শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নেপালে বিমান দুর্ঘটনা সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে

গণভবনে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের সকল ধরণের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের এক জরুরী যৌথসভার সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি এসময় দলীয় সংসদ সদস্য ও দলের নেতাকর্মীদেরও বিমান দূর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের পাশে দাড়ানোর নির্দেশ দেন।
বিমান দূর্ঘটনার সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে চারদিনের সফরের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিমান দূর্ঘটনার পরই আমি সিঙ্গাপুর সফর বাতিল করে দেশে ফিরে আসি। আমার মনে হয়েছিল, এই সময় আমার দেশে থাকা প্রয়োজন। কারণ বহু বছর আমাদের দেশে এরকম ঘটনা ঘটেনি। বিমান দূর্ঘটনার ঘটনা ঘটেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বুধবার দেশে ফিরে এসে বৃহস্পতিবার সকালে মিটিং করেছি। সেখানে তিন বাহিনী প্রধান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই ছিলেন। ১ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছি। আগামী শুক্রবার সারাদেশের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনাসভা করা হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, নেপালে একটি মেডিকেল টিম এবং ডিএনএ সংগ্রহের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানো হচ্ছে। কারণ, আগুনে পোড়া কিছু লাশ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা কঠিন। তাছাড়া আমরা নেপালে খুব বেশি লোক পাঠাতে পারবো না। কারণ তাদের ওপর চাপ পড়ে যাবে। তবে যা যা লাগবে তার সহায়তা আমরা দেবো।
বিমান দূর্ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিহত হয়েছে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার আমাদের দলের এমপি এবং নেতাদের নিদের্শ দিয়েছি। তাদের কী প্রয়োজন, কী সহায়তা করা যেতে পারে সে ব্যাপারে দেখা করে খোঁজ নিতে বলেছি। তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের কমকর্তা, আমাদের দলের সিআরআই এর ৫ নম্বর অফিসে কাজ করতো একটা ছেলে তার স্ত্রী এবং বাচ্চা, সবাই মারা গেছে। আহতদের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আহতদের অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকের অবস্থা এমন যে ওখান থেকে নিয়ে আসারও উপায় নেই। ইতোমধ্যে আমাদের বিমানমন্ত্রী নেপালে গেছে। নেপালের প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন। করণীয় বিষয়ে আলোচনা করছেন তিনি।
নেপাল এয়ারপোর্টকে অত্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এয়ারপোর্ট মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওটা খুবই দূর্ঘটনাপ্রবণ এয়ারপোর্ট। এর আগে ৭০ বার দূর্ঘটনা ঘটেছে ওখানে। তিনি বলেন, নেপালের কিছু শিক্ষার্থী ছিল ওই বিমানে। তারা আমাদের দেশে মেডিকেল পড়ে ডাক্তার হতে এসেছিল। এমবিবিএস পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। আজকে তারাও নেই। ফুল না ফুটতেই ঝরে গেলো।
গণভবনের ব্যায়কোয়েট হলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে এইচটি ইমাম, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ওবায়দুল কাদের, রাশিদুল আলম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমদু চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, দেলোয়ার হোসোন, এসএম কামাল হোসেন, ওমর ফারুক চৌধুরী, মোল্লা আবু কাওছার, অপু উকিল, সাইফুর রহমান সোহাগ, এসএম জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য বৈঠকের মতো এই বৈঠকে কোনো আড়ম্বর ছিল না। চেয়ার টেবিল ছাড়াই কয়েকটি সোফা এবং প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে বৈঠক করেন নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের বসে ছিলেন অন্যান্য নেতাদের সমান্তরাল ছোট্ট একটি টেবিলসদৃশ মঞ্চে। রাত সাড়ে আটটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছিল।
জরুরী এ বৈঠকের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমি গতকাল এয়ারপোর্টে নামার পরপরই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদককে বলি, ঢাকায় যারা আছে তাদের সকলকে নিয়ে আমি বসতে চাই। আমরা এখন শোক প্রস্তাব নেবো। উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে কী করণীয় এ ব্যাপারে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবো। সকলকে নিরাপদ জীবন কামনা করে প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন