখন দেশের ওষুধের চাহিদার ৯৭ শতাংশ ওষুধের জোগান দিচ্ছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। পাশাপাশি বিশ্বের ১২২টি দেশে বাংলাদেশ ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে। গত (২০১৫-১৬) অর্থবছরে রফতানি দাঁড়িয়েছে আট কোটি ২১ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা প্রায় সাড়ে ৬৫০ কোটি টাকা। দেশীয় অনেক ওষুধ কোম্পানি ইতোমধ্যে বিদেশি ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিসের (জিএমপি) সনদ পেয়েছে। বেক্সিমকো, স্কয়ার, ইনসেপটাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ডাব্লিউএইচওর (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) সনদ পেয়েছে। গার্মেন্ট শিল্পের পর দেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম ‘ওষুধ শিল্প’-এর জন্য ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ জরুরী হয়ে পড়েছে। তাই আন্তর্জাতিক চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নীতিমালাটি যুগোপযোগী করা জরুরী ছিলো।
এই নীতিমালার আওতায় এখন দেশে প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কেনা যাবে মাত্র ৩৯টি, বাকি প্রায় এক হাজার ২০০ আইটেমের ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশন লাগবে। এ ছাড়া এবারই প্রথম অ্যালোপ্যাথিকের বাইরে আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানির মতো ওষুধকেও নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে। এতে ওষুধ খাতে বিশৃঙ্খলা অনেক কমবে। এ ছাড়া ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের পাশাপাশি এবারই প্রথম ওষুধের ভোক্তাদের স্বার্থকেও অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
ওষুধ নীতির খসড়ায় বলা হয়েছে, কার্যকর, নিরাপদ ও মানসম্পন্ন ওষুধের সহজলভ্যতা এবং ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব ওষুধ নিবন্ধন করতে হবে। নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুত, বিক্রি ও বিতরণ রোধসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিমাণ নির্ধারণ, ওষুধ সংগ্রহ, মজুদ ও বিতরণ; ওষুধের বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিয়ন্ত্রণ, স্বচ্ছ ও যৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ, দেশে নতুন প্রযুক্তি ও কারিগরি জ্ঞান স্থানান্তর, ওষুধ গবেষণা উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়েও বলা হয়েছে।
এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। একই সঙ্গে আইনে শাস্তি নির্ধারণ করা হবে। জনস্বার্থে ওষুধের দাম নির্ধারণ করে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কেউ বেশি দাম নিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও ওষুধ নীতিতে সরকারি নীতিমালার বাইরে গিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান ওষুধের দাম বাড়ালে কী শাস্তি দেয়া হবে-তা নির্ধারণ করা হয়নি।
এ সম্পর্কে ওষুধ নীতি খসড়া অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, অনুমোদন করা নীতিমালার আওতায় সরকার একটি আইন করবে এবং সেখানে শাস্তির কথা উল্লেখ থাকবে। তিনি বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্য তালিকার বেশি দাম নেয়ার সুযোগ থাকবে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত দামের বেশি রাখারে চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্র মতে, নতুন নীতিমালার আওতায় এখন দেশে অত্যাবশ্যকীয় অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের তালিকা বেড়ে ২৮৫টি হয়েছে, যা আগে ছিল ৭০টি। একইভাবে ইউনানির অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ২২৩ ও আয়ুর্বেদিকের ৩৭০টি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া ওভার দ্য কাউন্টার বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনার উপযোগী ওষুধ থাকছে ৩৯টি। এদিকে ওষুধ নীতিতে প্রয়োজন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিতের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
সূত্র মতে, দেশের অনেক কোম্পানীই এখন আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ তৈরি করছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সার্টিফিকেশন সনদও পেয়েছে বেশ কিছু কোম্পানি। এ কারণে ওই সব দেশসহ অন্যান্য দেশে ওষুধ রফতানি পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ওষুধের মেধাস্বত্বে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ছাড়ের সুযোগ রয়েছে। এটাকে কাজে লাগাতে ওষুধ নীতি সহায়ক হবে। সরকারের পক্ষ থেকেও ওষুধশিল্প বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ২০২১ সাল নাগাদ ওষুধ রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের আয় প্রায় একশ গুণ বেড়ে ৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাজার ও পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওষুধ রপ্তানি বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যেই বেক্সিমকোসহ দেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি আমেরিকায় ওষুধ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। এই সুযোগকে ‘দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য খুব ইতিবাচক’ উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের রপ্তানির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থ বছরে দেশীয় ৪৬টি ওষুধ কোম্পানী ওষুধ রফতানি করে এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। রফতানিতে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড, নোভারটিস (বিডি) লিমিটেড, টেকনো ড্রাগস লিমিটেড, ইনসেপটা ফার্মা লিমিটেড, স্কয়ার ফার্ম লিমিটেড, দ্যা একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, এরিষ্টো ফার্মা লিমিটেড, রেনেটা লিমিটেড, এসকেএফ ফার্মা বাংলাদেশ লিমিটেড, এসিআই লিমিটেড, পপুলার ফার্মা, পপুলার ইনফিউসন, বায়ো ফার্মা, অপসোনিন, গ্লোব ফার্মা, বীকন ফার্মা, ড্রাগস ইন্টারন্যাশনাল, হেলথকেয়ার ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, জেসন, নাভানা, জেনারেল, ডেলটা, গ্লাস্কো, ইবনেসিরা, রেডিয়ান্ট, নভো হেলথকেয়ার ফার্মাসহ আরও কয়েকটি কোম্পানী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওষুধ রপ্তানি বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। ইতিমধ্যেই দেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি আমেরিকার বাজারে ওষুধ রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। ফলে উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ রপ্তানির দরজা খুলছে।
ওষুধ শিল্প সমিতির তথ্য মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, ইতালি, কানাডা, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, মালয়শিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিসর, মরক্কো, আলজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য, ওষুধ শিল্প ও দেশের স্বার্থ বিবেচনায় যুগোপযোগী একটি ওষুধ নীতি তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে সর্বশেষ জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। ওই ওষুধ নীতিতে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা ছিলো। পরে নতুন গ্রহণযোগ্য ওষুধনীতি প্রণয়নের বিষয়টি ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনের ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল। ২০১১ সালে একটি গ্রহণযোগ্য ওষুধনীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালককে প্রধান করে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, ফার্মাসিউটিক্যালস্ কোম্পানির প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও ফার্মেসিস্টরা ছিলেন।
কমিটির সদস্যরা পূর্বের ওষুধনীতির অনেক বিষয় যুগোপযোগী করে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে খসড়া ওষুধনীতি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। পরে খসড়াটির আইনগত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিন সেটি ফাইলবন্দি হয়ে পড়েছিল। তবে সর্বশেষ মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে ‘ওষুধ নীতি ২০১৬’ অনুদোন দেয়া হয়। এর মাধ্যমে ওষুধ শিল্পের শৃঙ্খলা ফেরাতে দীর্ঘ এক যুগের অপেক্ষার অবসান হলো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন