শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

২০ জানুয়ারি দূরে নয়

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ রেজাউর রহমান : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৮ নভেম্বর ২০১৬। ভোটে জনগণের ভোট বেশি পেয়েও ইলেক্ট্ররাল কলেজ ভোট প্রয়োজনীয়সংখ্যক না পেয়ে পরাজিত হন সম্ভাব্য বিজয়ী হিলারি ক্লিন্টন। কয়েকদিনের মধ্যেই অভিযোগ ওঠে রাশিয়া সাইবার হামলার মাধ্যমে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে রিপাবলিকান দলীয় সম্ভাব্য পরাজিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিততে সাহায্য করেছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইন ভেস্টিগেশন) ও সিআইএ (সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি) প্রতিবেদন দাখিল করে বলে যে, রাশিয়া সাইবার হামলা করে ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন ও তার নির্বাচনী দপ্তরের ডাটাবেইসে ঢুকে পড়ে ও তথ্য বিকৃতি দ্বারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করে। দেশের দুটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদায়ী ডেমোক্রেটদলীয় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২৯ ডিসেম্বর রাশিয়ার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক বহিষ্কার ও যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার দু’টি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় বন্ধের আদেশ প্রদান করেন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ৩৫ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার এবং ম্যারিল্যান্ড ও নিউইয়র্কে রুশদের পরিচালিত দুটি কার্যালয় বন্ধ করা। রুশ কূটনীতিকদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্দেশ অনুযায়ী ৩৫ জন রুশ কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যগণ ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলে যান ও মস্কো পৌঁছান। সাধারণ ও প্রচলিত নিয়মানুযায়ী যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়- সে রাষ্ট্রও পাল্টা ব্যবস্থায় সমানসংখ্যক বিপক্ষ রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের নিজ দেশ থেকে বহিষ্কার করে এবং গোয়েন্দাবৃত্তির পাল্টা অভিযোগ এনে বিপক্ষ রাষ্ট্রের ২/১টি কনস্যুলেট বা অন্য ধরনের প্রতিষ্ঠানের অফিস বন্ধ করে দেয়। প্রেসিডেন্ট ওবামার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সমানুপাতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাশিয়ায় কর্মরত ৩৫ জন মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। কিন্তু রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভের এ সংক্রান্ত ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট পুতিন নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন যে, তিনি এখনই কোনো পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন না। প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণায় আরো একবার প্রমাণিত হয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া একেবারে নিরপেক্ষ ছিল না। তাদের পছন্দের প্রার্থী ছিল রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত বা পরিবর্তিত করার ব্যাপারে রাশিয়ার দ্বারা ব্যাপকভাবে হ্যাকিং করা সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং সিআইয়ের কাছ থেকে। প্রেসিডেন্ট ওবামা এ সম্বন্ধে যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা কোন কার্যকরণ ছাড়া হয়নি।
স্পষ্ট করে না বললেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামার সিদ্ধান্ত বাতিল হওয়ার ধারণা করার পেছনেও কারণ রয়েছে। কারণটি হচ্ছে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যেই কয়েকবার তার টুইট বার্তায় বলেছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া কর্তৃক হ্যাকিংয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। রাশিয়ার পক্ষে ট্রাম্পের এই বক্তব্যে রাশিয়ার অবশ্যই খুশি হওয়ার মতো বিষয় রয়েছে, তাছাড়া পুতিনভক্ত ট্রাম্পের নির্বাচনকালীন প্রচারণার সময়ে অনেকবার পুতিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন ট্রাম্প। অথচ বিদ্যমান রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ব্যবস্থায় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে কোনো মিল নেই। কর্তৃত্ববাদী যে ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ফেডারেশনের একচ্ছত্র শাসক সে ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনসিয়াল শাসন ব্যবস্থায় আট বছরের বেশি কোনো ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টকে তার পদে থেকে শাসন করা সম্ভব নয়। রাশিয়ায় একদলীয় শাসন এখনও চলছে। পুতিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শাসন করে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় পাঁচ বছর তার অনুগত দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্টের গদিতে বসিয়ে তার অধীনে নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকলেও কার্যত প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ ছিলেন শিখ-ীÑ মূল ক্ষমতার চাবিকাঠি ছিল পুতিনের হাতেই। পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পরে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হয়ে রাশিয়া শাসন করছেন ভøাদিমির পুতিন। ট্রাম্প পুতিনের প্রশংসায় যখন পঞ্চমুখÑ তখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পুতিনের ভক্ত হয়ে ট্রাম্পও কি গণতন্ত্রকে কার্যত বিদায় করবেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে? বিশেষ করে কংগ্রেস ও সিনেটেও রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তাদের মধ্যে তার অন্ধ স্তাবক ও অনুসারী তৈরি করে? যেভাবে ট্রাম্প নিয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন। রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচনের আগেই তাকে তার বল্গাহীন ও উন্মাদসুলভ বক্তব্য ও মতামতের জন্য ট্রাম্পকে নিজেদের ভোট না দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন অনভিজ্ঞ কর্তৃত্ববাদী ও বিকৃত রুচির ধনকুবের বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরও যে অস্বাভাবিক আচরণ করবেন নাÑ এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই।
সর্বশেষ খবরে জানা যায় যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে তিনি হ্যাকিং সম্পর্কিত নেপথ্যের আড়ালে যেসব খবর রয়েছে সেগুলোর সবই জানেন। একই সাথে মার্কিন নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তথ্য চুরি ও বিভ্রান্তিমূলক খবরের প্রচারে রাশিয়া কলকাঠি নেড়েছে- এমন অভিযোগের ব্যাপারে পুনরায় নিজের সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন যে, রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য যারা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেননি- সে সম্পর্কে তার কাছে তথ্য রয়েছে এবং ২/১ দিনের মধ্যেই তিনি তা প্রকাশ করবেন। কাজেই এফবিআই ও সিআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক গৃহীত ৩৫ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার ও রাশিয়ার দুটি দফতরের কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া সম্পর্কিত ব্যবস্থা প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প বাতিল করে দিয়ে তার শুভাকাক্সক্ষী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মনতুষ্টির কারণ ঘটাতে পারেন। হয়তো এই কূটনৈতিক বিজয়ের আশায়ই প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়া কর্তৃক মার্কিন কূটনীতিক বহিষ্কারের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নিজের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কার না করে আপাতঃ বদন্যতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বহু উদ্যোগ ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই বাতিল করবেন ট্রাম্প- এই মর্মে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ট্রাম্প কর্তৃক নিযুক্ত নতুন প্রেস সেক্রেটারি। ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি শান স্পাইসার মার্কিন এবিসি টেলিভিশনে বলেছেন যে, বিগত আট বছরে মার্কিন প্রশাসনের নেয়া যেসব কর্মকা- দেশটির ক্ষতি করেছেÑ এ রকম আইন ও পদক্ষেপ ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করবেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে অভিবাসন, জ্বালানি ও বৈদেশিক নীতি বিষয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামার কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
ইতোমধ্যেই ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত তার অভিবাসন নীতির প্রত্যক্ষ বিরোধিতা দৃশ্যমান হয়ে ধরা পড়েছে। নিউইয়র্কসহ ৩১টি বড় শহরের মেয়ররা এই যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার শহরগুলোতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের তালিকা চাইলেও তারা তা দেবেন না। কাজেই ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের কর্মসূচির বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
৩৫ জন রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের পাল্টা ব্যবস্থায় রাশিয়ায় কর্মরত ৩৫ জন মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কারাদেশ না দিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন যে কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করতে চাইছেন তা হলো নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট দ্বারা তিন সপ্তাহের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ বাতিল করানো এবং রাশিয়ার কোনো অনুরোধ ছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা করলে তা হবে প্রেসিডেন্ট পুুতিনের ভাবমর্যাদা আরো উজ্জ্বল করা এবং রাশিয়ার কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বতন ৪৪ জন প্রেসিডেন্টের কেউই পূর্বসূরির নির্বাহী আদেশ তিন সপ্তাহের মধ্যে বাতিল করে দিয়ে রাশিয়াকে এতটা সাফল্য অর্জন করতে দিতেন না বলেই বলা যায়। প্রেসিডেন্ট পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনীতিককেই বহিষ্কার করবেন না বলে তার যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন- তার  প্রতিক্রিয়ায় পুতিনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প।  তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে অসাধারণ কাজ করেছেন পুতিন। আমি বরাবরই তাকে অত্যন্ত স্মার্ট হিসেবে জানি।’ ট্রাম্প কর্তৃক লিখিত টুইট বার্তাটি দেখে তার প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাকর্মী থেকে শুরু করে নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অনেকেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা ট্রাম্পের এ রকম রুশ ঘেঁষা আচরণ ও সম্ভাব্য নীতির পক্ষপাতি নন। রিপাবলিকান নেতা ও সিনেটের আমর্ড সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান জন ম্যাককেইন ৩০ ডিসেম্বর বলেছেন যে, ‘সাইবার হামলার ঘটনায় রাশিয়াকে খেসারৎ দিতেই হবে। কোনো দেশের বিরুদ্ধে এ জাতীয় হামলা যুদ্ধ ঘোষণারই সামিল।’ নির্বাচিত হয়ে ট্রাম্প সিনেটর জন ম্যাককেইনকে তার মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য তার সাথে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত লুব্রিক্যান্ট কোম্পানীর মালিক রেক্সা টিলারসনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। টিলারসন ২০১৩ সালে রাশিয়ার সম্মানজনক অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ খেতাব লাভ করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের বন্ধু হিসেবে না রেখে রাশিয়ার বন্ধু হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করবেন এ সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক প্রবর্তিত স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিও বাতিল করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী শিল্পকারখানা ও মোটরগাড়ি থেকে নিঃসরিত কার্বন গ্যাস- এতেও বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প। তাই বিশ্বে জলবায়ু তহবিলে ওবামা সরকার প্রতিশ্রুত অর্থ প্রদান বন্ধ রাখতে পারেন ট্রাম্প। এছাড়াও সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায়ও আসতে পারে আমূল পরিবর্তন। ইসরাইলের অকৃত্রিম বন্ধু ও কট্টর মুসলিমবিরোধী ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে চেয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। ওবামা শাসনের তিন সপ্তাহ বাকি থাকতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয় অধিকৃত ফিলিস্তিনে নতুন করে ইহুদী বসতি গড়ে তোলা বন্ধ করার দাবিতে প্রস্তাব। ১৯৬৭ সালে পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনী ভূখ- দখল করার পর থেকেই ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনী এলাকায় ইহুদী বসতি নির্মাণ করে আসছে। এর নিন্দা ও ইহুদী বসতি নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে প্রায় প্রতি বছর নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত সকল প্রস্তাব গৃহীত হলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট ও প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা বাতিল করে দিয়েছে। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ইহুদী বসতি স্থাপনের কর্মসূচি বন্ধ করার দাবি সম্বলিত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে প্রস্তাবটি পাস হতে দিয়েছে এবং প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করেনি। ফলে ইসরাইলে সৃষ্টি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়ার। ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে প্রদত্ত এক বার্তায় ইসরাইল সরকার ও জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছেনÑ ‘আর মাত্র কয়েকদিন শক্ত থাকুন। ২০ জানুয়ারি খুব দূরে নয়।’
২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার দিন থেকে বিশ্ববাসীকে হয়তো অনেক কিছুই দেখে যেতে হবে।
য় লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন