স্পোর্টস রিপোর্টার : গত বছর তিনেক ধরে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফরমারদের একজন তিনি। সম্প্রতি ফিটনেসেও উন্নতি হয়েছে দারুণ। তার পরও ভারত ও শ্রীলঙ্কা সিরিজের জন্য ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলেও রাখা হয়নি তাকে। শাহরিয়ার নাফীস হতাশ হয়েছেন, মুষড়ে পড়েননি। জবাব দিচ্ছেন ব্যাটেই। গতকাল বিসিএলের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে শাহরিয়ার করলেন দারুণ এক ডাবল সেঞ্চুরি। বিকেএসপি তিন নম্বর মাঠে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে করেছেন অপরাজিত ২০৭। বিসিএলে আগের পাঁচটি রাউন্ডে দু’টি ফিফটি পেলেও শাহরিয়ার তিন অঙ্কের দেখা পেলেন একেবারে শেষ রাউন্ডে এসে। শুধু সেঞ্চুরি করেই থামেননি, ২৪ টেস্ট ও ৭৫ ওয়ানডে খেলা বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান সেটিকে টেনে নিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের শাহরিয়ারের এটি দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। ২০১৫ সালে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে খুলনার বিপক্ষে ২১৯ করেছিলেন বিকেএসপির দুই নম্বর মাঠে।
গতকাল ম্যাচে তৃতীয় দিন শুরু করেছিলেন শাহরিয়ার ১৭০ রান নিয়ে। আগের দিন ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন তুষার ইমরান। এর আগে মোহাম্মদ মিঠুন করেছিলেন ১৩১। তৃতীয় দিন সকালে ১৯৯ থেকে অনিয়মিত বোলার সাদমান ইসলামকে চার মেরে শাহরিয়ার দুই’শ স্পর্শ করেন ২৯৬ বলে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দু’টি করে ডাবল সেঞ্চুরি শাহরিয়ার ছাড়াও আছে রনি তালুকদার, নাজিমউদ্দিন, মার্শাল আইয়ুব ও নাঈম ইসলামের। তিনটি করে আছে মোসাদ্দেক হোসেন, তুষার ইমরান ও অলক কাপালীর। ২০৭ রানের ইনিংসটির পথে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সাত হাজার রানও স্পর্শ করেছেন শাহরিয়ার। দক্ষিণাঞ্চল ইনিংস ঘোষণা করেছে আট উইকেটে ৭৪৯ রানে। বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। ২০১৩-১৪ জাতীয় লিগে রাজশাহীর বিপক্ষে ঢাকার ৬ উইকেটে ৭৫৬ দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। তবে রানের পর্বতে উঠলেও খুব সুবিধা করতে পারেননি দক্ষিণাঞ্চলের বোলাররা। ম্যাচ তাই ড্র’র পথে।
তৃতীয় দিনে আট উইকেটে ৭৪৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণাঞ্চল। বাংলাদেশে এটি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। ১৭০ রান নিয়ে দিন শুরু করে শাহরিয়ার অপরাজিত থাকেন ২০৭ রানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। মধ্যাঞ্চল দিন শেষ করেছে প্রথম ইনিংসে তিন উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে।
সাদমান ইসলাম ও রনি তালুকদার উদ্বোধনী জুটিতে মধ্যাঞ্চলকে এনে দেন ৫০ রান। দ্বিতীয় উইকেটে দুই তরুণ সাদমান ও সাইফের জুটি ৭৪ রানের। সাতটি চার ও দুই ছক্কায় ৫০ রান করা সাইফকে ফেরান রাজ্জাক। অভিজ্ঞ মার্শাল আইয়ুব ফিরে যান ৩৭ রানে। তবে এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে গেছেন সাদমান। দিন শেষে বাঁ-হাতি ওপেনার অপরাজিত আছেন ২১২ বলে ৬৩ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস : ১৯৯.২ ওভারে ৭৪৯/৮ (ইনিংস ঘোষণা) (আগের দিন ৭০১/৮) (শাহরিয়ার ২০৭*, নাজমুল ৩৬*; শরীফ ১/৫৩, আবু হায়দার ০/১০৪, শুভাগত ৩/২০২, মোশাররফ ১/১৬৩, তাইবুর ০/১১৩, তানবির ২/৬৫, সাইফ ০/৭, মার্শাল ১/১১, নুরুল ০/৭, রনি ০/৬, সাদমান ০/৮)।
মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস : ৭২ ওভারে ১৮৪/৩ (সাদমান ৬৩*, রনি ২৬, সাইফ ৫০, মার্শাল ৩৭, শুভাগত ১*; জিয়াউর ০/১২, আল আমিন ১/২৪, রাজ্জাক ২/৮৫, নাহিদুল ০/১৮, নাজমুল অপু ০/৩৯, আল আমিন ০/২)।
স্কোর কার্ড
জয় বাংলা সিরিজ
শ্রীলংকা-বাংলাদেশ, ১ম টেস্ট ১ম দিন
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, শ্রীলংকা
টস : শ্রীলংকা
শ্রীলংকা ১ম ইনিংস রান বল ৪ ৬
করুণারতে্ন বোল্ড মিরাজ ৩০ ৭৬ ২ ০
থারাঙ্গা বোল্ড শুভাশিষ ৪ ১৪ ১ ০
কুশল মেন্ডিস ব্যাটিং ১৬৬ ২৪২ ১৮ ২
চান্ডিমাল ক মিরাজ ব মুস্তাফিজ ৫ ৫৪ ০ ০
গুণারতেœ বোল্ড তাসকিন ৮৫ ১৩৪ ৭ ০
ডিকওয়েলা ব্যাটিং ১৪ ১৩ ২ ০
অতিরিক্ত (লেবা ৯, ও ৩, নো ৫) ১৭
মোট (৪ উইকেট, ৮৮ ওভার) ৩২১
উইকেট পতন : ১-১৫ (থারাঙ্গা), ২-৬০ (করুণারতেœ), ৩-৯২ (দান্ডিমাল), ৪-২৮৮ (গুণারতে্ন)
বোলিং : মুস্তাফিজ ১৫-৩-৫০-১, তাসকিন ১৬-৩-৪৮-১, শুভাশিষ ১৬-৩-৫৮-১, মিরাজ ১২-০-৬৬-১, সাকিব ২৪-৩-৭১-০, সৌম্য ৩-০-৯-০, মাহমুদউল্লাহ ২-০-১০-০।
(প্রথম দিন শেষে)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন