শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বইমেলায় গ্রামীণ ছোঁয়া

রাহাদ উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলা ২০২৩। ফেব্রæয়ারি মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলবে এই মেলা। মেলায় সর্বমোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দিয়েছে বাংলা একাডেমি। স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোকে অনিন্দ্য সুন্দর আকৃতিতে সাজিয়েছে প্রকাশকরা। এতে পাঠকদের নিকট বেশ উপভোগ্য হচ্ছে এবারের মেলা। বেশ কয়েকটি স্টলের আকৃতিতে ছোঁয়া লেগেছে গ্রামীণ পরিবেশ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানী ও রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় এসেছেন পাঠক ও দর্শনার্থীরা। কেউ বা বই কিনছেন আবার কেউ বা উল্টে দেখছেন বইয়ের মলাট। দ্বিতীয় দিন থেকেই মেলা জমে উঠেছে বলে জানান প্রকাশকরা। গতকাল সোমবার অনিন্দ্য প্রকাশের বিক্রয়কর্মী ফাহিম হাসান বলেন, অনেক পাঠক আসছেন, বইয়ের বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। শুধু শনিবার ছুটির দিনে ৬০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। উপন্যাস, সাইন্স ফিকশন ও কাব্যগ্রন্থগুলোই পাঠকদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে। প্রকাশক আফজাল হোসেন বলেন, এবার প্রথম থেকেই মেলা বেশ জমজমাট।

সম্পূর্ণ বাঁশের বেত দিয়ে তৈরি ও খড়ের ছাউনি দিয়ে স্টল নির্মাণ করেছে আকাশ প্রকাশনী। দর্শনার্থীদের জন্য যা একঝলক গ্রামীণ অনুভূতির দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। গতকাল মেলায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক পাঠক ও দর্শনার্থীরা এসে ভীড় জমাচ্ছে ওই স্টলে। চারপাশটা বন্ধ প্রায় ৮০ বছর পুরোনো কাঠের তৈরি একটা দরজা দিয়ে মানুষ ভেতরে প্রবেশ করে নিচ্ছে একটুখানি গ্রামীণ অনুভূতির ছোঁয়া। প্রকাশক জানান, অনিন্দ্য সুন্দর স্টলটি তৈরিতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কারণ রাজধানীতে সচরাচর এই ধরনের বাঁশ পাওয়া যায় না। এগুলো সুদূর গ্রাম থেকে নিয়ে আসতে হয়।

বাঁশের চটি ও পাটির তৈরি বায়ান্ন প্রকাশনীর স্টলে বই কিনছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিবুর। তিনি বলেন, অন্যান্য স্টলের চেয়ে ভিন্ন আকৃতির হওয়ায় দূর থেকেই চোখে পড়লো স্টলটি। মূলত বই না কিনলেও এমন সুন্দর স্টলগুলোতে গিয়ে বই দেখতেও ভালো লাগে। বাঁশের চটি দিয়ে তৈরি ভোরের শিশির প্রকাশনীর উপরিভাগে শোভা পেয়েছে দূর্বাঘাসের উপর ঝিরিঝিরি শিশিরের ছোঁয়া। যা সহজেই আকৃষ্ট করে শহুরে জীবনের যান্ত্রিক মানুষগুলোকে।

গতকাল সোমবার অমর একুশে বইমেলার ষষ্ঠ দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ১২১টি। বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূল অংশে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : কাজী রোজী এবং স্মরণ : দিলারা হাশেম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাসির আহমেদ এবং তপন রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আসলাম সানী, শাহেদ কায়েস, আনিসুর রহমান এবং শাহনাজ মুন্নী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অসীম সাহা। আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মোজাম্মেল হক নিয়োগী, রহীম শাহ, সত্যজিৎ রায় মজুমদার এবং তুষার কবির।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব সাদিক, ফারুক মাহমুদ এবং আতাহার খান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, মাহিদুল ইসলাম এবং অনন্যা লাবনী। এছাড়া ছিল সাইমন জাকারিয়ার পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ভাবনগর ফাউÐেশন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজগর আলীম, আবুবকর সিদ্দিক, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, রহিমা খাতুন, শান্তা সরকার। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন আব্দুল আজিজ (তবলা), ডালিম কুমার বড়–য়া (কী-বোর্ড), অরূপ কুমাল শীল (দোতারা) এবং মো. শহিদুল ইসলাম (বাঁশি)।

আজকের সময়সূচি : আজ মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল অংশে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ : মাহবুব তালুকদার এবং স্মরণ আলী ইমাম শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন গাজী রহমান ও আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন লুৎফর রহমান রিটন, ড. নিমাই মন্ডল, আমীরুল ইসলাম এবং ওমর কায়সার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফরিদুর রেজা সাগর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন