শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

উগ্রপন্থীদের উত্থান ও বিশ্বে নতুন মেরুকরণ প্রসঙ্গে

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরদার সিরাজ : ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন টক অব দি ওয়ার্ল্ড। কারণ, ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে  দায়িত্ব গ্রহণ করার পর চরম রক্ষণশীল জমানা শুরু হয়েছে। তাই বিপুল সংখ্যক মানুষ শপথের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন এবং দোকানপাট ভাংচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে ৬ পুলিশ আহত ও ২০০ জন গ্রেফতার হন। পরের দিনও একই ঘটনা ঘটে। ওয়াশিংটন ডিসির সামনে প্রায় ৫ লাখ নারী প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। যা মার্কিন ইতিহাসে সর্ববৃহৎ নারী জমায়েত। এছাড়া, সারা আমেরিকায় ছোট-বড় ৬০০ পদযাত্রা হয়। তাতে লাখ লাখ নারী-পুরুষ সমবেত হন। এমনকি, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া, অষ্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশেও বিপুল সংখ্যক মানুষ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। উপরন্তু সমগ্র বিশ্ববাসী আতংকিত হয়ে পড়েছেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের ভাল-মন্দের সাথে বিশ্বের ভাল-মন্দ সংশ্লিষ্ট। অবশ্য এই আতঙ্ক নতুন নয়। ট্রাম্প প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়। কারণ, তিনি চরম বর্ণ ও ইসলাম বিদ্বেষী, বদমেজাজী, ও উগ্র জাতীয়তাবাদী। এছাড়া, তিনি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, শোবিজ পারফরমার, রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ এবং কুকর্মে পটিয়সী। নির্বাচনী প্রচারণাকালেও  অনেক বিতর্কিত বক্তব্য দেন তিনি। নারীদের সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেন। তাই তিনি ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হন। বেশিরভাগ মিডিয়াও তার বিরুদ্ধাচারণ করে। কিন্তু কোন কিছুতেই তিনি তোয়াক্কা না করে স্বীয় পথে অবিচল থেকে সামনে অগ্রসর হন। শেষাবদি তার বিজয় পর্যন্ত বিতর্কিত হয়। হিলারী পপুলার ভোট ২ লাখ বেশি পেয়েও ইলেকট্ররাল ভোটে পরাজিত হন। এটা পুতিন যাদুতেই হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। যা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তেও প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাম্প নিজেও হিলারীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের বিষয় স্বীকার করেছেন। তাই ওবামা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে যুক্তরাষ্ট্র হতে ৩৫ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার  ও রাশিয়ার উপর অবরোধ আরোপ করেন। তবুও রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কারণ, তারা চেয়েছিল অভিজ্ঞ হিলারীর চেয়ে অনভিজ্ঞ ট্রাম্পের বিজয়। সে লক্ষ্যেই হিলারীর প্রচারণায় হ্যাকিং করেছিল এবং কামিয়াব হয়েছে। তাই ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পুতিন। উপরন্তু কেজিবি রাশিয়ায় সংঘটিত ট্রাম্পের কুকর্মের ভিডিও হস্তান্তর করেছে সিআইএর কাছে। এ বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে। রাশিয়া এই ছবি নিয়ে ট্রাম্পকে ব্লাকমেইল করবে বলে অনেকের অভিমত। এই অবস্থায় তার বিজয় টিকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তাই এ নিয়ে সিনেট ও কংগ্রেসে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তিনি ব্যবসার মতো রাজনীতিতেও খুবই ভাগ্যবান। ফলে সেখানেও উৎরিয়ে যান। তাই তার এই বিজয়কে ‘পলিটিকাল ম্যাজিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই। স্মরণীয় যে, নির্বাচন প্রচারকালে তার উগ্র বক্তব্যকে নির্বাচনী স্ট্যান্ট বলে মন্তব্য করে অনেকেই বলেছিলেন, বিজয়ী হলে প্রশাসনের ফ্রেমে পড়ে সোজা পথেই চলবেন।
কিন্তু না তা হচ্ছে না। নির্বাচনী ভবিষ্যৎবাণীর মতো এ বাণীও ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। কারণ, নির্বাচনী প্রচারণাকালে যা বলেছেন, তা বাস্তবায়ন করা শুরু করেছেন। যেমন- শপথ নিয়েই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, ‘আমার দু’টি কথা-আমেরিকার জিনিস কেনো এবং আমেরিকানদের চাকরি দাও’। প্রচার ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়েছেÑ মেক আমেরিকা  গ্রেট এগেইন। উপরন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ওবামাকেয়ার বাতিল, ওবামার শেষ সময়ের সিদ্ধান্তসমূহ ও জলবায়ু নীতি স্থগিত এবং ওবামা আমলের বিদেশে কমর্রত ৮০ জন মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বরখাস্ত করেছেন। এ ছাড়া, যে ১৫ জনকে মন্ত্রী করেছেন, তারা সকলেই কট্টরপন্থী। এমনকি, তাদের মধ্যে ১২ জনই শ্বেতাঙ্গ, ১ জন কৃঞ্চাঙ্গ, ২ জন নারী (যার ১ জন চীনা বংশোদ্ভূত ও ১ জন শ্বেতাঙ্গ)। ওবামার জলবায়ু নীতি, মুক্ত বাণিজ্য ও ইরানের পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা, আমদানিকৃত পণ্যের উপর অতিরিক্ত ১০% কর আরোপ, দক্ষিণ চীন সাগর ও ভারত মহাসাগরে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা, তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়া ইত্যাদির কথা বলেছেন। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের ভবিষ্যৎ কি তা নিয়ে সর্বত্রই শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে আরো কিছু দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদী নেতার উত্থান ঘটেছে। যেমন: রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, তুরস্ক, ইসরাইল, বৃটেন, জার্মান, ফ্রান্স, ভারত, চীন, ইরান, সউদি আরব ইত্যাদি। বৃটেন তো ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেছে। এখন হাঙ্গেরী, ইতালীসহ কয়েকটি দেশও আউট হওয়ার পথে। অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভেঙে যেতে চলেছে। ইতোমধ্যেই ইউরোপের কয়েকজন কট্টরপন্থি নেতা মন্তব্য করেছেন, ২০১৭ সালে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের এমন উত্থান হবে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যুক্তরাজ্যেরও একই অবস্থা। বছরখানেক আগে স্বাধীন হওয়ার জন্য আয়ারল্যান্ডে গণভোট হয়। কিন্তু সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে যায় স্বাধীনতাপন্থিরা। এখন পুনরায় উক্ত দাবি উঠেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বের হয়ে যাওয়ার পর। স্কটল্যান্ডেরও একই আকাক্সক্ষা। স্মরণীয় যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে কয়েক বছর যাবত চলছে চরম মন্দা। তদুপরি ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার প্রায় এক কোটির মতো অভিবাসীর কারণে পর্যুদস্তু হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, ন্যাটো বাহিনীর বিশাল ব্যয় নির্বাহে  মার্কিন  প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনীহা প্রকাশ করেছেন। এটা বাস্তবায়িত হলে ন্যাটো বিলুপ্ত হতে পারে। কারণ, বিপুল ব্যয় নির্বাহ করার ক্ষমতা অন্য সদস্য দেশের নেই। অর্থাৎ ইউরোপ অতি দুর্বল হতে চলেছে। আর ইউরোপ যত দুর্বল হবে আমেরিকার শক্তি তত কমবে আর রাশিয়ার শক্তি বাড়বে।
এখানে আরো উল্লেখ্য, কিছুদিন পূর্ব হতেই বিশ্বে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। যেমন : ভারত-আমেরিকার সামরিক চুক্তি হয়েছে। চীনকে মোকাবেলায় ভারত-জাপান পরমাণু চুক্তি এবং জাপান-ইন্দোনেশিয়া সামরিক চুক্তি হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলো, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইসরাইল, সৌদি আরব ও তার মিত্র  দেশগুলো, মিশর, উত্তর আমেরিকা এবং আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট বন্ধু। তাই এসব দেশ মিলে আমেরিকার নেতৃত্বে এক শক্তি। অপরদিকে, পাকিস্তান-চীন, পাকিস্তান-রাশিয়া ও চীন-রাশিয়া সামরিক চুক্তি হয়েছে। তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে রাখি বন্ধনে ব্যর্থ হয়ে এখন চীন-রাশিয়ার সাথে প্রণয়ের ঘোষণা দিয়েছে। পুতিন-এরদোগান প্রণয় অত্যধিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই প্রায়ই  ফোনালাপ করেন। উপরন্তু তারা একত্রে ইরাকে আইএস ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছেন কয়েকদিন আগে। ইরান-তুরস্ক-পাকিস্তান সম্পর্ক ভালো। ইরান  ও উত্তর কোরিয়া আমেরিকার চির শত্রু। ফিলিপাইনের  প্রেসিডেন্ট দুতার্তে আমেরিকার সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে চীনের মুখাপেখী হয়েছেন এবং সামরিক চুক্তি করার ঘোষণা দিয়েছেন। রাশিয়া, ইরান ও তার মিত্রদের পূর্ণ সামরিক সহায়তায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ গৃহযুদ্ধে জয়ী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন। আর আমেরিকা ও তার মিত্রদের সৃষ্ট বিদ্রোহী গ্রুপ কুপোকাত। শিয়াদের নির্মূল করার জন্য সুন্নিদের দিয়ে ইসরাইল সৃষ্ট আইএসও নির্মূল হওয়ার পথে। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ইরাকে আছে। তাও শেষ হবে স্বল্প দিনেই। সর্বোপরি পরমাণু চুল্লি নিয়ে শক্তিশালী ৬ জাতির সাথে চুক্তি হওয়ায় ইরানের উপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার হয়েছে। তাই ইরানের অর্থনীতি খুব দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মহাশক্তির অভ্যুদয় ঘটতে চলেছে। কারণ, ঐ অঞ্চলের শিয়াদের গুরু ইরান। এছাড়া, চীন ও রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্ক তো আছেই। চীন ও রাশিয়ার আকাক্সক্ষা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বের অবসান। অন্যদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনে বসতি নির্মাণ অবৈধ বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় ইসরাইল মহাক্ষিপ্ত হয়ে জাতিসংঘের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে। উপরন্তু নিরাপত্তা পরিষদের দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছে। তাই সামগ্রিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের একচেটিয়া সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দুর্বল হয়ে পড়ছে। সউদী কর্তৃত্বও তাই। যা’ হোক, বর্ণিত এই দেশগুলো চীন-রাশিয়ার নেতৃত্বে আর এক শক্তি। অর্থাৎ ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন বনাম আমেরিকার’ পরাশক্তির স্থলে আমেরিকা-ভারত বনাম চীন-রাশিয়া পরাশক্তির অভ্যুদয় ঘটেছে। এই দুই বলয়ের মধ্যে শক্তি কার বেশি তা এখনই বলা কঠিন। তদ্রুপ পাগলাটে ট্রাম্প কি ঘটাবে তাও বলা কঠিন। ইতোমধ্যেই তিনি গোটা বিশ্বকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পুতিনও একই হুংকার দিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং ইলও পাগলামি করে একের পর এক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র  ও পরমাণু বোমার সফল পরীক্ষা চালাচ্ছেন। এই অবস্থায় নতুন মেরুকরণের কোন পাল্লা ভারী এবং তার পরিণতি কী হবে তা এখনই বলা দুরূহ।
চীন ও পাকিস্তানের মধ্যখানে ভারত। এই দুইটি দেশই শক্তিশালী এবং চির শত্রু। উপরন্তু রাশিয়ার সাথে দীর্ঘদিনের প্রণয় বিচ্ছেদ ঘটিয়ে হঠাৎ করে আমেরিকার প্রণয়ে মত্ত হওয়ায় রাশিয়া মহাক্ষিপ্ত হয়েছে ভারতের প্রতি। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন পুতিন বিমসটেক সম্মেলনে মোদির উপর। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে চীনের  প্রেসিডেন্টও মোদির উপর চড়াও হয়েছিলেন। এসব হয়েছে মোদির পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করতে গিয়ে। তাই ভারত এখন কঠিন পরিস্থিতির সন্মুখীন। ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এই অঞ্চলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তাই সবাই মত্ত হয়ে উঠেছে প্রণয়ের জন্য। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেছেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র আর ভারতের স্বার্থ একসূত্রে গাঁথা। কিন্তু প-িত ব্যক্তিদের অভিমত- ভারত নিজেই চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়ার ঠেলায় ত্রাহিবস্থা, সেখানে চীন-রাশিয়া কিছু ঘটালে ভারত-আমেরিকা সহায়তা কার্যকর হবে? তাই আবেগ নয়, পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ সঠিকভাবে নির্ণয় করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।
স্মরীণয় যে গত শতাব্দীর শেষ প্রান্তে গর্ভাচেভের ‘খোলা জানালা’ নীতির কারণেই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘটে। ফলে রাশিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই আমেরিকা একক পরাশক্তিতে পরিণত হয়। কিন্তু পুতিনের আবির্ভাব ঘটার পর পরিস্থিতি  পাল্টে যায়। তিনি একের পর এক স্থানে আমেরিকার বলয়কে চ্যালেঞ্জ করে এ পর্যন্ত সর্বত্রই সফল হয়েছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফোবর্স-এর জরীপে তিনি ২০১৬ সালের বিশ্বের  শ্রেষ্ঠ শক্তিধর নেতা বলে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার নিয়ে তিনি পরপর চারবার এই দুর্লভ কৃতিত্ব অর্জন করলেন। যা’ হোক, গত শতাব্দী ছিল ইউরোপ-আমেরিকার। আর্থিক এবং সামরিক উভয় দিকেই শ্রেষ্ঠত্ব ছিল তাদের। আবার পরপর দুইটি বিশ্বযুদ্ধের উৎপত্তিও ঘটেছিল সেখানেই। কিন্তু তারা এখন ক্ষয়িষ্ণুতার পথে। আর এশিয়া  সামরিক এবং আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই ঊর্ধগামী। তাই এই শতাব্দী এশিয়ার। যুদ্ধ চলছে মধ্যপ্রাচ্যে। দামামা বাজছে দক্ষিণ চীন সাগরস্থ এলাকায়। এই অঞ্চল করতলে রাখতে চীন বদ্ধপরিকর। এমনকি সমগ্র এশিয়াও। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ঘোষণা করেছেন, ‘কয়েক বছরের মধ্যেই ইসরাইলের অস্তিত্ব বিলীন করে দিব’। উপরন্তু ইরান রাজতন্ত্রেরও ঘোর বিরোধী (বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলমানও। এমনকি রাজতান্ত্রিক দেশের মানুষও)। কারণ, নবী করিম (সা.) গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। তাই ইরান বহুদিন আগে রাজতন্ত্র ইসলামের পরিপন্থী বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তার অবসান ঘটানোর সুযোগ পায়নি। কিন্তু বর্তমানে ইরান শক্তিতে ঊর্ধগামী আর রাজতন্ত্র পন্থীরা শক্তিতে নিম্নগামী তেলের মূল্য সর্বনিম্ন হওয়ায়। ফলে ইসরাইল আর রাজতন্ত্রের অবসান নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে  যেকোন সময়ে মারাত্মক কিছু ঘটতে পারে। তদ্রুপ পাগলাটে ট্রাম্প ও কিম জং ইল আর লৌহ মানব পুতিনের সিদ্ধান্তে বিশ্বে যে কোন মুহূর্তে ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারে। আর যদি তা হয়ই; তাহলে, তার পরিণতি কী হবে তা এখনই বলা দুরূহ। তবে ভবিষ্যতে বিশ্বে যেটাই ঘটুক, তা শুরু হতে পারে এশিয়াভিত্তিক। কারণ, এই শতাব্দি এশিয়ার।
য় লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন