শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

তারুণ্যের আইকন যে খেলোয়াড়

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৮, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ১ জুলাই, ২০১৮

ফুটবল বিশ্বে মোহাম্মদ সালাহ অতি পরিচিত নাম। মিসরের এই কৃতী ফুটবলার ইতোমধ্যেই বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের অনিবার্য মনোযোগ, অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা লাভে সামর্থ হয়েছেন। ফুটবলবিশ্বের সমসাময়িক কালের কিংবদন্তিদের নামের সঙ্গে তার নাম উচ্চরিত হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে তার এক বিশাল ভক্তকূল গড়ে উঠেছে। লিভারপুলের স্ট্রাইকার হিসাবে সদ্যসমাপ্ত সেশনে যে কৃতিত্ব ও কুশলতা তিনি দেখিয়েছেন, তার কোনো তুলনা হয় না। তিনি মোট ৪৪ টি গোল করেছেন, যা তার বিরল মেধা-সক্ষমতার পরিচয় বহন করে। লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে তোলার কৃতিত্ব বিশেষভাবে তার। দীর্ঘদেহী, শুভ্রমÐিত এবং শিশুর মতো মায়াময় মুখাবায়বের অধিকারী মোহাম্মদ সালাহ প্রথম দর্শনেই ভালো লেগে যায়। অন্যান্য ফুটবলারের চেয়ে তিনি লক্ষণীয়ভাবেই আলাদা। সবার মধ্যে থেকেও তিনি স্বতন্ত্র। তার এই আলাদা ও স্বতন্ত্র পরিচয় বা বৈশিষ্ট্য এনে দিয়েছে তার ধর্ম ইসলাম। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের চেয়ে ইসলাম ধর্মের প্রকৃত অনুসারীরা পৃথক। তাদের সহজেই আলাদা করে নেয়া যায়। তাদের সুরতে, তাদের ব্যবহারে ইসলামের সৌন্দর্য প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। তারা একেকজন হয়ে ওঠেন শ্রদ্ধেয়, অনুসরণীয়। মোহাম্মদ সালাহর ক্ষেত্রেও সেটা লক্ষ্য করা গেছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসাবে তিনি তার পরিচয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। এটা মাঠের দর্শক থেকে শুরু করে টেলিভিশনের দর্শক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক্টিভিস্টরা প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি যখন খেলা শুরু করেন তখন দোয়া-দুুরুদ পাঠ করেন, আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাত তুলে মোনাজাত করেন। আবার প্রতিপক্ষের ব্যুহ ভেদ করে গোল করে আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, মাঠেই সেজদায় অবনত হন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে কাঁধে চোট পাওয়ার রাশিয়া-বিশ্বকাপে তিনি অংশ নিতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। মিসরসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা তার অগণিত ভক্ত-অনুরাগী হতাশায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে অবশ্য জানানো হয়, তিনি প্রথম দিকে খেলতে না পারলেও পরের দিকে মাঠে নামবেন। মিসর-উরুগুয়ে খেলায় তিনি খেলেন নি। দ্বিতীয় ম্যাচে রাশিয়ার বিপক্ষে তিনি আর দর্শক হয়ে থাকনে পারেন নি। মাঠে নামেন এবং তার ভক্তরা তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত ও অভিনন্দন জানান। তিনি মাঠে নেমেই যথারীতি দোয়া মোনাজাত করেন এবং বিশ্বকাপে তার প্রথম গোল করার পর আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিজদা দেন।
মোহাম্মদ সালাহর এই মহান আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণচিত্ততা, এই ধর্মপ্রণিতায় তার ভক্ত-অনুসারীরা মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত। জানা যায়, তিনি যেখানেই যান পবিত্র কোরআন শরীফ তার সঙ্গে থাকে। সেদিন এক বন্ধু জানালেন, সালাহ দীর্ঘ বিমানযাত্রায় বিমানে পবিত্র কোরআন পাঠ করতে থাকেন। এরকম এক যাত্রায় বিমানে পবিত্র কোরআন পাঠরত সালাহর একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ধর্মপ্রাণ হিসাবে তার সুখ্যাতি এতই বিস্তারিত হয়ে পড়েছে যে, তার অনেক অমুসলিম ভক্তও অনুপ্রাণিত হয়েছে। তারা মুসলিম হতে চায়, মসজিদে যেতে চায় এমন আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তারা একটি গান প্রকাশ ও প্রচার করেছে যার কয়েকটি লাইন এরকম: ‘যদি সে তোমার জন্য ভালো হয় তবে আমার জন্যও ভালো/ যদি সে আমাদের জন্য আরো কিছু গোল করে তবে আমরা মুসলিম হতেও রাজি/ যদি সে তোমার জন্য ভালো হয় তবে সে আমার জন্যও ভালো/ যদি সে মসজিদে যায় তবে আমিও সেখানে যেতে রাজি/’ সালাহ! নামে ‘আমিও মুসলিম হবো’ শিরোনামের এই গানটি ইতোমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
মুসলিম মাত্রই অন্যের জন্য আদর্শ। চরিত্র, আচরণ ও ধর্সনিষ্ঠায়, মানবিক মূল্যবোধ, উদারতা ও সততা-শালিনতায় তিনি অনুসরণীয় হতে বাধ্য। মুসলমানদের একটি প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া তাদের কাছে, যারা এখনো ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেনি। এটা সেই শুরু থেকেই দেখা গেছে, ইসলামের মৌখিক দাওয়াতে যত মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি মানুষ ইসলামের প্রতি অনুরাগী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে দায়ীদের চরিত্রমাধুর্য, কর্মনিষ্ঠা, মানবিক ঔদার্য ও মহানুভবতার কারণে। মোহাম্মদ সালাহ তার ক্ষেত্রে অনেকটা দায়ীর ভ‚মিকাই পালন করেছেন। তার মত অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত সকল মুসলমান যদি ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে ‘আলোক স্তম্ভে’ পরিণত হতে পারতো তাহলে সেই আলোক স্তম্ভ থেকে আলোক সন্ধানী অনেকেই আলোকিত হতে পারতো। বিশ্বজুড়ে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের যে অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তার হাতে অবসান ঘটতো। এইসঙ্গে মুসলিম উম্মাহর অগ্রগতি তরান্বিত হতো এবং বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা অনেক বেশি নিশ্চিত হতো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
শরীফ ৩০ জুন, ২০১৮, ৪:০২ এএম says : 2
মোহাম্মদ সালাহর এই মহান আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণচিত্ততা, এই ধর্মপ্রণিতায় তার ভক্ত-অনুসারীরা মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত।
Total Reply(0)
Md Salim ৩০ জুন, ২০১৮, ৪:০৩ এএম says : 2
Mashaallah
Total Reply(0)
খোর্শেদ নিয়ন ৩০ জুন, ২০১৮, ৪:০৪ এএম says : 1
Love u so much
Total Reply(0)
Md Harun Ar Rashid ৩০ জুন, ২০১৮, ৪:০৬ এএম says : 1
নিশ্চয়ই আল্লাহ এর উত্তম প্রতিদান দেবেন।।
Total Reply(0)
নাবিলা ৩০ জুন, ২০১৮, ৪:০৭ এএম says : 1
তার মত অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত সকল মুসলমান যদি ইসলামের আলোয় আলোকিত হয়ে ‘আলোক স্তম্ভে’ পরিণত হতে পারতো তাহলে সেই আলোক স্তম্ভ থেকে আলোক সন্ধানী অনেকেই আলোকিত হতে পারতো।
Total Reply(0)
tazul islam ৩০ জুন, ২০১৮, ২:১০ পিএম says : 2
alhumdulillah
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন