গাবতলী (বগুড়া) থেকে আল আমিন মন্ডল : বগুড়ার গাবতলীতে শিমুলগাছ ও ফুলের অপরুপ সৌন্দয্যে, সৌরভ ও শোভা এখন আর চোখেই পড়ে না। পাখির কোলাহল ও ফুলের রূপে জেন মন জুড়িয়ে যায়। কালের বিবর্তনে সেই চিরচেনা শিমুলগাছ-ফুল এখন বিলুপ্তির পথে।
জানা যায়, বসন্তকালে শিমুল-পলাশগাছ শুধু অপরূপ শোভা বৃদ্ধি করে না সৌন্দর্যের পাশাপাশি গাছের মালিকও আর্থিকভাবে লাভবান হতো। শিমুলগাছের তুলা আর সেই তুলা দিয়ে লেপ-তোশক’সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় শিমুলগাছ। এ ছাড়াও শিমুলগাছের শিকড় ও গাছের ছাল দিয়ে মানবদেহের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ ভেষজ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। সে ওষুধে মানবদেহের অনেক উপকার হয়। এ ছাড়াও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এ গাছে কাঁটা থাকায় ফুল থেকে ফল (কলা) কেউ চুরি করতে পারে না। শিমুলগাছ দিনদিন বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়ার ফলে তুলা, গাছের কাঠ ও ওষুধ তৈরিতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অল্প সংখ্যক শিমুলগাছ চোখে পড়লেও তুলার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। এ গাছের এত গুণ থাকার পরও গাছটি সংরক্ষণ ও রক্ষায় কোন উদ্যোগ নেই। কাগইলের আমলীচুকাই গ্রামের শিমুলগাছ মালিক আব্দুল জব্বার ও পাচপাইকা গ্রামের খাদের আলী জানান, আমরা শিমুলগাছ থেকে যে পরিমাণ তুলা পাই, সে তুলা পরিবারের কাজে ব্যবহারের পরেও বাকি তুলা বাজারে বিক্রি করে প্রতি বছর বেশ লাভবান হতে পেরেছি। প্রতিদিন গাছের লাল শিমুল ফুল ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে গাছতলায় যায়। পাখি ও ফুল দেখে মনটা ভালো থাকে। গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, শিমুলগাছ একটি গুরুত্বপূর্ণ গাছ। গাছটি মানুষের জন্য খুব উপকারি। ব্যক্তি পর্যায়ে শিমুলগাছ সংরক্ষণে কৃষকদের মাঝে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ বিসিএস (কৃষি) জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দাবিদার এই শিমুলগাছ ফুল। রাস্তায় বা খোলা জায়গায় শিমুলগাছ রোপণে কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এমনকি শিমুলগাছকে ব্যক্তি, সংগঠন, সরকারি দফতরের বনবিভাগ ও বেসরকারি পর্যায়ে সংরক্ষণ করতে জোর দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ সচেতন মহল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন