শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

সরকারি ওএমএস বন্ধ, বাজার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে নরসিংদীসহ দেশের বাজারে চালের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪ টাকা

| প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীসহ দেশের বাজারে চালের দাম অব্যাহত গতিতে বেড়েই চলছে। গত একপক্ষকালে চালের দাম কেজিপ্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ টাকা। চলতি প্রথম সপ্তাহে পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চালের মূল্য ১০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে সপ্তাহকাল স্থিতাবস্থায় থাকে। এরপর গত ৩ দিনে আবার বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে গেছে। যার ফলে বর্তমানে খুচরা চাটাইগুলোতে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দরে। এর আগে আমন ধান কাটা শুরুর কিছু দিন পূর্বে চালের মূল্য কেজিপ্রতি বেড়েছিল ১ টাকা করে। এসব বাড়তি দর আর কমেনি। বর্তমান বাজারে সব ভ্যারাইটির চালই কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা দোকান সূত্রে জানা গেছে, ব্রি-২৮ চাল পক্ষকাল পূর্বে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা। এখন বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা দরে। একইভাবে ব্রি-২৯ ধানের চাল পূর্বে ছিল ৪০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। নাজিরশাইল ধানের চাল পূর্বে বিক্রি হয়েছে ৪৬ টাকা কেজি, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫১ টাকা কেজি দরে। মিনিকেট চাল আগে ছিল ৪৬ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা এক পক্ষকাল পূর্বে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। বাংলামতি চাল পূর্বে বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকা কেজি দরে, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকা কেজি দরে। একইভাবে কাজললতা বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা দরে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৯ টাকা কেজি দরে। উৎপাদনের ভরা মৌসুমে চালের মূল্য বৃদ্ধির সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছে না। খুচরা দোকানদাররা বলছে তারা চালের মূল্য বাড়ায়নি। আড়ত থেকে যে দরে তাদের চাল সরবরাহ দেয়া হয় সে দর থেকে পঞ্চাশ পয়সা-এক টাকা বেশি দরে বিক্রি করে। এ ব্যাপারে নরসিংদী কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, সদ্যাতীত আমন মৌসুমে নরসিংদীসহ সারাদেশে আমন ধানের ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। দেশে চালের কোনো ঘাটতি নেই। এ মুহূর্তে চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
নরসিংদী খাদ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, গোডাউনে প্রচুর সরকারি চাল মজুদ রয়েছে। কিন্তু চাল বাজারে যাবার সব পথ বন্ধ। বিগত ২ মাস যাবত ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) পদ্ধতিতে চাল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে টেস্ট রিলিফও নেই। সরকারের নিকট থেকে জনগণের কাছে চাল যাবার সব পথই আপাতত বন্ধ। আর এই সুযোগ গ্রহণ করেছেন চালকল মালিকরা। তারা আমন ধান কিনে মজুদ করে রেখেছেন। এখন তারা সরকার ও জনগণের কাছে মনগড়া দরে একচেটিয়াভাবে চাল বিক্রি করছেন। যে কারণে বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও সাধারণ মুনাফাখোররাও সবসময়ই ওঁৎ পেতে বসে থাকে। সুযোগ পেলেই তারা চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারাও সুযোগ নিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে থাকতে পারে।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিটি ঘরেই চালের ব্যাপক মজুদ রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নরসিংদীতে চাল আমদানি হচ্ছে।
কিন্তু এরপরও চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ জানা যাচ্ছে না। তবে মিল মালিকরা জানিয়েছেন, সরকারি গুদামে বর্তমানে চালের মজুদ কম। সরকার আমন চাল কিনে গুদামে মজুদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার চাল কেনার কারণে চালের বাজারে টান পড়েছে। সরকারি চাল কেনা শেষ না হলে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন