শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদিগন্ত

টার্গেট বাংলাদেশ : প্রশ্নগুলো অমীমাংসিত

প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজু আহমেদ
শিল্পীর কণ্ঠে, ‘আমি চিৎকার করিয়া কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার...।’ নিকষ কালো আঁধারে ঢাকা অমাবস্যার রাতের চেয়েও অন্ধকার নেমেছিল সেদিন সকালে। আনন্দ-উৎসবের রঙকে বুকের রক্ত এবং আহাজারীর বীভৎসতা গ্রাস করেছিল। মানবতা আরেকবার সপাটে ধাক্কা খেয়েছিল। গোটা দেশের মানুষ চরম উৎকণ্ঠিত ছিল টানা ৪৮ ঘণ্টা। বিশ্ববাসী অবাক হয়ে লক্ষ করছিল কিছু মানুষের অমানুষসুলভ আচরণ। দেশের ইতিহাসের নারকীয় হত্যাকা- তথা পিলখানা ট্র্যাজেডি ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালের কথাই বলছি। একদল বিপথগামী বিডিয়ার (বর্তমানে বিজিবি) জওয়ানের হাতে খুন হয়েছিল ৫৭ জন আর্মির অফিসারসহ  আরও অনেকেই। টানা দু’দিন গোটা পিলখানা জুড়ে চলেছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের নিকৃষ্ট গণহত্যা। খুন হওয়ার পর কারো আশ্রয় জুটেছিল গণকবরে আবার কারো ড্রেনে। খুনীরা বুলেটের আঘাতে অফিসারদের প্রাণ কেড়েই শান্ত হয়নি বরং মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বেয়নেটের দ্বারা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে উল্লাস করেছে। রক্ষা পায়নি নারী এবং শিশুরাও। অশ্রাব্য-অশালীন গালি, বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে তবেই গুলি করে মেরেছে অফিসারদের স্ত্রী ও বাসার অন্য মহিলাদের। লুট করেছে সবকিছু। ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিয়ারে কর্মরত যে সকল আর্মি অফিসারদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের কর্ম দক্ষতার শুন্যস্থান কোনদিন পূরণ হবে না। ইতিহাসের যে নৃশংসতম হত্যাকা-টি সেদিন ঘটেছে তার জন্য বাংলাদেশর সামরিক অঙ্গনকে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে কম করে হলেও দুই যুগ। আর্মির অফিসারদের এমন গণহত্যার ঘটনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম এবং দুর্ভাগ্যবশত এটা ঘটলো আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশে এবং নিজেদের দ্বারাই। পাকিস্তানের বর্বর শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে হায়েনাসম পাক সেনারা ১৯৭১ সালে ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বটে কিন্তু দীর্ঘ সময় জুড়ে তা-ব চালিয়েও এত অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষিত আর্মি অফিসার হত্যা করতে পারেনি, যত সংখ্যককে হত্যা করা হয়েছে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পিলখানায়।
বিডিয়ার সপ্তাহের আয়োজন আনন্দ উৎসবের বার্তা নিয়েই আগমন করে। বিশেষ করে সামরিক বাহিনীতে দরবার হলের অনবদ্য গুরুত্ব রয়েছে। অফিসারদের সাথে জওয়ানদের আশা-আকাক্সক্ষা, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, কষ্ট-আনন্দ ভাগ করে নেয়ার এর চেয়ে সুবর্ণ আয়োজন তাদের পেশাজীবনে দ্বিতীয়টি আর উপস্থিত হয় না। বরাবরের মতো ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত হয়েছিল বিডিয়ার সপ্তাহ। এ আয়োজনের মাত্র একদিন পেরিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি কর্মদিবসে এমন দুঃসহ ঘটনা ঘটবে তা কে আন্দাজ করেছিল? ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিদিনের মতো সেদিন সকালেও কুয়াশায় আবৃত গাছের পাতার ফাঁক গলে হালকা সূর্যের আলো উঁকি দিয়েছিল। পিলখানা জুড়ে পাখিদের কিচিরমিচির ডাক অন্যান্য দিনগুলোর মতই নব ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেছিল। বিউগলের পোপ...পো আওয়াজে সুর-ঝঙ্কার ওঠেছিল। তবে সেদিনের আওয়াজ বোধহয় কিছুটা করুণ সুরে কেঁদে কেঁদে বের হচ্ছিল ট্রাম্পেটের বাঁশি দিয়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রাক্তন বিডিয়ার মহাপরিচালক ফজলুর রহমানের সূত্রে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, বিডিয়ার জওয়ানদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ অনেক পূর্ব থেকেই ছিল। সকল সমস্যা কাটাতে তারা রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, তাদের অফিসারদের কাছে কম যাওয়া-আসা করেনি। কিন্তু কাজ হয়নি মোটেও, বরং ক্ষোভ আরও পুঞ্জিভূত হয়েছিল। ২০০৯ সালের সেই সকালেও মনে একগাদা চাপা ক্ষোভ নিয়ে জওয়ানদের সামনে বিডিয়ার প্রধান শাকিল আহমেদ বক্তৃতা করছিলেন। তার বক্তৃতার মাঝেই শুরু হয় হট্টগোল। জাতিসংঘ মিশনে না নেয়া, ডাল-ভাত কর্মসূচি, সপিংমলের হিসাব, সীমান্তের চোরাই মাল আটকের-লুণ্ঠনের ভাগ অফিসার সৈনিক অনুপাত ইত্যাদি নিয়ে শুরু হয় বাক-বিত-া। অনেক দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ, যে রাজননৈতিক নেতারা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন তাদের পিছুটান এবং কিছুটা গুজব ছড়িয়ে সৃষ্টি হলো ইতিহাসের হীনতম অন্ধকার অধ্যায়ের। তবে এমন পৈশাচিক হত্যাকা-ের বিষয়টি পরিকল্পিত ছিল নাকি হঠাৎ করেই হয়ে গেছে তা নিয়ে রয়েছে বহু বিতর্ক। যদি পূর্ব পরিকল্পিতই হয় তবে অনেকগুলো প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রথমত, যদি পূর্ব পরিকল্পিত হয় তবে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তা আঁচ করতে পারেনি কেন? দ্বিতীয়ত, বিডিয়ার জওয়ানদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছিল তা প্রশমনের জন্য যে উদ্যোগ নেয়া আবশ্যক ছিল তা নেয়া হয়নি কেন? প্রশ্ন রয়ে যায় আরও। বিডিয়ার বিদ্রোহের ঘটনা কি শুধু দেশের সীমার মধ্যেই পরিকল্পিত হয়েছে নাকি অন্য দেশের কোনো ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়নেই দেশের এক ঝাঁক মেধাবী অফিসারকে জীবন দিতে হয়েছে? জিজ্ঞাসাগুলো অমীমাংসিত বটে।
আমরা বিডিয়ার/বিজিবির বিদ্রোহের ৭ম বার্ষিকিতে দাঁড়িয়ে। বিডিয়ার বিদ্রোহ নিয়ে সকল প্রকাশ্য আলোচনার সাথে অনেক শঙ্কার কথাও বিভিন্ন মহল থেকে আলোচিত হয়েছে। কেউ কেউ এটাকে অন্য কোনো দেশের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে এ সকল শঙ্কাকে প্রমাণ করার আপাতত কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিডিয়ার বিদ্রোহের পর দু’টো তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল এবং তারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও চেষ্টা করে ঘটনার অন্তরালের আসল সত্য উদঘাটনের। কিন্তু দু’দলই তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছে। বিডিয়ার বিদ্রোহের তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পূর্বে অতীতের কিছু তদন্ত কমিটির সমীক্ষা আমাদের স্মরণে রাখতে হবে। ২০০৪-এর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, উদীচির অনুষ্ঠানে হামলার পরেও তদন্ত কমিটি ঘোষিত হয়েছিল এবং তারা রিপোর্টও দিয়েছিল কিন্তু মনে হচ্ছে সেখানে আসল অপরাধী অন্তরালেই ছিল। বিডিয়ার বিদ্রোহের কারণ অনুসন্ধানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আনিস উজ জামানের নেতৃত্বে একটি এবং সামরিক বিভাগের পক্ষ থেকে ১৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে দুটো তদন্ত কমিটিই তাদের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে যে পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন ছিল তা সংগ্রহ করতে পারেনি। আনিস উজ জামানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত দল তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ‘তদন্তের স্বার্থে এ কমিটি কয়েকটি সংস্থার প্রধান, কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নিকট হতে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা আবশ্যক বলে মনে করেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সহযোগিতার অভাবে এ কাজগুলো করা সম্ভব হয়নি’। তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিদ্রোহের পরিকল্পনা তদন্তে সহায়তাকারী একটি সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে (সংযোজনী-৭) ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখের  হত্যাকা-, লুটতরাজ ও অন্যান্য অপরাধের পরিকল্পনার সাথে বিডিআর এর অনেক সদস্যসহ আরো অনেক বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ জড়িত ছিল বলে প্রকাশ...”। কারা এই অনেক বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ? অন্যদিকে সামরিক বাহিনী থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তারা প্রধানমন্ত্রীসহ আরও কয়েকজন রাজনৈতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। কিন্তু তারা জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি তো পায়ইনি বরং আরও অসন্তোষের প্রকাশ ঘটে।
পিলখানা ট্র্যাজেডীর পর এ নিয়ে পাল্টাপাল্টির রাজনীতি কম হয়নি। তৎকালীন সময়ে বিএনপি-জোট থেকে এ হত্যাকা-ের সাথে আওয়ামী লীগের যোগ-সাজোশের কথা বলা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রেরও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিয়ার বিদ্রোহকালীন সময়ে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সাথে ঘন ঘন খালেদা জিয়ার ফোনালাপকে উদ্ধৃত করে এক বক্তৃতায় অনেকগুলো প্রশ্ন রেখেছেন। এ দেশের যে কোনো ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রাজনীতির বৈশিষ্ট্যতে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এটা যে বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে প্রকৃত ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষতা ও বস্তু নিষ্ঠতা নষ্ট করে সেদিকে খুব বেশি খেয়াল কারো পক্ষ থেকে কখনোই প্রকাশ পায়নি। বিডিয়ার বিদ্রোহকালীন সময়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে যে নয়টি গোপন তারবার্তা পাঠিয়েছিলেন সেগুলো উইকিলিস ফাঁস করে দেয়ায় সেখান থেকে কিছু নতুন তথ্য জানা গেছে। সরকার প্রধানের প্রতি পাঁচ শতাধিক সেনা অফিসারের ক্ষোভ (রিপিটেড ভারবাল অ্যাবিউজ) এবং পহেলা মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সাহসিক পরিচয়ে বিক্ষুদ্ধ সেনা অফিসারদের শান্তকরণ, সরকারের পক্ষ থেকে দক্ষভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার প্রশংসা এবং বিদ্রোহের তদন্তের কাজে সততা ও অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মরিয়ার্টি যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন-এইসব তথ্য উইকিলিসে ফাঁস হয়। উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর দেশের বহুল আলোচিত বিডিয়ার বিদ্রোহের মামলার রায় ঘোষিত হয়। এতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদ-ের আদেশ, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি এবং ২৭৭ জনকে খালাস দেয়া হয়। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে কয়েকজন পলাতক এবং একজন জেলে থাকাকালীন সময়ে মারা গেছে।  
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে বিজিবি এবং আর্মির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা যদি যুগপৎভাবে দেশের কল্যাণে আত্মনিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে না পারে কিংবা না করে তবে দেশের ভবিষ্যৎ আবারো অজানা গন্তব্যে ধাবিত হওয়ার শঙ্কা জাগবে। কাজেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ দু’বাহিনীর সুসম্পর্ক নিশ্চিত করা জরুরি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ দু’বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে সরকারকেই সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য সরকারকে বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিডিয়ার বিদ্রোহের মতো অতীতে যে সকল স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে নগ্ন রাজনৈতিক মেরুকরণ করার চেষ্টা করা হয়েছেÑএই অভ্যাস ত্যাগ করে দেশের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার অনুরোধ জানাই। দেশের মধ্যে সকলে যেন মিলেমিশে বাস করতে পারি তার ব্যবস্থা রাষ্ট্রকেই করতে হবে। বিজিবির মধ্যে যেমন আমাদের এক ভাই কর্মরত, তেমনি আর্মির মধ্যেও আমাদের আরেক ভাই দায়িত্বপালনরত। সর্বোপরি এদের সবাইকে দেশের স্বার্থে দরকার। সুতরাং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখাতে হবে এবং শোষণের বেড়াজাল ভেদকরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেশকে সামনে নিতে হবে। বিডিয়ার বিদ্রোহের মতো আর কোনো ঘৃণিত ঘটনার স্বাক্ষী যেন আমাদেরকে এ জন্মে আর না হতে হয় তার জন্য সকলের নমনীয়তা, দায়িত্বশীলতা, সততা, জবাদিহিমূলক মানসিকতা প্রদর্শন করা অতি আবশ্যক।
লেখক : কলামিস্ট
raju69alive@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন