রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করার মধ্যে হাবীবে খোদা সা. এর প্রেরণা নিহিত আছে

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

হাজরে আসওয়াদের সম্মান ও মর্যাদার একটি কারণ এই যে, এই পাথরটি হজরত জিব্রাইল আ. জান্নাত হতে আনয়ন করেছিলেন। [আজরাকী : আখবারে মক্কা ওয়ামা জ্বাআ ফিহা মিনাল আছার, খন্ড ১, পৃ. ৬২-৬৪; ইবনে আবি শায়বাহ : আল মুছান্নাফ, খন্ড ৩, পৃ. ২৭৫, বর্ণনা সংখ্যা ১৪১৪৬]
আম্বিয়ায়ে কেরাম আল্লাহপাকের হুকুম মোতাবেক হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করতেন এবং হস্তদ্বারা স্পর্শ করতেন। হুজুর নবী আকরাম সা. জাদ্দুল আম্বিয়া সাইয়্যেদেনা ইব্রাহিম আ. এর সুন্নাতের ওপর আমল করতঃ স্বীয় মোবারক হস্ত দ্বারা হাজরে আসওয়াদকে হেরেমে কাবার মধ্যে গ্রোথিত করেছিলেন এবং পবিত্র ঠোঁট দ্বারা ইহাতে চুমো খেয়েছিলেন। এভাবে হাজরে আসওয়াদকে চুমো দেয়া, এস্তেলাম করা, মানাছেকে হজের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। বর্তমানে মুসলমানগণ ইহাকে চুমো খায় এবং এস্তেলাম করে তাজদারে কায়েনাত সা. এর অনুসরণে। এই কর্ম সম্পাদনের প্রেরণাা সাইয়্যেদেনা ওমর রা. এর বাণী হতেও লাভ করা যায়। একবার হজরত ওমর ফারুক রা. তাওয়াফ করার সময় হাজরে আসওয়াদের সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং একথা বললেন : আমি জানি অবশ্যই তুমি একটা পাথর, যে ক্ষতিও করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। আমি যদি হুজুর নবীয়ে আকরাম সা. কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখতাম, তাহলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। [সহিহ বুখারী : কিতাবুল হজ, বাবু মা জুকিরা ফিল হাজারিল আসওয়াদি, খন্ড ২, পৃ. ৪৭৯, বর্ণনা সংখ্যা ১৫২০; সহিহ বুখারী : কিতাবুল হজ, বাবু তাকবিলিল হাজার, খন্ড ২, পৃ. ৫৮৩ বর্ণনা সংখ্যা ১৫৩২; ইবনে মাজাহ : আস সুনান, কিতাবুল মানাসিক, বাবু এস্তেলামীল হাজার, খন্ড ২, পৃ. ৯৮১, বর্ণনা সংখ্যা ২৯৪৩।
হজরত ওমর ফারুক রা. এর এই বাণী এই শব্দাবলীর দ্বারাও বিবৃত হয়েছে: (হে হাজরে আসওয়াদ), তুমি শুধু একটি মাত্র। যদি আমি হুজুর নবী আকরাম সা. কে তোমায় চুমো খেতে না দেখতাম, তাহলে আমি তোমাকে কখনো চুমো দিতাম না। [ইমাম মালেক : আল মুয়াত্তা, কিতাবুল হজ, বাবু তাকবিলে রুকনিল আসওয়াদি ফিল এস্তেলামে, খন্ড ১, পৃ. ৩৬৭, বর্ণনা সংখ্যা ৮১৮; আহমদ ইবনে হাম্বল : আল মুসনাদ, খন্ড ১, পৃ. ৫৩ বর্ণনা সংখ্যা ৩০৮]
এই কথাগুলো উচ্চারণ করার পর হজরত ওমর রা. হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করেছিলেন। সুতরাং এ সকল বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাহাবায়ে কেরামের নজরে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বনের মূল মাকসুদ ছিল হুজুর নবী আকরাম সা. এর সুন্নাতের স্মরণকে তাজা করা। এই সুন্নাত কিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। সহিহ ইবনে খুযায়মাহ এর মধ্যে হজরত ইবনে আব্বাস রা. এর এই বর্ণনাটি রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: নিশ্চয়ই এই কালো পাথরটির একটি জিহ্বা ও দুইটি ঠোঁট রয়েছে। যে ব্যক্তি এর ইস্তেলাম করতে তার পক্ষে উহা কিয়ামতের দিন সত্যতার সাক্ষ্য দেবে। সহীহ ইবনে খুযায়মাহ : কিতাবু মাসালিকিল হজ্জ: খন্ড ৪, পৃ. ২১৭।
মুস্তাদরেকে হাতেমে হজরত জাবির রা. সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি প্রথমেই হাজরে আসওয়াদের নিকট উপস্থিত হয়ে উহাকে স্পর্শ করলেন, জড়িয়ে ধরলেন। তখন কান্নার ভারে তার চক্ষুদয় হতে অজস্র ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। তারপর তিনি উহাকে চুম্বন করলেন। তার ওপর হাত রাখলেন এবং দুই হাত দ্বারা নিজের মুখমন্ডল মর্দন করলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
কামরুজ্জামান ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫০ এএম says : 0
আল্লাহ যেন জীবনে একবার হলেও হজ করার তৌফিক দান করেন।
Total Reply(1)
saifu ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৯:৪২ এএম says : 4
আমীন,
খোকন ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫০ এএম says : 0
এই ধরনের লেখা পড়তে আমার খুব ভালো লাগে
Total Reply(0)
Nurul kabir ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৯:১৪ এএম says : 0
Ami hat dehe touch Koresi.
Total Reply(0)
সাইফ ১৪ আগস্ট, ২০১৮, ৯:৪৬ এএম says : 0
যতদিন রবে আল্লাহর নাম ততদিন রবে আমার হাবীব প্রীয় নবী (সাঃ) এর নাম যতদিন রবে আল্লাহর ইবাদত ততদিন রবে আমার হাবীবের স্বরণ যতদিন রবে আল্লাহর কালাম ততদিন রবে আমার হাবীবের সুন্নত সেই হবে উভয় জাহানের সফল ব্যক্তি যে আমার হাবীব (সাঃ) ও আল্লাহকে আকড়ে ধরবে। আল্লাহ তায়ালা লেখক সাহেবকে ও ইনকিলাব শংশ্লীষ্ট সকলকে এর উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন