সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতন হয়েছে। দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি কমেছে সবকটি ম‚ল্যসূচক। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া সাত কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। ঈদের আগেও পতনের মধ্যে ছিল শেয়ারবাজার। ঈদের আগে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিনদিনই পতন দিয়ে পার হয়। সবমিলিয়ে শেষ ১২ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ দিনই পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার। ঈদের আগে থেকেই শেয়ারবাজার দরপতনের মধ্যে থাকলেও সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত জানানোর পর পতনের মাত্রা বেড়ে যায়। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গত সোমবার সারাদেশে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় সরকার।
সরকারের এমন ঘোষণা আসার পর গত সোমবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন দেখা দেয়। একই সঙ্গে চরম ক্রেতা সঙ্কটে পড়ে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। গত মঙ্গলবারও শেয়ারবাজারে ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। এ পরিস্থিতিতে গতকাল লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান স‚চক ১৭ পয়েন্ট কমে যায়। অবশ্য প্রথম ১৫ মিনিটের লেনদেন শেষ হওয়ার পর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এতে লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসই’র প্রধান স‚চক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
অবশ্য সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর আগের দুই কার্যদিবসের মতো দিনের সর্বনিম্ন দামে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রির আদেশ আসতে থাকে। ফলে ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক। তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা ফেরায় দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে শতাধিক প্রতিষ্ঠান। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১০টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৮টির এবং ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ১৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৫২ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী পেপারের ৪২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, কেডিএস এক্সেসরিজ, ফু-ওয়াং ফুড, শাইনপুকুর সিরামিকস, তিতাস গ্যাস, ফরচুন সুজ এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যস‚চক সিএএসপিআই কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩৮ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৫টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন