শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাহানি বন্ধে সরকার এবং আঞ্চলিক পরিষদ কী করছে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৮, ৪:১৪ পিএম

বাংলাদেশের রাঙামাটিতে আঞ্চলিক দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে শুক্রবার একজন নিহত হয়েছে।
পুলিশ বলছে, নিহত বিনয় চাকমা জংলী পাহাড়িদের সংগঠন জনসংহতি সমিতি বা জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপের সাবেক কর্মী। এনিয়ে গত ছয় মাসে পাহাড়ে মোট ১৯ জন নিহত হল।
পুলিশের ধারণা আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের ধারাবাহিকতায় এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
গত মাসের শুরুতে পরপর দুইদিনে দুটি সশস্ত্র হামলায় মোট ছয়জন নিহত হবার পর, সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ শুরু হয়। এই অস্থিরতা এবং সংঘাতের জন্য সেখানকার আঞ্চলিক সংগঠনগুলো একে অপরকে দায়ী করে থাকে। বিনয় চাকমা জংলীর হত্যাকা-ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপিডিএফকে দায়ী করেছে তার দল জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপ। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি।
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, মূলত আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এই সংঘাতের প্রধান কারণ। একই মত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ানেরও। তিনি বলেন, ‘তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই আছে। এছাড়া শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রতার কারণে তাদের মধ্যে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ, মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোই মূল কারণ।’
গত কয়েক মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি হত্যাকা-ের প্রেক্ষাপটে ঐ এলাকায় অস্থিরতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং অন্তর্কলহের বিষয়টিও অনেকটাই প্রকাশ্য। কিন্তু তা ঠেকানোর জন্য সরকারের সংস্থাগুলোর তেমন উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ শোনা যায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের একজন সদস্য গৌতম কুমার চাকমা বলেছেন, সংঘাত নিরসনের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর, পরিষদের নয়। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের, তাদের সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনীও দায়িত্বপ্রাপ্ত। আর দ্বন্দ্ব তো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আঞ্চলিক পরিষদ একটি সরকারী সংস্থা, রাজনৈতিক বিষয়ে আঞ্চলিক পরিষদের কিছু করার নেই।’
তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন-১৯৯৮ অনুসারে পরিষদের কাজের মধ্যে রয়েছে - পার্বত্য জেলাগুলোর সাধারণ প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় সাধন করা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, ঐ অঞ্চলে দ্বন্দ্ব সংঘাত কমিয়ে আনার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে উপজেলা এবং থানা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সচিব মো নুরুল আমিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানকার জেলা প্রশাসক ও চেয়ারম্যানদের লিখেছি সংঘাত যেন না হয় সে ব্যবস্থা নিতে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ৭২টির মধ্যে প্রায় ৪৮টি অনুচ্ছেদ বাস্তবায়ন করেছি। এখন বাকি আছে ভূমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো, সেগুলোও শিগগিরই বাস্তবায়ন করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি।’
তবে সংঘাত নিরসনে বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার কোন চিন্তা এখনো সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন মিঃ আমিন।
সূত্র : বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন