বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত কুমিল্লা

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত রাখতে কুমিল্লার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাস্কর্য, স্মৃতিসৌধ। পাশাপাশি রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের গণকবর ও বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা ও সাহসী মানুষেরা বীরোচিত ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে কুমিল্লার অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। তাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কুমিল্লায় নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মৃতিময় ভাস্কর্য, স্মৃতিফলক, গণকবর ও বধ্যভূমি। স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া সেনাদের স্মরণে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের মুল ফটকের পাশে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ ‘যাদের রক্তে মুক্ত স্বদেশ’। ১৯৭৪ সালের ১১ মার্চ জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ক্যান্টনমেন্টের ওই স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করেন। স্মৃতিসৌধের নকশা ও মডেল করেছিলেন স্থপতি আবদুর রশিদ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের অনেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন। সেইসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা স্মরণ করে কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে রানীর দীঘির গা ঘেঁষে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ওল্ড ভিক্টোরিয়ান্স নির্মাণ করেছে স্বাধীনতা সৌধ। এতে বেলজিয়াম পাথরের একটি ফলকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া কলেজের ২৮জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীর নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। ১৯৯৫ সালের ২৬ মার্চ এ স্বাধীনতা সৌধের ফলক উন্মোচন করেন শহীদ যতীন্দ্র কুমার ভদ্রের পত্নী। বিনা পারিশ্রমিকে এটির ডিজাইন ও মডেল তৈরি করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি অম্লান রাখার জন্য ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কের কমিল্লা শহরের প্রবেশমুখে আলেখারচরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘যুদ্ধজয়‘। মহান মুক্তিযুদ্ধের সাহসী যোদ্ধাদের চিত্রিত করা হয়েছে এ ভাস্কর্যে। অস্ত্র হাতে এক নারীসহ চার মুক্তিযোদ্ধার দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ’যুদ্ধজয়’ ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ভাস্কর্য শিল্পী এজাজ-এ-কবীর এটি তৈরি করেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশ পথের সামনেই কুমিল্লা অঞ্চলের চার শতাধিক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম সম্বলিত বিশাল স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারা নামক স্থানে রয়েছে ৭২ জন মুক্তিযোদ্ধার গণকবর। লাকসাম রেলওয়ে জংশনের পূর্বদিকে এবং দেবিদ্বার, কোটবাড়ি রূপবানমুড়া, ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে ও সদরের রসুলপুরে রয়েছে বধ্যভূমি। এ ছাড়াও কুমিল্লা শহরের রামমালা সড়কে সার্ভে ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরে, নাঙ্গলকোটের মৌকারা, হাসানপুর পুকুরপাড়ে, হোমনা সদরের কলেজ প্রাঙ্গণে, কুমিল্লা সদরের কৃষ্ণপুর ধনঞ্জয়ে, বরুড়া পয়েলগাছা নারায়ণপুরে, সদর দক্ষিণের বাগমাড়া দক্ষিণ বাজারে, চান্দিনার হাড়ংয়ে রয়েছে গণকবর। পাকবাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের সাক্ষ্য বহন করছে কুমিল্লার এসব গণকবর ও বধ্যভূমি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন