বিশেষ সংবাদদাতা : প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও তার পত্নী রাশেদা খানম দেশের ৪৭তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গভবনে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের রাজনীতিক, কূটনীতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার এবং শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনে জমজমাট স্বাধীনতার ৪৬তম বার্ষিকী উদযাপন করলেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। গতকাল (রোববার) বঙ্গভবন প্রাঙ্গণে বিকেল পৌনে ৫টায় অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও সংবর্ধনায় অংশ নেন।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে সরগরম ছিল বঙ্গভবনের সবুজ প্রাঙ্গণ। লাল-সবুজ পাতা দিয়ে তৈরি একটি পতাকা অনুষ্ঠানে আনে ভিন্নমাত্রা। খ্যাতনামা শিল্পীদের দেশাত্মবোধক ও লোকগান এবং শিশুশিল্পী ও সশস্ত্র বাহিনীর বাদক দলের সংগীতের মূর্ছনা অনুষ্ঠানের অতিথিদের মুগ্ধ করে।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। তারা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও অনুষ্ঠানে আগত সম্মানিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের কল্যাণে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বিকাল পৌনে ৫টায় স্ত্রী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনের মাঠে আসেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে পৌঁছান তার কিছুক্ষণ আগে। প্রেসিডেন্ট সস্ত্রীক মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় জাতীয় সংগীত। পরে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশি অতিথি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, গণমাধ্যমের সম্পাদক, তিন বাহিনীর প্রধানসহ সমারিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা। অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে বসেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও গওহর রিজভী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, হুইপ শাহাব উদ্দিন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানও এসেছিলেন বঙ্গভবনের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
বিএনপির কোনো নেতাকে দেখা না গেলেও দুই বছর আগে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া শমসের মবিন চৌধুরী এ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। আরও ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ও ফখরুল ইমাম।
গণমাধ্যমের সম্পাদকদের মধ্যে দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খানসহ জাতীয় পত্রিকার কয়েকজন সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট, ব্রিটিশ হাইকমিশনার এলিসন বেøইক, ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, পাকিস্তানের হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অতিথি হয়ে। শিল্পী শাহীন সামাদ, খুরশিদ আলম, এসআই টুটুল, রাজীব, অনুপমা মুক্তি ও দেবলীনা গানের সুরে মোহিত করেন সবাইকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন