গতবছর নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ দিন পর শুরু হলেও মহামারি করোনার রূঢ়তা ছাপিয়ে এবার নির্দিষ্ট সময়েই শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। আজ বুধবার বিকেল ৩টায় মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান করা হবে। মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে তৎপর রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তা নিয়ে গতকাল মেলাপ্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি জানান, আসন্ন আমর একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই। তবে তাতে আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বইমেলাকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ শীর্ষক প্রতিপাদ্য ধারণ করে শুরু হচ্ছে এবারের বইমেলা। মেলায় সরকারি বেসরকারি ছোট বড় মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট অর্থাৎ মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৮টি প্যাভিলিয়ন থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ স্টলের কাজ শেষ হলেও অনেকগুলো স্টল তৈরির কাজ বাকি। বাঁশ, কাঠ, আর পেরেকে হাতুড়ি পেটা ও করাতের শব্দ তখনো কানে বাজছে। স্টলগুলোতে লাইটিংয়ের কাজ বাকি, স্টলগুলোর সামনে ইট বসানো বাকি, কোথাও কোথাও সব কাজ শেষে রঙ করা হচ্ছে। আবার কোথাও বুক সেলফে জায়গা করে নিয়েছে নতুন নতুন বই।
মেলার কিছু অব্যাবস্থাপনা নিয়ে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক মো. শাহাদাত হোসাইন বলেন, আমাদেরকে স্টল তৈরির জন্য যে সময় দেয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। দিনরাত কাজ করে আমরা এগুলো প্রস্তুত করতে হয়। তবে আমাদের স্টলের এখন শুধু ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি।তিনি বলেন, লিটলম্যাগের কাজ এখনো শেষ হয়নি। স্টলগুলোতে লাইটিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। অনেকগুলো স্থলের অবকাঠামো এখনও নির্মাণ করা হচ্ছে। স্টল গুলোর মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় প্রচুর ময়লা আবর্জনা যা এখনো পরিষ্কার করা হয়নি। চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনীর দায়িত্বে থাকা জাহিদ বলেন, আমাদের কাজ শেষ। রাতের মধ্যেই সেলফে বই উঠে যাবে। এখন শুধু আলপনার কাজ বাকি।
বাংলা একাডেমিতে অবস্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাতৃভ‚মি প্রকাশনীতে গিয়ে দেখা যায় রঙ করার কাজ চলছে। প্রকাশনীর সার্বিক দায়িত্বে থাকা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল আলম শপু বলেন, আমাদের স্টল তৈরির কাজ সম্পন্ন।আগামীকাল প্রথম দিন থেকেই পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বই।
মেলায় প্রতিবছর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সুযোগ করে দেয়া স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনীর প্রধান উদ্যোক্তা নাজিয়া জাবীন বলেন, আমরা এ বছর আমাদের প্রকাশনীর ১৫ তম বর্ষে পদার্পণ করেছি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ যাবতকাল সময়ের মধ্যে গত বছরই আমরা ১০০টি বই প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি এবং এ বছর আরো ৩০ টার মতো বই আসবে। মেলার শুরু থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের আমরা পড়ার সুযোগ দিয়ে থাকি। তারা এখানে এসে রেজিস্ট্রেশন করে নিজেদের পছন্দের ব্রেইল বই পড়তে পারে। এছাড়াও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এবার সিসিমপুরের কিছু বই ব্রেইল অনুবাদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন