সিলেট অফিস : অবশেষে পুলিশের উপস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আতিয়া মহল ভবনটি মালিক ও ভাড়াটিয়াদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় তারা তাদের ফ্লাটে প্রবেশ করেন।
দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি পাঠানপাড়াস্থ জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহল এখন বিস্ফোরকমুক্ত করার পর গত সোমবার বিকেলে ভবনটি ক্রাইম সিন হিসেবে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। পুলিশ তালিকা অনুযায়ী আতিয়া মহলের ২৮ পরিবারের মধ্যে এ মালামাল হন্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে। ভাড়াটিয়ারা ভবনটির মালিক এবং পুলিশের উপস্থিতে ঘরে ঢুকে আঁতকে উঠেন। ভাড়াটিয়াদের অধিকাংশ মালামালই বোমা আর গুলির আঘাতে নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি করছেন মালামাল বুঝে পাওয়া বাসিন্দারা। চারদিকে বোমা আর গুলির দাগ, গুলির খোসা পড়ে আছে ভবনের বিভিন্ন জায়গায়। অনেক ভাড়াটিয়া অভিযোগ করেছেন, তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া গেছে। বাসার সব মালামাল ছড়ানো ছিটানো। আতিয়া মহলের বাসিন্দা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা বেগম অভিযোগ করেছেন, উনার ঘরের সব মালামাল উলট-পালট করে রাখা। সবকিছু বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি বলেন, তার এক ভরি স্বর্ণ এবং নগদ প্রায় ১৫ হাজারের মতো টাকাসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খোয়া গেছে। আতিয়া মহলের বাসিন্দা রবিউল আলম জানান, তার বাসার সবকিছু তছনছ করা তবে তিনি তার মূল্যবান জিনিসপত্র পেয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ভাড়াটিয়া ইতোমধ্যেই বাসার মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। শঙ্কা আর আতঙ্কের কারণেই আতিয়া মহল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তারা বলে জানিয়েছেন বাসার বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ মধ্যরাতে এই আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। ওই রাত থেকে ভবনটি ঘিরে রাখার পর ২৫ মার্চ সকাল থেকে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নাম দিয়ে অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো। প্রথমে আতিয়া মহলের ৩০টি ফ্ল্যাটে আটকে পড়া ২৮টি পরিবারের ৭৮ জন সদস্যকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। পরে শুরু হয় জঙ্গিবিরোধী অভিযান। ২৮ মার্চ অভিযান শেষে চার জঙ্গি নিহতের খবর জানায় সেনাবাহিনী। ২৫ মার্চ আতিয়া মহলের বাইরে বিস্ফোরণে র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাতজন নিহত হন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন