বিশেষ সংবাদদাতা : বিদায়ী বছরে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে চার হাজার ১৪৪ জন। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ২২৫ জন। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন সড়কে গড়ে প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিসচার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অশিক্ষিত চালক, ক্রটিপূর্ণ যানবাহন, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, জনগণের অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তার অপর্যাপ্ততা, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, আইন ও তা যথারীতি প্রয়োগ না করার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিসচা। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চিত্রনায়ক ও নিরাপদ সড়ক চাইয়ের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় পাঁচ হাজার তিনজন। সে তুলনায় ২০১৬ সালে নিহতের হার কমেছে ১৪.৬৩ শতাংশ। ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ট্রাকের মাধ্যমে। অনিয়ন্ত্রিত গতি, চালকের অসাবধানতা, মোবাইলফোনে কথা বলার কারণে দুর্ঘটনায় পতিত হয় ট্রাক। বিদায়ী বছরে মোট দুর্ঘটনার সংখ্যা দুই হাজার ৩১৬টি, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৩১০টি কম। ২০১৬ সালে বাস দুর্ঘটনার সংখ্যা ৭১০টি, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরির দুর্ঘটনা ৬৬২টি, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের দুর্ঘটনা ১৯২টি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, লেগুনা, নসিমন, টেম্পু, ভটভটি, আলমসাধু ও মহেন্দ্রসহ অবৈধ যানবাহনের দুর্ঘটনা ৩৮৭টি। মোটরসাইকেলে ২৪৯টি। এছাড়া রেললাইন পার হওয়ার সময় রেলক্রসিং এ বিভিন্ন যানবাহনসহ রেল দুর্ঘটনা ও কাটা পড়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৮৪টি।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যেখানে-সেখানে গাড়ি থামানো, ওভারটেকিং, পাল্টাপাল্টি ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন, গাড়ির ছাদে যাত্রী নেয়া, ওভারব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস ব্যবহার না করা দুর্ঘটনার কারণ। এসব বন্ধ করা গেলে দুর্ঘটনা আরো কমে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। দুর্ঘটনারোধে করণীয় সম্পর্কে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ধারাবাহিকভাবে প্রচার, স্কুলের পাঠ্য বইয়ে দুর্ঘটনারোধের বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিসচার মহাসচিব শামীম আলম, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসান উল হক, দুর্ঘটনা অনুসন্ধান ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক এবং জাগো নিউজের সিনিয়র সহ-সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, সহ-গবেষণা সম্পাদক মো: আলাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ এম আজাদ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন