বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহ নির্ভরতার অভাবেই মানুষ আত্মহত্যা করে

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০২ এএম, ২২ জুন, ২০১৮

সম্প্রতি দেশে বেশ কিছু আত্মহত্যার ঘটনা দেখা গেছে। এর প্রতিটি ঘটনাই হতাশাজনিত। মানুষ তার অন্তরে পাওয়া দুঃখ ও দুশ্চিন্তার ভার বইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। প্রকৃত ঈমানদার কোনোদিন আত্মহত্যা করে না। উন্নত বিশ্বে নানা কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে। উদ্বেগ হতাশা ও দুঃখ থেকে যেমন মানুষ আত্মহত্যা করে তেমনই দুনিয়ার সকল প্রাপ্তি পরিপূর্ণ হয়ে মানুষ যখন সুখের প্রতিও বিতৃষ্ণ হয়ে উঠে তখন সে আত্মহত্যার প্রবণতায় ভোগে। দলে দলে আত্মহত্যার এ কাজটিকে জাপানিরা বলে হারিকিরি। জীবনকে ভোগ করতে করতে মানুষ যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখনও তার মন তৃপ্ত হয় না। কারণ, মন এ পৃথিবীতে তৃপ্ত হওয়ার নয়। মানুষ মূলত জান্নাতে সৃষ্ট জীব। তার আত্মাটি পৃথিবীতে বহিরাগত। এখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে তার কষ্ট হয়। তবে দেহটি যেহেতু তার মাটির তৈরি তাই পৃথিবীকে তার ভালো লাগে। এ ভালোলাগা ও না লাগার সংঘাত সয়েই মানুষকে বাঁচতে হয়। পৃথিবীর বৈরিতা মোকাবেলা করার জন্য আল্লাহ মানুষকে হেদায়াতের পথ দান করেছেন। যারা এ পথ অনুসরণ করে তারাই পারে সফলভাবে পৃথিবীর সকল বৈরিতা মোকাবেলা করতে। এরপরও যদি হৃদয় শান্ত না হয় তাহলে এর একমাত্র ওষুধ আছে আল্লাহর জিকিরের মধ্যে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা ঈমানদার তারা আল্লাহকে স্মরণ করে মনে শান্তি পায়। মনে রেখ, আল্লাহর জিকিরের মধ্যেই আছে অন্তরের প্রশান্তি।’ প্রাত্যহিক উদ্বেগ, দুঃখ-দুশ্চিন্তা মোকাবেলার জন্য আল্লাহ অনেক ওষুধ দিয়েছেন। যেমন, আল্লাহ নির্ভরতা, ধৈর্য, সন্তুষ্টি, লোভহীনতা ও কৃতজ্ঞতাবোধ। আল্লাহর রাসুল সা., সাহাবায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখগণ মানুষকে এসব গুণ শিক্ষা দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে, হতাশা কুফুরীর অন্তর্ভূক্ত। নবী করিম সা. বলেছেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। যে আত্মহত্যা করে তার পরকালীন শাস্তি অনন্তকাল সে নিজেকে হত্যা করতে থাকবে। আর সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে।
আত্মহত্যা থেকে মানুষ বাঁচতে পারে তার ঈমানের কারণে। যখন সে বোঝে যে আমার সকল অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ পাক জানেন। তিনি আমার বর্তমান বিপদ বা হতাশা সম্পর্কেও জানেন। তার জানার বা ইচ্ছার বাইরে কিছু নেই। আমার উচিত সবর করা। বিপদ তিনিই দূর করবেন। আমার মালিক আমি নই। নিজেকে হত্যা করাও অপর মানুষকে হত্যা করার সমান অপরাধ। তাছাড়া আমি মৃত্যুর মধ্যে সমাধান খুঁজছি বটে, তবে এখানে সমাধান নেই। বরং আরও বড় বিপদ ও আযাবের মুখে আমি নিজেকে ঠেলে দিচ্ছি। যা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন পথ আমার নেই। এক কবি বলেছিলেন, ‘এয়ছে তো হাম ক্যাহতে হ্যায় কে হাম মরজায়েঁঙ্গে -মরকে ভী আগার চাইন না মিলা তো কিধার জায়েঁঙ্গে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
সফিক আহমেদ ২২ জুন, ২০১৮, ১:৪০ এএম says : 0
একদম ঠিক কথা বলেছেন
Total Reply(0)
কামরুল ২২ জুন, ২০১৮, ১:৪২ এএম says : 0
যারা আত্মহত্যা করার চিন্তা করে তাদের উচিত এই হাদিসটি পড়া। নবী করিম সা. বলেছেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। যে আত্মহত্যা করে তার পরকালীন শাস্তি অনন্তকাল সে নিজেকে হত্যা করতে থাকবে। আর সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে।
Total Reply(0)
লাকি ২৮ জুন, ২০১৮, ১:৪৫ পিএম says : 0
আত্মহত্যা মহা পাপ এটা জানি। তবে মৃত্যুর পরে কি এর কোনো ক্ষমা নাই? আত্মহত্যা কারির আত্মিয় বা সুভাকাঙ্কি যদি তার জান্নাতের জন্য আল্লাহর কাছে কাঁন্নাকাটি করে দোয়া করে তাহলে কি আত্মহত্যাকারি মাফ পাবে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন