শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিপর্যস্ত দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন

উপকূলে সৃষ্ট লঘুচাপে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আসন্ন অমাবশ্যার ভরা কোটালে ভর করে সাগর উপকূলে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মধ্য শরতের আশ্বিনের বর্ষণে গতকাল সকাল থেকে দক্ষিনাঞ্চলের জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পরে। এ বৃষ্টিপাতে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকাতেই গতকাল সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবারহে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। তবে চলতি মাসে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান এখনো স্বাভাবিকের তুলনায় কম। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট সঞ্চালনশীল মেঘমালা ধেয়ে এসে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া অনেকটাই দুর্যোগপূর্ণ করে তোলে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল ও পটুয়াখালী সহ দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ৬০-৮০কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী বর্ষণের সম্ভবনার কথা জানিয়ে দক্ষিণের নদী বন্দরগুলোতে ২নম্বর সতর্ক সংকেত জারী করা হয়েছে। তবে এবর্ষনের কারনে গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল ও ভোলা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল, তা কিছুটা নিরসন হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালে ৪৩মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর ১২টার পরে মেঘ সরিয়ে কয়েক দফা সূর্য উকি মারলেও তা খুব একটা স্থায়ী হয়নি। সন্ধা পর্যন্তই গোটা দক্ষিনাঞ্চলে গুমোটা আবহাওয়া বিরাজ করছিল।
আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে চলতি মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ৩শ’ থেকে ৩৩৫মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথা বলা হলেও গতকাল পর্যন্ত মাসের প্রথম ১৭দিনে বৃষ্টি হয়েছে ১৪০মিলিমিটারেরও কম। তবে আসন্ন অমাবশ্যায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। গতকাল (রবিবার) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালেই গোটা দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে ছিল। সকাল সাড়ে ৭টার পরেই মাঝারী বর্ষণ শুরু হয়। সকাল ১০টা পর্যন্ত টানা বর্ষন অব্যাহত থাকলেও পরবর্তি আরো দুঘন্টা থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। দুপুরের পরে বৃষ্টিপাতের পরিমান হ্রাস পাবার সাথে তাপমাত্রার পারদও কিছুটা ওপরে উঠতে থাকে। তবে তা ছিল আগের দিনের তুলনায় যথেষ্ঠ স্বস্তিদায়ক। আশ্বিনের শরতে গত শনিবার বরিশালের তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ডিগী সেলসিয়াস। গতকাল তা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস হৃাস পেয়ে ৩০.২ডিগ্রীতে স্থির হয়। আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ঘন্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, বঙ্গোপাসাগর উপক‚লীয় এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। মওসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে উত্তর-পূর্বে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মওসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল ও খুলনা সহ উপক‚লীয় এলাকায় হালকা থেকে মাঝারী বর্ষণের সাথে কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। গত জুলাই মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের তুলনায় ৪০.২% বেশী বৃষ্টি হবার পরে আগষ্টে তা ছিল ৪০৫-এর স্থলে ৪০৮মিলিমিটার। অর্থাৎ দশমিক ৮% বেশী । তবে গতমাসে সারা দেশের সার্বিক বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ৩১.৫% বেশী। এসময় উত্তর বঙ্গের কোন স্থানে ৯৯% পর্যন্ত বেশী বৃষ্টি হয়েছে।
এবার দুদফার প্রবল বর্ষন এবং ভয়াবহ বণ্যায় উত্তরাঞ্চলে উঠতি আউশ সহ রোপা আমনের যথেষ্ঠ ক্ষতি হলেও দক্ষিণাঞ্চলে তার তেমন কোন রেশ পরেনি। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর রোপা আমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যপারে আশাবাদী। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে লক্ষমাত্রার প্রায় ৯৭ভাগ জমিতে আমন আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন