বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

নিরাপদ সড়কের জন্য সংসদ সদস্যদের প্রচারণায় নামতে হবে : স্পিকার

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক নিরাপদ রাখতে সংসদ সদস্যদের প্রচারণায় নামার আহŸান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনারোধে ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য দেশের প্রত্যেক মানুষের জ্ঞান থাকা দরকার। স্কুলপর্যায় থেকে শিশুদের মধ্যে ট্রাফিকের বিষয়ে ধারণা দেয়া দরকার।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামক সংগঠনের সপ্তম জাতীয় মহাসমাবেশে এ কথা বলেন স্পিকার।
শিরীন শারমিন বলেন, নিরাপদ সড়কের ক্ষেত্রে আমরা যেমন জনসচেতনতার কথা বারবার বলি, সেখানে আমার কাছে মানে হয়, আমাদের একবারে স্কুলপর্যায়, বিদ্যালয়পর্যায় থেকে শিশুদের মধ্যে ট্রাফিকের বিষয় ধারণা দেয়া দরকার।
তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে চলার গুরুত্ব এবং কিভাবে পথ পারাপার হবে সেই বিষয় থেকে শুরু করে, এর যে একটা ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে, সেই বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তকে এবং স্কুলে ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে নিতে হবে। এই উদ্যোগ ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ তারাও উদ্যোগ নিতে পারে বা অন্য যে কোনো সমাজিক সংগঠন নিতে পারে। বিদ্যালয়গুলোকে সম্পৃক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ হতে পারে।
স্কুল কলেজের সামনে জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করার বিষয়ে আরো গুরুত্ব দেয়ার আহŸান জানান স্পিকার।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে জাতীয় সংসদের সদস্যদের এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়ে শিরিন শরমিন বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা সেটা আমাদের সকলের সমস্যা। এই সড়ককে নিরাপদ রাখতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। যেখানে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে, জনগণ, পথচারিদের সম্পৃক্ত হতে হবে, নারী, যুবক, বৃদ্ধ সকলকে আমাদের সচেতন করে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের যে ৩৫০ জন জাতীয় সংসদ সদস্য রয়েছেন তারাও কিন্তু আপনাদের এই ক্যাম্পিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন। আমি আমার মাধ্যমে এ আহŸান জানাতে চাই, সংসদ সদস্যগণ তাদের নিজস্ব এলাকায় তারা তাদের বিভিন্ন বক্তব্য এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করণের বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যাপক প্রচারণা এবং কার্যক্রম গ্রহণ করুন। তাহলে কিন্তু তারা বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজে ভ‚মিকা রাখতে পারেন। আর এই নিরাপদ সড়ক যা জীবনকে নিরাপদ করে গড়ে তোলে।
এ সময় চালক ও পথচারিকে উদ্দেশ করে স্পিকার বলেন, আমরা অনেক সময় খুব দ্রæত যেতে চাই। এই দ্রæত যাওয়ার যে প্রবণতা, দ্রæত যেতে গিয়ে আমরা অনেকে আইনলঙ্ঘন করি, আইন মানি না। কিন্তু সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। কাজেই দ্রæত যাওয়ার প্রবণতাকে রাখতে গিয়ে আমরা যেন আইটাকে লঙ্ঘন না করি এবং নিরাপদ সড়কের অন্তরায় যেন না তৈরি করি। আসুন আমরা সকলেই ট্রাফিক আইন মেনে চলি।
সংসদে এ ধরণের কোনো আইন বিল আকারে যদি আসে তা পাশ করার ব্যপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার বলেন, আজকের আলোচনায় আইনের বিষয়টি সামনের চলে এসেছে। আইনের প্রয়োজনীতা আছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে কোনো কিছুর সুফল বয়ে আনে না। সংসদে এ ধরনের কোনো আইন বিল আকারে যদি আসে তা পাশ করার ব্যপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। চালক যদি তার বাহনটিকে সাবধানতা, আইন, নিরাপদ ট্রাফিক রুল মেনে চালান, তবে তার নিজের জীবনের ঝুঁকি হ্রাস করার পাশাপাশি বাহনের যাত্রীদের জীবনেও ঝুঁকি কমে যায়।
সড়ক নিরাপত্তায় নিচসার তৎপরতার প্রশংসা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, এক কান্না থেকে একজন শিল্পী পথে নেমেছিলেন। তার হাত ধরে লক্ষ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে একটি আন্দোলন হয়ে। কাছের কেউ মারা গেলে তার কষ্ট সরাসরি যার জীবনে ঘটেনি, তারা বলতে পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই (নিচসা)’র চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এখন দলের কাজে ব্যস্ত। তাই আগের মতো তার মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট কাজ, সড়কের দিকে নজর দিতে পারছেন না। আর তাতে বেড়ে গেছে সড়ক দুর্ঘটনা।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সড়কমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে যেতেন সড়কের অবস্থা ও যানবাহন চলাচলের শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণ করতে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আগে আমরা মনে করতাম সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে। কিন্তু সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমেছে।
কিন্তু চলতি জানুয়ারি মাসে দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে নিরাপদ সড়ক চাই’র প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এতে তারা আতঙ্কিত। এ সময় দুর্ঘটনা বাড়ার নানা কারণের মধ্যে সড়কমন্ত্রীর সরেজমিন তৎপরতা কমে যাওয়া একটা কারণ। তিনি বলেন, যোগাযোগমন্ত্রী আগে যেভাবে কাজ করতেন সড়ক নিয়ে, এখন সেভাবে কাজ করতে পারছেন না। এখন তিনি দলের কাজে ব্যস্ত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন