জাল সনদে ১৭ বছর যাবত সরকারি চাকুরী করছেন সাত কর্মকর্তা। তারা কোচ হিসেবে কর্মরত আছেন দেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)তে। এইসব কর্মকর্তারা চাকুরীতে যোগদানের সময় জাল সনদ খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এদের একজন আবু সুফিয়ান। যিনি এখনও চাকুরীতে বহাল। কাজী আকরাম আলী ১৬ বছর ধরে চাকুরী করে গত বছর ইস্তফা দেন। এছাড়াও একজন ৬ বছর এবং ৫ বছর যাবত জাল সনদ খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে চাকুরী করছেন। এইসব চিত্র উঠে এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে। এইসব অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ইনকিলাবকে বলেন, ২০১৬ সালে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে কমিশন। অনুসন্ধানে তাদের জাল সনদের চিত্র উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক। তিনি আরো বলেন, কয়েকজন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ইস্তফা দিয়েছে। তারা সাভারে জিরানীকে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) কোচ হতে জাল সনদ ব্যবহার করেছে।
দুদক সুত্রে জানা যায়, অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে।অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার নিমিত্তে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিএসসি পাশের জাল সনদপত্র তৈরিপূর্বক উহা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সাত জন হলেন- প্রধান শ্যূটিং কোচ সৈয়দ আসবাব আলী, আরচারির মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ফুটবলের মোহাম্মদ মাকসুদুল আমিন ওরফে রানা, জুডোর মো. আবু বকর সিদ্দিক, জিমন্যাস্টিকসের কাজী আকরাম আলী এবং বক্সিংয়ের মো. আবু সুফিয়ান ও মো. জহির উদ্দিন।
এইসব ব্যক্তিরা কোচ হিসেবে যোগদানের সময় বিকেএসপিতে সর্বোচ্চ যে সনদ দাখিল করেছেন দুদকের অনুসন্ধানে সেগুলো জাল হিসেবে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করেন। তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) কোচ (ব´িং) আবু সুফিয়ান। তিনি বিএ পাসের জাল সনদ ব্যবহার করে ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই চাকরিতে যোগ দেন। তিনি এখনও চাকরিতে বহাল আছেন। তিনি প্রায় ১৮ বছর যাবত ভূয়া সনদ ব্যবহার করে চাকুরী করছেন।
এছাড়াও কাজী আকরাম আলী কোচ (জিমন্যাস্টিকস) তার বিরুদ্ধে অভিযোগ,জাল বিএসএস সনদ ব্যবহার করে ১৯৯৯ সালের ২ ফেব্রæয়ারি যোগ দন। ১৬ বছর চাকুরী করে এরপর দুদকের অনুসন্ধানের সময় গত বছরের ১২ জুন চাকরি থেকে ইস্তফা নেন।
এর প্রধান শ্যূটিং কোচ সৈয়দ আসবাব আলী। জালিয়াতির মাধ্যমে বিএসসি পাসের জাল সনদ খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে কোচ পদে ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যোগ দেন। দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তিনি ইস্তফা নেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বিএসএস জাল সনদ দেখিয়ে ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি বিকেএসপির আরচারি কোচ হিসেবে যোগ দিয়ে ওই বছরের ১১ মে ইস্তফা নেন। এছাড়াও ফুটবল কোচ মোহাম্মদ মাকসুদুল আমিন ওরফে রানা বিএ (সন্মন) পাসের জাল সনদ দিয়ে ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি যোগ দেন। তিনি এখনও চাকরিতে বহাল রয়েছেন। আবু বকর ছিদ্দিকও বিএ পাসের জাল সনদ দেখিয়ে ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চাকরিতে যোগ দিয়ে এখনও বহাল আছেন। জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিএসসি জাল সনদ ব্যবহার করে ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি যোগ দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইস্তফা নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন