আওয়ামী লীগ কখনোই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির এক বিবৃতিতে বিএনপির মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষণাপত্র বাতিল করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, সরকারের নির্দেশে গত ২৬ ডিসেম্বর দিনকালের ডিক্লারেশন ও পত্রিকা মুদ্রণের ঘোষণাপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। এরপর দৈনিক দিনকালের পক্ষ থেকে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণ বাতিলের আদেশের স্থগিতাদেশ চেয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে আবেদন করার পর গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত ছিল। বর্তমানে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকারের নির্দেশে ডিসি পত্রিকাটির ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলও পত্রিকাটির আপিল খারিজ করে দিয়েছে। দেশের মানুষ মনে করে এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত ও অগণতান্ত্রিক।
নেতৃদ্বয় বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত করে। ১৯৭৫ সালেও আওয়ামী লীগ সরকার ৪টি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ছাড়া বাকি সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমান বিনাভোটের আওয়ামী সরকার তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করছে নতুন আঙ্গিকে। সে কারণে তারা সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালাচ্ছে এবং হুমকির সর্বগ্রাসী কর্তৃত্ব কায়েম করেছে। বর্তমান দুঃসময়ে সব গণমাধ্যমের কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সমালোচনা করলে রোষাণলের শিকার হয়ে বন্ধ করা হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন।
তারা বলেন, বর্তমান নিশিরাতের সরকারের অধীনে গণমাধ্যমের যে কোনো স্বাধীনতা নেই তা আবারও প্রমাণিত হলো। দৈনিক দিনকাল পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলের মুখপত্র হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বিরোধী দলের একমাত্র পত্রিকাটির প্রকাশনা বাতিল সরকারের চরম হিংসা চরিতার্থ করার বহিঃপ্রকাশ। সরকারের অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী কর্মকান্ড, চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী অসম চুক্তি, হত্যা, গুম, খুন, প্রহসনের সত্য সংবাদ নি:সঙ্কোচে প্রকাশ করায় দৈনিক দিনকাল সরকারের চরম রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার।
ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগেই ১৯১টি অনলাইন বন্ধ করেছে সরকার। ভোটারবিহীন সরকারের তথ্যমন্ত্রী সংসদে কিছুদিন আগে বক্তব্য দিয়েছেন- গতমাসে ১০০টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে এবং আরও শতাধিক বাতিল করা হতে পারে। এরইমধ্যে বিরোধী দলের মুখপাত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধ করা তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিফলন। লাখো মানুষের কণ্ঠস্বর দৈনিক দিনকাল বন্ধের ফলে পত্রিকাটিতে কর্মরত হাজারো সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে। এমতবস্থায় দৈনিক দিনকাল পত্রিকা বন্ধের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে পত্রিকাটির ডিক্লারেশন ও মুদ্রণের ঘোষণাপত্র বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ও মহাসচিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন