বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

ব্যবসার বড় ঝুঁকি সুশাসনের অভাব

প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবুল কাসেম হায়দার : ব্যবসা-বাণিজ্যে ঝুঁকি থাকবে। ঝুঁকি ছাড়া কোনো ব্যবসা নেই। লাভ-ক্ষতি মিলেই তো ব্যবসা। অর্থনৈতিক এই সকল ঝুঁকি মোকাবেলা করে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে যেতে হয়। ওয়ার্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিওইএফ) কিছু দিন পূর্বে বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন ফান্ড শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে ব্যবসা-বাণিজ্যে ৫টি ঝুঁকিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পাঁচটি ঝুঁকির শতকরা হার প্রকাশ করে দেখানো হয়েছে। আগামী ১৮ মাসে এই ৫টি ঝুঁকির হার কীরূপ থাকবে তা-ও সুন্দর করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১০ বছরের জন্য এই ৫টি ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে, তাকেও শতকরা হারে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনের মূল ভাষ্য হলো, সুশাসনের অভাবই দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবসা করার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। এ ছাড়া জ্বালানি প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব, আর্থিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, জলবায়ুগত পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যর্থতা ও সক্ষমতার অভাবও এই অঞ্চলে ব্যবসা করার অন্যতম অর্থনৈতিক ঝুঁকি।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত পাঁচ ঝুঁকি : জ্বালানি দামের অভিঘাত ৬৭%, রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ব্যর্থতা ৬৭%, আর্থিক খাতের সঙ্কট ৫০%, বেকারত্ব/আশিংক বেকারত্ব ৫০% ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতা ৫০%। আগামী ১৮ মাসের জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ের সর্বোচ্চ ৫ ঝুঁকির বিষয়: অনিচ্ছাকৃত অভিবাসন ৫২%, রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা/সংকট ২৭.৯৫%, আন্তরাষ্ট্রীয় দ্বন্দ্ব ২৬.৩%, বেকারত্ব/আশিংক বেকারত্ব ২৬%, সুশাসনে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা ২৫.২%। আগামী ১০ বছরের জন্য বৈশ্বিক পর্যায়ের সর্বোচ্চ ৫ ঝুঁকির বিষয় : সুপেয় পানির সংকট ৩৯.৮%. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতা ৩৬.৭%, ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২৬.৫%, খাদ্য সংকট ২৫.২%, গভীর সামাজিক অস্থিরতা ২৩.৩%। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবসা করার অর্থনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কে এমন মতামত উঠে এসেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ‘বৈশ্বিক ঝুঁঁকি প্রতিবেদন ২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে। ব্যবসা-বাণিজ্য করার জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি নির্ধারণে বিশ্বের ১৪০টি দেশের ১৩ হাজার নির্বাহীর মতামতের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের অর্থনৈতিক ঝুঁকি যেমন তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি পুরো বিশ্বের ঝুঁকিও চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বল্পমেয়াদি ঝুঁঁকির জন্য আগামী ১৮ মাস বা দেড় বছরের সময়সীমাকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, আর আগামী ১০ বছরের জন্য প্রযোজ্য ঝুঁকিগুলোকে ধরা হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে চালানো জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসা করার ঝুঁঁকি একেক দেশে একেক রকম। এর মধ্যে জরিপে বাংলাদেশের নির্বাহীরা বলেছেন, ব্যবসা করার জন্য এ মুহূর্তে তাদের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো সুশাসনের অভাব। সুশাসনের অভাব বলতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা ও অচলাবস্থা এবং সর্বগ্রাসী দুর্নীতিকে বুঝিয়েছেন মতামত প্রদানকারীরা।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ঝুঁঁকির বিষয়টিও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ ক্ষেত্রে সুশাসনের অভাবের পাশাপাশি জ্বালানি খাতের অনিশ্চয়তাকে বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মতামত প্রদানকারীদের সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ এই দুটি বিষয়কে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক ঝুঁকি মনে করেন। জ্বালানির জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর পরনির্ভরতা এ ঝুঁঁকি বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বলেও তারা মনে করেন।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলেও তা কর্মসংস্থান বাড়াতে পারছে না। বিষয়টিকে ‘জবলেস গ্রোথ’ বা কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এ অঞ্চলে প্রতিবছর ২১ লাখ যুবক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, কিন্তু বিশাল এ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ অঞ্চলের অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আর্থিক ব্যবস্থাপনার সমস্যা, বেকারত্ব ও আংশিক বেকারত্ব, জলবায়ুগত পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যর্থতা। মতামত প্রদানকারীর ৫০ শতাংশই এ তিনটি বিষয়কে ব্যবসার জন্য সমান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন।
ব্যবসা করার জন্য সারা বিশ্বে প্রধান পাঁচ ঝুঁকির ১ নম্বরে আছে বেকারত্ব বা অর্ধবেকারত্ব। জরিপে অংশ নেয়া ১৪০টি দেশের ৪১টি দেশেই বেকারত্ব ১ নম্বর অর্থনৈতিক ঝুঁঁকি হিসেবে উঠে এসেছে। আর ৯২টি দেশে এটি সবচেয়ে বড় পাঁচ ঝুঁকির একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বেকারত্বের এই সমস্যা উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশেই কম-বেশি মাত্রায় আছে। এর সঙ্গে অর্ধবেকারত্ব বা আন্ডার এমপ্লয়মেন্টের সমস্যাটিও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। কাজের পর্যাপ্ত সুযোগের অভাবে কর্মক্ষম একজন ব্যক্তি নির্ধারিত মানের চেয়ে কম সময় কাজে নিয়োজিত থাকলে সেটিকে বলা হয় অর্ধবেকারত্ব।
এরপরের বড় ঝুঁঁকি হিসেবে ২৯টি দেশের মতামত প্রদানকারীরা জ্বালানি খাতের মূল্য অস্থিরতাকে চিহ্নিত করেছেন। ৯৩টি দেশ এটি তাদের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় পাঁচ ঝুঁকির একটি মনে করেন। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের অব্যাহত দরপতনের ফলে উৎপাদনকারী দেশগুলোর অর্থনীতি এ বছর গভীর সংকটে পড়বে বলেও মনে করা হচ্ছে।
বৈশ্বিক পর্যায়ে তিন নম্বর ঝুঁকি হিসেবে স্থান পেয়েছে রাষ্ট্রীয় সুশাসনের অভাব। ১৪টি দেশের নির্বাহীরা এ সমস্যাকে তাদের দেশে ব্যবসা করার বড় ঝুঁকি মনে করেন। বৈশ্বিক ঝুঁকি হিসেবে চার নম্বরে আছে সম্পদের অতিমূল্যায়ন বা অ্যাসেট বাবল। বিনিয়োগের বিভিন্ন উপাদান, যেমন: শেয়ারবাজার, সঞ্চয়পত্র আবাসনের মূল্য অতিরিক্ত বৃদ্ধি বা হ্রাসকে বলা হয় অ্যাসেট বাবল। বৈশ্বিক ঝুঁকির পাঁচ নম্বরে আছে সাইবার হামলার আতঙ্ক। ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলার কারণেই বিষয়টিকে ব্যবসার জন্য একটি বড় ঝুঁকি মনে করেন নির্বাহীরা। এ প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, ভূরাজনৈতিক, সামাজিক, প্রযুক্তিগতসব ক্ষেত্র ধরে আগামী দেড় বছর বা ১৮ মাসে সারা বিশ্বের জন্য পাঁচটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষয়গুলো হলো অনিচ্ছাকৃত অভিবাসন, রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা/সংকট, আন্তরাষ্ট্রীয় দ্বন্দ্ব, বেকারত্ব/আংশিক বেকারত্ব, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। আগামী ১০ বছরে সব ক্ষেত্রের জন্য নির্বাচিত পাঁচটি বড় ঝুঁকি হলো সুপেয় পানির সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যর্থতা, ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্যসংকট এবং গভীর সামাজিক অস্থিরতা।
আমাদের করণীয় : দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে আমাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্যে সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ঝুঁকিসমূহকে সফলভাবে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। এই সকল মানব সৃষ্ট ঝুঁকি থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যকে বাঁচিয়ে অগ্রসর হতে হলে করণীয় নিয়ে সকলকে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। উপায়ও আমাদের বের করতে হবে। আশু পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা দ্রুত বাস্তবানে আমাদের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
১. প্রথম ঝুঁকি হিসাবে প্রতিবেদনে বাংলাদেশে তোলে ধরা হয়েছে সুশাসন বিষয়। দেশে সুশাসন কায়েম করতে হবে। ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অরাজকতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ঘুম, হত্যা, সামাজিক নিরাপত্তার চরম অভাব প্রভৃতি আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় বাধা বা ঝুঁকি। কয়েকদিন পূর্বে টিআইবি এক রিসার্চ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে ১৬টি ধাপে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই সকল অনিয়মকে একেবারে অস্বীকার করা যাবে না। এই সকল দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম তৈরি পোশাক শিল্প কেন, সকল শিল্প বাণিজ্যে রয়েছে। কোথাও কোথাও আরও প্রবলভাবে বিরাজমান। এই অবস্থার থেকে বের হয়ে আসতে হলে রাষ্ট্রকে অর্থাৎ সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শুধু লোক দেখানো পদক্ষেপ না দেখিয়ে, সত্যিকার অর্থে কার্যকর পদক্ষেপ সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। তা হলে আমরা সুশাসন সকল স্তরে কায়েম করতে সক্ষম হবো। সুশাসন, আইনের শাসন কায়েম করা গেলে সকল নাগরিক সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য নির্বিঘেœ সকলে করতে পারবে। উৎপাদন খরচও কমে আসবে।
২. বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বর্তমানে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। কিন্তু আমরা অতি অধিকমূল্যে জ্বালানি তেল ব্যবহার করছি। আমাদের সরকার বিপুল পরিমাণ লাভ হাতিয়ে নিচ্ছেন শুধু জ্বালানি তেল থেকে। অন্য দিকে জ্বালানি খাতের সমস্যা, সরবরাহ না থাকায় দেশের শিল্প বিকাশ প্রায় বন্ধ বলা চলে। বিগত ৮ বছর ধরে গ্যাস সংযোগ শিল্পখাতে বন্ধ থাকার কারণে নতুন নতুন শিল্প স্থাপন বন্ধ রয়েছে। শিল্পখাতে জ্বালানি সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। ২০২১ সালের মধ্যে ৩৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করছেন। গ্যাস সমস্যা সমাধানের জন্য গ্যাস উত্তোলন, আবিষ্কার ও সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন। বিদেশি কোম্পানিকে গ্যাস উত্তোলনের সুযোগ দিচ্ছেন। পেট্রো বাংলাকে শক্তিশালী করে গ্যাস আবিষ্কার ও উত্তোলনে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। গ্যাস ও বিদ্যুৎ আমদানির কিছু কিছু পদক্ষেপ সরকার নিয়েছেন। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা শুরু হয়েছে।
তবে শিল্পখাতে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে মায়ানমার থেকে পাইপ লাইনে গ্যাস আমাদানির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাইপ লাইনে গ্যাস করে শিল্পখাতে না দিলে নতুন নতুন শিল্প স্থাপন করা যাবে না। তাই বার্মাই একমাত্র দেশ, যেখান থেকে আমরা শিল্প স্থাপনে গ্যাস আমদানি করতে পারি। যেহেতু আমাদের গ্যাস প্রায় শেষ হয়ে আসছে। আমাদের গ্যাস আর কিছু দিন পর থাকবে না। তাই পাইপ লাইনে গ্যাস আমদানি ছাড়া বৃহৎ শিল্প স্থাপন করা যাবে না। উদ্যোগটা সরকারকে এক্ষণি গ্রহণ করতে হবে।
৩. আর্থিকখাতে তথা ব্যাঙ্ক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ বেশ দুর্বল। তবে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্তমানে আর্থিক খাত ব্যবস্থাপনা ঝুঁকি হিসাবে ৫০ শতাংশে আমাদের অবস্থান। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক পরিচালিত ব্যাঙ্কসমূহে অর্থ লুটের মহোৎসব চলেছে। এখনও চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের অর্থমন্ত্রণালয় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারকে আরও স্বচ্ছ সুবিবেচকের ভূমিকায় আসতে হবে।
৪. বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু ও তার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব বিরাজমান তার মোকাবেলা করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ব্যর্থতা আমাদের অর্থনীতিতে ৫০ শতাংশ বিরাজমান। ভারত থেকে আসা সকল নদীর মূলে ভারতের বাধা সৃষ্টি করায় পানির ব্যবহার বাংলাদেশের জন্য সংকোচিত। তাই আমাদের দেশের বিরাট অংশ প্রায় মরুভূমি হয়ে পড়েছে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের জলবায়ু প্রভাবে অর্থনীতিতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের ক্ষতিসমূহ কী তা ঠিক করা প্রয়োজন প্রথমে। তা আমরা এখনও করতে পারিনি। ক্ষতি মোকাবেলায় কত অর্থ প্রয়োজন? সেই অর্থ কোথায় থেকে, কীভাবে আসবে তার একটা পরিকল্পনা থাকা জরুরি।
৫. সক্ষমতা শুধু অর্থনীতিতে কেন, সকল পর্যায়ে আমাদের সক্ষমতার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আগামী ১০ বছরে আমাদের যে সকল ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে তা অত্যন্ত কঠিন, কঠোর ও অধিক ব্যয় সাপেক্ষ। আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে আগামী ১০ বছরের ঝুঁকিসমূহকে কঠোর বিবেচনায় আনতে হবে।
সুপেয় পানির সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা, ভূমিকম্পসহ ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহ, খাদ্য সংকট, সামাজিক অস্থিরতা প্রভৃতি আগামী ১০ বছরের বড় বড় ঝুঁকির মধ্যে অন্যতম। এই সকল অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের সক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধির কর্ম পরিকল্পনা এখনই গ্রহণ করা প্রয়োজন।
য় লেখক : সাবেক সহসভাপতি, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিটিএমইএ
ধয়যধরফবৎ@ুড়ঁঃযমৎড়ঁঢ়নফ.পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন