রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

অব্যাহত দরপতনে শেয়ারবাজার

| প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : শেয়ারবাজারের চলমান সংকট উত্তরণে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দেয়া প্রস্তাবগুলো অর্থ মন্ত্রণালয় বিশেষ বিবেচনায় মেনে নিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ)। এরপরও দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন থামছে না। প্রতিদিনই লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। ফলে কমছে মূল্য সূচকও। এদিকে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ নিয়ে তালবাহানার কারণেই এই ধ্বস মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের মতে, চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য সুফল বয়ে আনবে। ভারতীয় শেয়ারবাজার এমনিতেই ভঙ্গুর। অপরদিকে চীনা শেয়ারবাজারের মান ভারতের চেয়ে অনেক উপরে। তাই চীনকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করার দাবি করেন তারা। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে এদিন দরপতন হয়েছে আগের দিনের তুলনায় বেশি।
এর আগে টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হলে গত বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দু’টির নেতারা বলেন, শেয়ারবাজারের চলমান সংকট উত্তরণে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা যে প্রস্তাব দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয় তা বিশেষ বিবেচনায় মেনে নিয়েছে। সেই সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে।
ওই সংবাদ প্রচার হওয়ার পরেই পতন থেকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরে উভয় বাজারের মূল্য সূচক। ফলে টানা তিন কার্যদিবস দরপতনের পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিল। তবে এক কার্যদিবসের ব্যবধানে রোববার আবার দরপতন হয়। সেই দরপতনের ধারা গতকালও অব্যাহত থাকে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে বিএমবিএ এবং ডিবিএ’র পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেয়া হলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা বিশ্বাস করতে পারছেন না। যতক্ষণ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না আসছে, ততক্ষণ এক ধরনের আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। তবে বর্তমানে যে দরপতন দেখা দিয়েছে এর কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ নেই।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া মাত্র ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮২টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৬ পয়েন্টে অবস্থা করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০৩ পয়েন্টে।
বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণ ফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের ৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- সেলভো কেমিক্যাল, আমরা নেটওয়ার্ক, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, মুন্নু সিরামিক, বিবিএস কেবলস, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ১৩৭ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯০টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন