কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চলমান বোরো মৌসুমে কৃষি জমিতে সেচ দিতে নির্ধারিত ফি’র বেশি আদায় করেও নিয়মিত পানি দিচ্ছে না পাম্প মালিকরা। ফলে অনেক জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। গত শুক্রবার পৌর এলাকার দক্ষিণ ফালগুনকরা গ্রামের কৃষি জমি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া সেচ পাম্পের পানি বিতরনে নিয়োজিত লাইনম্যান আবদুস সামাদের সাথে কৃষক জাহিদ মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগমকে ঝগড়া করতে দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে সেচ পাম্প মালিকরা নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের জমিতে সময়মতো পানি দিলেও অন্যান্য কৃষকদের জমিতে দেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ২০১৭-১৮ মৌসুমের জন্য সরকারি বা বেসরকারি ব্যক্তি মালিকানাধীন পরিচালিত সেচ যন্ত্রের দ্বারা সেচ চার্জ আদায়ের হার নির্ধারণ করে দেয় উপজেলা সেচ কমিটি। কিন্তু এই নীতির তোয়াক্কা করছে অনেকে। উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন এবং সদস্য সচিব বিএডিসি কুমিল্লা জোনের সহকারী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন লস্কর স্বাক্ষরিত নির্ধারিত হার হলো; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে প্রতি কানি জমিতে সেচ দিতে ডিজেল চালিত গভীর নলকূপের চার্জ দুই হাজার টাকা, অগভীর নলকূপের চার্জ দুই হাজার চল্লিশ টাকা এবং এলএলপির চার্জ এক হাজার সাতশত বিশ টাকা। একই পাশে প্রতি কানিতে সেচ দিতে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের চার্জ এক হাজার আটশত আশি টাকা, অগভীর নলকূপের চার্জ এক হাজার নয়শত বিশ টাকা ও এলএলপির চার্জ এক হাজার ছয়শত চল্লিশ টাকা। আবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে প্রতি কানি জমিতে সেচ দিতে ডিজেল চালিত গভীর নলকূপের চার্জ এক হাজার নয়শত বিশ টাকা, অগভীর নলকূপের চার্জ দুই হাজার টাকা ও এলএলপির চার্জ এক হাজার ছয়শত চল্লিশ টাকা। ওই পাশে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের এক হাজার আটশত চল্লিশ টাকা, অগভীর নলকূপের এক হাজার নয়শত বিশ টাকা ও এলএলপি এক হাজার পাঁচশত ষাট টাকা। কিন্তু সেচ কমিটির দেয়া আদেশ মানছে না সেচ পাম্প মালিকরা। উপজেলা সেচ কমিটির নির্ধারিত ফি’র তোয়াক্কা না করেই এক হাজার টাকা করে বেশি আদায় করছে সেচ পাম্প মালিকরা। তারপরও সময়মতো পানি না দেয়ায় দক্ষিণ ফালগুনকরা মৌজায় দুই শতাধিক শতক জমির বোরো আবাদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন- কৃষক রাজু পাল, নুর আলম, মীর হোসেন, আজাদ, কৃষাণী স্বপ্না ও আমেনা বেগমসহ আরও অনেকে। দক্ষিণ ফালগুনকরা মৌজায় অবস্থিত সেচ পাম্প মালিক বদরুজ্জামান বলেন, কৃষকদের অভিযোগ সঠিক নয়। ধাপে ধাপে সবার জমিতেই পানি দেয়া হচ্ছে।
বিএডিসি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উপ-সহকারী অফিসার মোঃ হাসনাত বলেন, সেচ পাম্প মালিকদের বাড়তি টাকা আদায়ের বিষয়ে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম জানান, বাড়তি টাকা আদায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন