শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

বঙ্গবন্ধুতে শেষ মুহূর্তের অনুশীলনে রোমানরা

জাহেদ খোকন : | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের ২০তম আসরকে সামনে রেখে টুর্নামেন্ট ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ শেষ মুহূর্তের অনুশীলন সাড়বেন লাল-সবুজের তীরন্দাজরা। এর আগে সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃহৎ এ আসরের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। এসময় বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের সভাপতি লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম (অব.) ও সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপল উপস্থিত থাকবেন। টুর্নামেন্টের উদ্বোধন আজ হলেও তীর-ধনুকের লড়াই শুরু হবে আগামীকাল থেকে। চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ৩৫টি দেশের অংশগ্রহনের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঢাকায় আসছে না উজবেকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। অংশ নিতে নাম নিবন্ধন করলেও উদ্বোধনের আগেরদিন খেলতে অপারগতা জানায় তারা।
আসরকে সামনে রেখে প্র্যাকটিস ভেন্যু মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে গতকাল অনুশীলনে বেশ মনযোগি ছিলেন বাংলাদেশের আরচ্যাররা। তবে টুর্নামেন্ট ভেন্যুতে অনুশীলন করতে না পারার আফসোস ঠিকই রয়ে গেছে তাদের। যদিও কিছুটা হলেও সেই আফসোস মিটবে দেশসেরা আরচ্যার রোমান সানা, ইব্রাহিম শেখ রেজওয়ান, তামিমুল ইসলাম ও ইতি খাতুনদের। মূল লড়াইয়ে মাঠে নামার একদিন আগে
বিদেশী দলগুলোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুশীলন করার সুযোগ পাবেন তারও। টঙ্গীতে ফেডারেশনের নিজস্ব মাঠে স্বাগতিক আরচ্যাররা গত কয়েকমাস বেশ ভালোভাবে অনুশীলন করলেও এতে সন্তুষ্ট নন দেশসেরা আরচ্যার রোমান সানা। তিনি বলেন,‘টঙ্গীতে ভালোভাবে অনুশীলন চালিয়ে গেলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অন্তত দশ দিন অনুশীলন করতে পারলে আরেকটু ভালো হতো।’
এ প্রসঙ্গে কোচ জিয়াউল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের তুলনায় মওলানা ভাসানী স্টেডিয়াম ছোট। এখানে বাতাস চারিদিকে ঘুরে। ফলে তীর লক্ষ্যভেদ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই খোলামেলা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুশীলনটা বড় প্রয়োজন ছিল আমাদের আরচ্যারদের জন্য।’
তারপরও কাল প্র্যাকটিস ভেন্যুতে তীর ধনুক নিয়ে বেশ মনোযোগি দেখা গেল ইব্রাহিম শেখ রেজওয়ানকে। লক্ষ্যভেদ করতে বার বার চেষ্টা করছেন। দু’য়েকবার এদিক সেদিক হলেও অধিকাংশ তীর লক্ষভেদ করছে। তার এমন সাফল্যে বেশ উৎফুল্ল বাংলাদেশ কোচ নিশিথ দাস। তিনি বলেন, ‘তরুন ইব্রাহিমকে নিয়ে আমি আশাবাদি। রিকার্ভ ইভেন্টে খুব ভালো করতে পারে সে।’ দলের অন্যরা আগে খেললেও আজ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অভিষেক হচ্ছে ইব্রাহিম এবং ইতি খাতুনের। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই দু’আরচারকে নিয়েই বেশ আশাবাদি নিশিথ দাস।
হতাশাজনক পারফরম্যান্সই ডুবিয়েছে বাংলাদেশের সিনিয়র আরচ্যার সজীব শেখ ও শ্যামলী রায়কে। তারা নেই এই টুর্নামেন্টে। গেল আট মাসের অনুশীলনে ধীরে ধীরে তাদের স্কোর কমতে থাকায় বাদ পড়েছেন। তবে যাদেরকে নেয়া হয়েছে, দীর্ঘদিনের স্কোর যোগ করেই নেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নিশিথ দাসের কথা, ‘প্রত্যেক সপ্তাহে আমরা তিনটি করে টেস্ট করেছিলাম। শেষ দিকে এসে শ্যামলী ও সজীব তাদের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেননি। তাই সিনিয়র হয়েও বাদ পড়েছেন তারা।’ তবে জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইসলামিক সলিডারিটি আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে সোনাজয়ী হীরামনি অসুস্থতার জন্যই দলে আসতে পারেননি। একমাস ধরে চিগুন গুনিয়ায় ভুগছেন তিনি।
এর আগে এশিয়ান গ্রাঁ প্রিঁ আরচ্যারি ও ইসলামি সলিডারিটি আরচ্যারির আয়োজন করলেও এই প্রথম এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মত বৃহৎ টুর্নামেন্টের আয়োজন করছে বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশন। টুর্নামেন্টে শুধু এশিয়ারই নন, বিশ্বসেরা আরচ্যাররাও খেলবেন। রিকার্ভ একক ও দ্বৈত, কম্পাউন্ড একক, দ্বৈত ছাড়াও রিকার্ভ এবং কম্পাউন্ডের মিশ্র দ্বৈতে বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলা আরচ্যাররা অংশ নিবেন। ঘরের মাঠে এশিয়ান আরচ্যারির বৃহৎ এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য সেরা দশে থাকা। আশানুরুপ ফল এনে দিতে পারেন রোমান সানা, তামিমুল ইসলাম এবং ইব্রাহিম। তাছাড়া রিকার্ভ পুরুষ এবং কম্পাউন্ড পুরুষ ও মহিলা দলগতেও স্বাগতিকদের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কোচ নিশিথ দাস। তিনি আরও বলেন, ‘দলগত ইভেন্টে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। তাছাড়া রোমান সানাকে নিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন থাকছে। আর আমাদের তরুন আরচ্যাররা কিছুদিন ধরে খুবই ভালো করছে। তারা যোগ্যতা অর্জন করেই দলে জায়গা পেয়েছে। তাছাড়া এত বড় টুর্নামেন্টে সুযোগ পেয়ে ওরা বেশ খুশী। আশাকরি আমার প্রত্যাশানুযায়ী টুর্নামেন্টে খেলবে তারাও।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন