শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

নতুন ডিজাইনে লোহালিয়া সেতু

৪ বছর বন্ধ থাকার পর

পটুয়াখালী থেকে মো: জাকির হোসেন | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দীর্ঘ ৪ বছরের বেশী কাজ বন্ধ থাকার পর অবশেষে বহুল প্রতিক্ষীত লোহালিয়া নদীর উপর লোহালিয়া সেতুর নতুন ডিজাইনে কাজ শুরু হচ্ছে। জেলার ৩টি উপজেলার সাথে সড়াসড়ি সড়ক পথে যোগাযোগ সৃষ্ঠিতে ২০১১-১২ অর্থ বছরে ৪৬.৪৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪৬৪.৭৫ মিটার দীর্ঘ্য সেতু নির্মানের কাজ শুরু করা হলেও বিআইডব্লিউটির আপত্তিতে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার নৌপথে সেতুর উচ্চতা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করবে বলে সেতু নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
বিআইডব্লিউটি এর নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স অনুযায়ী জুন ২০১৩ এ সেতু নির্মান সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। সেতুর ৫৪ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার মধ্যে সরকারের গৃহীত মেগা প্রকল্প পায়রা বন্দরের পরিকল্পনা হাতে নেয়ায় পায়রা বন্দরের মালবাহী লাইটার জাহাজ চলাচলের পথ হিসেবে লোহালীয়া নদীর উপর নির্মানাধীন সেতুর উচ্চতা বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে তাদের আপত্তির কথা জানান। বন্ধ হয়ে যায় নির্মান কাজ ২০১৪ সালে।
গঠিত হয় উভয় মন্ত্রনালয়ের টিম। আন্ত:মন্ত্রনালয়ের সভায় বিআইডব্লিউটি এর পরিচালক জানান, পায়রা বন্দরের স্বার্থে নির্মানাধীন লোহালিয়া ব্রিজের বর্তমান ভার্টিকাল ক্লিয়ারেন্স নদীর মূল চ্যানেলে ৯.৪৭ মিটারের পরিবর্তে ১৮.৩০ মিটার এবং হরাইজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ৩৫ মিটার এর পরিবর্তে ৭৬.২০ মিটার রেখে সেতু নির্মান করতে হবে। পরবর্তিতে উভয় মন্ত্রনালয় বিআইডব্লিউটির কাংখিত চাহিদা পূরন করতে ব্রিজটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে নতুনভাবে স্টাডি ও ডিজাইন করে ব্রিজ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে চলমান সেতুর কাজ বন্ধ রাখা হয়।
পরবর্তিতে উভয় মন্ত্রনালয়ের যৌথ সভায় নির্মানাধীন সেতুর ডিজাইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। নৌপথ চালু করতে সেতুর ডিজাইন পরিবর্তন করে ৪৬৪.৭৫ পরিবর্তে দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ৫৪৪ মিটার করা হয়। ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ এলজিইডি বরাবরে পরিবর্তিত ডিজাইনের ৫৪৪ মিটার দীর্ঘ্য সেতুর ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স স্ট্যান্ডর্ড হাই-ওয়াটার লেভেল হতে ১৩.৫০ মিটার এবং হরাইজেন্টাল কিরয়ারেন্স ৭০ মিটার রেখে সেতু নির্মানে তাদের কোন আপত্তি নেই বলে জানান। পরবির্ততে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ১৮ সালের শেষে ১৩.৫ মিটার ভার্র্টিকাল ক্লিয়ারেন্স এবং ১০৭ মিটার হরাইজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স রেখে নতুন ডিজাইনের সেতু নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন ডিজাইনের সেতুর মাঝখানের ১০৭ .২৫ মিটার অংশে স্টীল ট্রাস দ্বারা নির্মীত হবে। বর্তমানে মূল সেতু, ট্রাস অংশ, জমি অধিগ্রহন, এবং এপ্রোচ সড়কসহ আনুমানিক ১০২ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যায় ধরা হয়েছে বলে একটি সুত্র জানা গেছে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ জামালউদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে লোহালিয়া সেতুর অসমাপ্ত ৫৭৬.২৫ মিটার অংশের টেন্ডার পক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে দরপত্র অনুমোদনের জন্য প্রধান প্রকৌশল বরাবরে পাঠানো হয়েছে।
লোহালিয়া সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. নুরুল হুদা জানান, ২০১৪ সালে বিআইডবিøউটি এর আপত্তির পর পূর্বের ঠিকাদারের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় ২০১৫ সালে কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। দুই মন্ত্রনালয়ের একাধিক সার্ভে টিমের কাজ ও সভার পর নতুন ডিজাইন অুমোদন হয়। পরবর্তিতে ২০১৮ সালের সেপ্টম্বর মাসে একনেকের অনুমোদনর পরে নভেম্বর থেকে এলজিইডি টেন্ডার পক্রিয়াসহ অন্যান কাজ নতুন ডিজাইন অনুযায়ী শুরু করে। নতুন ডিজাইনের ডাবল লেন স্টীল ট্রাস স্থাপনের জন্য আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। যার ওপেনিং ছিল ৩১ জানুয়ারী বর্তমানে টেন্ডার কার্যক্রম মূল্যায়ন চলছে। তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষে ২০২০ সালের মধ্যেই পটুয়াখালীর লোহালিয়া নদীর উপর নতুন ডিজাইনের সেতু উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন