দুর্নীতি মামলায় যশোরের আদালত নড়াইলের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ আট জনপ্রতিনিধিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ ৯৬ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাইচন্দ্র সাহা এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিতদের মধ্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন আদালতে হাজির হননি। অন্য অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
দন্ডিত অন্যরা হলেন- নড়াইল পৌরসভার তৎকালীন কমিশনার শরফুল আলম লিটু, মুশফিকুর রহমান, আহম্মদ আলী খান, রফিকুল ইসলাম, তেলায়েত হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সচিব (প্রাক্তন প্রধান সহকারী) মতিয়ার রহমান।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে আসামি সোহরাব হোসেন বিশ্বাস (বর্তমানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) নড়াইল পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ওই সময় রূপগঞ্জ পশুহাট ইজারার দরপত্র আহŸান করা হয়। এইচএম সোহেল রানা পলাশ নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার ৫৫৫ টাকায় ওই হাটের ইজারা পান এবং তিনি দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক ড্রাফট (বিডি) হিসেবে ৩৩ হাজার টাকা জমা দেন। পরে তিনি দরপত্র মূল্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে ইজারা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। ওই আবেদনে অপর আসামি তৎকালীন পৌর কমিশনার (বর্তমানে মেয়র) জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ ছয়জন কমিশনার (কাউন্সিল) ও ভারপ্রাপ্ত সচিব সুপারিশ করেন এবং মেয়র হিসেবে সোহবার হোসেন তা মঞ্জুর করেন। এরপর ইজারাদাতাকে তার জমাকৃত টাকা ফেরত দেওয়া হয়। একইসঙ্গে নতুন করে ইজারার আহŸান না করে আসামিরা অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ওই হাট তিনবছর ধরে খাস দেখিয়ে এক লাখ ৯৬ হাজার টাকা আদায় করে তা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী বিশ্বাস ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট আটজনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর আরো জানান, দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার বিচারক প্রত্যেক আসামিকে ফৌজধারি কার্যবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় তিন বছর ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেন। এছাড়া আত্মসাৎ করা এক লাখ ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন