শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

সিদ্ধান্তহীনতায় চট্টগ্রাম বন্দরের কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি : পিছিয়ে পড়ছে অর্থনীতি

চট্টগ্রামে গোলটেবিল বৈঠকে সুধীবৃন্দ

| প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সরকারি মহলের অমনোযোগ ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। এতে করে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে। গতকাল (শনিবার) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ‘সংকটে বন্দর উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্ট সুধীবৃন্দ এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
এতে আলোচনাকালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের যে বন্দর দিয়ে ৯২ শতাংশ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সম্পন্ন হয় সেই চট্টগ্রাম বন্দরে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। এজন্য রাজনৈতিক অমনোযোগকে দায়ী করে তিনি বলেন, দেশ যখন স্বাধীন হচ্ছে তখনও ঢাকা-চট্টগ্রামের অবস্থান ছিল এক এবং দুই। এখনও তাই আছে। কিন্তু এক এবং দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে বহুগুণ। তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়লেও এর সুফল মিলছে না। বিনিয়োগ বলতে টাকা এবং কংক্রিটকে বোঝানো হচ্ছে। এখানে সবার নজর। ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন করা হয়েছে। কিন্তু যাত্রার সময় কমেনি, যানজটও কমেনি। আরও বেড়েছে।
ড. হোসেন জিল্লুর বলেন, একটি উন্নত বন্দরের আলোচনা করলেই হবে না। একই সাথে নগরীর আলোচনাও করতে হবে। বন্দরের সঙ্গে সঙ্গে যদি নগরী গড়ে না ওঠে তবে এর সুফল পাওয়া যাবে না। কারণ কোন একটি সংস্থার প্রধান কার্যালয় এখানে হলে শীর্ষ কর্মকর্তাদের বসবাসের সব সুযোগ-সুবিধা এখানে থাকতে হবে। না হলে এখানে তারা আসবে না। সে কারণেই সিঙ্গাপুর কেবল বিশ্বের সেরা বন্দর নয়, সেরা নগরীও। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অমনোযোগের একটা বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেবল চট্টগ্রাম বন্দর নয়, চট্টগ্রাম সিটিও পিছিয়ে পড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর বনাম পায়রা বন্দর এভাবে দেখার কোন অবকাশ নেই। চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। দেশে আরও অনেক বন্দর হতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। কারণ নতুন বন্দর হতে সময় লাগবে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ও একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন। প্রাকৃতিভাবে এর অবস্থান চট্টগ্রামে হলেও সুফল পাচ্ছে সারাদেশের মানুষ। তাই বন্দরের অগ্রগতি মানে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতি। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে রাজনৈতিক প্রতিশ্রæতি দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতি নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবেই নিতে হয়।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সড়ক, সেতু ও রেল খাতের উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিলেও বন্দরের দিকে নজর ছিল না। হয়তো সরকারের প্রাধিকার থাকতে পারে। কিন্তু এখন বন্দরের উন্নয়নে প্রাধিকার দেয়া উচিত।
এতে আরও আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী মিজান, বিজিএমইএ পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ মোঃ বখতিয়ার, চট্টগ্রাম সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আহসানুল হক চৌধুরী, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোঃ জাফর আলম, চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নাহিদা ফরিদী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ মামুন আবদ্ল্লুা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন