বাংলাদেশে প্রথম কোথায় মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল নির্দিষ্টভাবে তা’ জানা যায়নি। তবে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যাদির ভিত্তিতে বলতে পারি, বাংলাদেশে প্রথম মুদ্রণ যন্ত্রটি স্থাপিত হয়েছিল, ঢাকা থেকে বেশ দূরে আমাদের রংপুরে। এখানে উল্লেখ্য যে, পূর্ববঙ্গের প্রথম দুটি বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়েছিল ঢাকা থেকে নয়, রংপুর থেকে। স্বাভাবিকভাবে হওয়ার কথা ছিল “ঢাকা” থেকে। কারণ বাংলার দ্বিতীয় শহর ছিল তখন ঢাকা (কলকাতার পরেই)। এর সমাজতাত্তি¡ক কারণ কি বলতে পারবো না। শুধু এটুকু বলা যেতে পারে যে, পত্রিকা দু’টির উদ্যোক্তা ছিলেন অর্থশালী জমিদার এবং তাঁর ছিলেন বিদ্যোৎসাহী। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, দু’টি পত্রিকাই সৌখিন কোনো কারণে প্রকাশিত হয় নাই। সংবাদপত্র প্রকাশ ও প্রচারের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তাঁরা মুদ্রণ যন্ত্র ক্রয় করেছিলেন। না হলে দীর্ঘ দিন পত্রিকা দু’টি টিকে থাকতো না। পূর্ববঙ্গের একমাত্র পত্রিকা হিসেবে প্রথমে “রঙ্গুপুর বার্তাবহ” এবঙ তারপর “রঙ্গুপুর দিক প্রকাশ” কে অন্যান্যরাও যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। কলকাতার তৎকালীন প্রধান প্রধান কাগজগুলিতে উদ্ধৃতি করা হতো এ দুটি পত্রিকার সংবাদ।
১৮৪৭ সালের আগস্ট (ভাদ্র ১২৫৪) মাসে রংপুর থেকে প্রকাশিত হয়েছিল “রঙ্গপুর বার্তাবহ”। ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, রংপুর কুÐি পরগণার জমিদার কালীচন্দ্র রায়ের অর্থানুকূল্যে প্রকাশিত হয়েছিল পত্রিকাটি। তবে অন্যান্য সূত্র থেকে অনুমান করে নিতে পারি যে, কালীচন্দ্র রায় প্রাথমিকভাবে সাহায্য করলেও পত্রিকাটির মালিক ছিলেন এর সম্পাদক গুরুচরণ রায়। ১০ বছর একটানা ব্যবহৃত হয়েছিল মুদ্রণ যন্ত্রটি। তারপর মুদ্রণ যন্ত্রটির ভাগ্যে কি ঘটেছিল জানা যায়নি। অনেকের অনুমান, রংপুরের কাকীনার ভূগোলক বাটির জমিদার শম্ভুচরণ রায় চৌধুরী এটি কিনেছিলেন। কারণ, ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রকাশ করেছিলৈন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বাংলা সংবাদপত্র “রঙ্গপুর দিক প্রকাশ (১৮৬০ খ্রি:)। পত্রিকাটি প্রকাশের জন্য নতুন মুদ্রণ যন্ত্র হয়তো তিনি আর আমদানী করেননি। নিজ অঞ্চলের মুদ্রণ যন্ত্রটিই কিনে নিয়েছিলেন। “রঙ্গুপুর দিক প্রকাশ (১৮৬০ খ্রি:)” এর সম্পাদক ছিলেন মধুসূদন ভট্টাচার্য।
এখন পর্যন্ত যেসব প্রাপ্ত তথ্য ও প্রমাণাদি পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে বলতে পারি, ১৮৫৭ সালের আগে পূর্ববঙ্গে ৩টি মুদ্রণ যন্ত্রের খোঁজ পাওয়া যায়, একটি রংপুরে যার কথা আগেই উল্লেখ করেছি। বাকী দুটি ঢাকায়। ঢাকার একটি মুদ্রণ যন্ত্র ছিল মিশনারীদের, অন্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। পূর্ব বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ঊনবিংশ শতাব্দীর ষাট বা সত্তর দশকে মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপিত হতে থাকে। এ মুদ্রণ যন্ত্রগুলির কেনো ধারাবাহিক ইতিহাস-কোথাও দেখা হয় নাই। সরকারি রিপোর্ট বা গেজেটিয়ারে মাঝে মাঝে দু’একটি মুদ্রণ যন্ত্রের খোঁজ পাওয়া যায় মাত্র। ঢাকায় সরাসরি মুদ্রণ যন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৬ সালে।
১৮৫৭ খ্রিন্টাব্দে ঢাকায় স্থাপিত হয়েছিল দুটি মুদ্রণ যন্ত্র। কিন্তুু ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে পূর্ববঙ্গের একমাত্র রংপুর ছাড়া আর কোথাও মুদ্রণ যন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংবাদ জানা যায় না।
“রঙ্গপুর বার্তাবহ যন্ত্র” চালু হওয়ার সামান্য পরে ঢাকায় স্থাপিত হয়েছিল ছাপাখানা। সেটি ছিল ঢাকার প্রথম ছাপাখানাগুলোর অন্যতম। এটি এখন ঢাকা নগর যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। কালো রঙ্গের এই প্রাচীন মুদ্রণ যন্ত্রটিতে আভিজাত্য ও প্রাচীনত্ব দুই-ই যেনো মিশে রয়েছে।
১৯ শতকের প্রথম দু’তিন দশকে বাংলাদেশে আরও কয়েকটি মুদ্রণ যন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮২৫ সালের ২২ জানুয়ারি “সমাচার দর্পণ” পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায় যে তখন দেশিয় লোকের পরিচালনাধীন ১১টি ছাপাখানার উল্লেখ পাওয়া যায়।
ঢাকার প্রথম মুদ্রণযন্ত্র “বাঙ্গলাযন্ত্র” স্থাপিত ১৮৬০ সালে (১৩২৫ বাংলাসনে “ঢাকা প্রকাশ” পত্রিকায় প্রকাশিত)। ১২৬৭ বাংলা সনে ঢাকার সাহিত্য শীর্ষক এক প্রবন্ধ থেকে জানা যায় যে, বাঙ্গলা যন্ত্রের (১৮৬০ খ্রি:) স্বত্ত¡াধিকারী ছিলেন ব্রজসুন্দর মিত্র, দীনবন্ধু মৌলিক, ভগবান চন্দ্র বসু (আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর পিতা) ও কাশী কান্ত চট্টোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত সর্বপ্রথম সাময়িক পত্র হলো মনোরঞ্জিকা (১৮৬০ খ্রি:) এই মাসিক সাময়িক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার (১৮৩৪-১৯০৭ খ্রি:)। কবিতা কুসুমাবলী এবং নীলদর্পন ছাপা হয়েছিল ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বাবু বাজারে স্থাপিত এই “বাঙ্গলা যন্ত্র ” নামক ছাপাখানা থেকে।
পরবর্তীতে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে এর মধ্যে ঢাকায় আরো ৬টি মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল। পূর্ববঙ্গে সে সংখ্যা ছিল ৪টি রংপুর (১৮৪৭ খ্রি:), রাজশাহী (১৮৬৮ খ্রি:), যশোর (১৮৬৮ খ্রি:), গীরিশযন্ত্র (১৮৬৮ খ্রি:) রাজশাহী। সিপাহী বিদ্রোহের সময় লর্ড ক্যানিং মুদ্রাযন্ত্র বিষয়ক আইন প্রণয়ন করলে রঙ্গপুর বার্তাবহ প্রচার রহিত হয়।
“রঙ্গুপুর বার্তাবহ” এর সম্পাদক আদালতে এসে জানিয়েছিলেন তিনি আর পত্রিকা প্রকাশ করবেন না। রঙ্গপুর বার্তাবহ এর মুদ্রণ যন্ত্র থেকে সম্ভবত : ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হতে থাকে “রঙ্গুপুর দিক প্রকাশ” ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে সরকারী সূত্র অনুযায়ী জানা যায় ঐ জেলায় মাত্র একটি মুদ্রণ যন্ত্র আছে। সেখানে থেকে প্রকাশিত হয় “রঙ্গপুর দিক প্রকাশ” (১৮৬০ খ্রি:)
১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ‘রঙ্গপুর দিক প্রকাশের’ প্রচার সংখ্যা ছিল ২০০-এর মতো (উইলিয়াম হান্টারের গ্রন্থ থেকে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের স্ট্যাটিক্যাল আকাউন্স অব বেঙ্গল এর ৭ম খÐে রংপুর তথ্য)।
(ঞযবৎব রং নঁঃ ড়হব ঢ়ৎরহঃরহম ঢ়ৎবংং রহ ফরংঃৎরপঃ জধহমঢ়ঁৎ যিরপয ঢ়ৎরহঃং রহ ইবহমধষর. ঋৎড়স ঃযরং ঢ়ৎবংং রংংঁবং ঃযব ড়হষু হবংি ঢ়ধঢ়বৎ ঢ়ঁনষরংযবফ রহ ঃযব ফরংঃৎরপঃ, ঃযব জধহমঢ়ঁৎ “ উরশ ঢ়ৎধশধং” ধ ডববশষু লড়ঁৎহধষ রিঃয ধ পরৎপঁষধঃরড়হ বংঃসধঃবফ ধঃ ধনড়ঁঃ ২০০ পড়ঢ়রবং ঢ়হ ১৮৭১)
বৃহত্তর রংপুরে অবশ্য আরো ৪টি মুদ্রণ যন্ত্রের খোঁজ পাই। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে মুদ্রিত বই থেকে জানা যায়, ক্যান্টনমেন্টের পশ্চিম দিকে ৪/৫ মাইল দূরে হরিদেবপুরে ছিল “লোক রঞ্জন শাখা যন্ত্র”। বড়াই বাড়ি থেকে প্রকাশিত বইয়ে মুদ্রাকরের নাম পাওয়া গেছে, কিন্তু মুদ্রণ যন্ত্রের উল্লেখ নাই (সরকারি গেজেটের তথ্য অনুযায়ী)। কুড়িগ্রামে ছিল বিভাকর যন্ত্র (১৮৯৪ খ্রি:) এবং মাহিগঞ্জ পদ্মাবর্তী যন্ত্র (১৮৯৪ খ্রি:)। তবে অনুমান করে নিতে পারি “লোক রঞ্জন” যন্ত্র আশির দশকে, বাকী ৩টি নব্বই দশকে এবং শেষোক্তটি নব্বই দশকের শেষে স্থাপিত হয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, রংপুরে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্থাপিত মুদ্রণ যন্ত্রের সংখ্যা ৬টি। নবাবগঞ্জেও একটি মুদ্রণযন্ত্রের নাম পাই ‘সরস্বতী যন্ত্র’ (১৯০০ খ্রি.)।
১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে এন্ডুজের ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত হয় ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেডের “এ গ্রামার অবদি বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ”। বাংলা প্রদেশে বাংলা অক্ষরে (ইংরেজি অক্ষরেও) ছাপা প্রথম বই হলো এটি। মুদ্রাকর ছিলেন ইংরেজ চালর্স ইউলিকনস্্। বাংলা হরফ তৈরী করেছিলেন তিনি পঞ্চান্ন কর্মকারের সহায়তায়। এভাবেই হ্যালহেড, উইলকিনস্্ আর পঞ্চান্ন কর্মকার বাংলা সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অন্তর্গত হয়ে আছেন।
১৭৮০ খৃস্টাব্দে জেমস্ আগাস্টাক হিকি বাংলায় প্রথম সংবাদপত্র “বেঙ্গল গেজেট” ছেপেছিলেন।
বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে দেখঅ যায় ‘দিগদর্শনই’ বাংলায় প্রকাশিত সর্বপ্রথম মাসিক পত্রিকা। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ এপ্রিল এটি যশুয়া মার্শম্যানের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। ‘দিগদর্শনই’ হলো ছাপার অক্ষরে প্রথম বাংলা সাময়িকপ্রত। এটি কেরীর শ্রী রামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিহাসে ‘দিগদর্শন’ এক যুগান্তকারী ঘটনা। উইলিয়াম কেরী, জন ক্লাব মার্শম্যান, ফেলিকস্কেরী, জয়গোপাল তর্কালঙ্কার, তারিণী চরণ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ব্যক্তির আন্তরিক প্রচেষ্টায় ‘দিকদর্শন’... জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছায়।
ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের নাম ঢাকা নিউজ। ১৮৫৬ সালের ১৮ এপ্রিল এটি প্রকাশিত হয়। এই ইংরেজি সাপ্তাহিকটি বের হতো ঢাকা প্রেস থেকে। ঢাকায় প্রথম বাংলা সংবাদপত্র হলো “ঢাকা প্রকাশ”। ১৮৬১ সালের ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার এটি প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ১০০ বছর ধরে এই পত্রিকটি বেঁচে ছিল। এমন দীর্ঘায়ু পত্রিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত : দ্বিতীয়টি আর নেই। ঢাকা প্রকাশের প্রথম সম্পাদক ছিলেন কবি কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদার। পরবর্তীতে দীননাথ সেন, জগন্নাথ অগ্নিহোত্রী, গোবিন্দ্র প্রসাদ রায় এরাও এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
মুসলমান সম্পাদিত অবিভক্ত বাংলায় প্রথম সংবাদপত্র হচ্ছে শেখ আলীমূল্লাহ সম্পাদিত “সমাচার সভারাজ্যেন্দ্র”। এটি ১৮৩১ সালের ৭ মার্চ কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। “সমাচার সভারাজ্যেন্দ্র” ফারসী ও বাংলা ভাষাতেই প্রকাশিত হতো। এই সাপ্তাহিক পত্রিকাটি প্রকাশিত হতো ১৫৭ নং কলিঙ্গায়। আর্থিক দৈন্যতার কারণে ১৮৩৫ সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।
মুসলমান সম্পাদিত বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র হচ্ছে “পারিল বার্তাবহ”। এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন আনিছ উদ্দিন আহমদ। ১৮৭৪ সালে বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের পারিল গ্রাম থেকে এই পাক্ষিক পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।
পুরোপুরি দৈনিকের নিয়ে প্রকাশিত বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা ছিল “দৈনিক আজাদ”। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালের ৩১ অক্টোবর। প্রকাশক ছিলেন মাওলানা আকরাম খাঁ।
বাংলাদেশের এখন যতগুলো দৈনিক পত্রিকা রয়েছে তন্মদ্ধে সবচেয়ে পুরনো পত্রিকা হচ্ছে “দৈনিক সংবাদ” ও “দৈনিক ইত্তেফাক”। দৈনিক সংবাদ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৫১ সালের ১৫ মে। ১৯৪৯ সালের শেষের দিকে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী “ইত্তেফাক” বের করেন। তখন এটি ছিল সাপ্তাহিক। “ইত্তেফাক” দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৫৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর।
বাঙালীর জাতীয় জীবন ও বিকাশ ধারার ইতিহাসে ছাপাখানা ও সংবাদপত্র হচ্ছে প্রাণ শক্তির উৎসধারা। বাংলা ভাষা ও সংবাদপত্রের ইতিহাসে যে কয়েকজন বৈদেশিক মহান পুরুষ বাঙালী সমাজে প্রাত:স্মরণীয় ও পরম শ্রদ্ধেয় তাঁদের মধ্যে এক মহান পুরুষের নাম পাদরী উইলিয়াম কেরী, তার পরের জনই হলেন যশুয়া মার্সম্যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন