শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে স্থবির দশ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৭:০৭ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এখনো স্থবির হয়ে আছে দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কার্যক্রম। ডিলারদের অনিহা আর পদ্ধতিগত জটিলতার কারণে এ কার্যক্রম পড়েছে অনিশ্চয়তার মুখে। খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মাসের প্রথম দুদিন সরকারি ছুটি থাকায় ডিলাররা ব্যাংকে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার কর্মদিবসে ৯৬২ ডিলারের মধ্যে ৩৬ জন চাল উত্তোলনের টাকা জমা দিয়েছেন। টাকাই জমা দেননি ৩টি জেলার কোন ডিলার। চার কর্মদিবসে ৩৬ জন ডিলারের উত্তোলিত ১ হাজার ১৭২টন চালের মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৯০ টন। যেখানে প্রতিমাসে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন চাল বিক্রি হবার কথা। মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার আলোকে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত বরাদ্দপত্র সব জেলা-উপজেলা খাদ্য দপ্তরে গত মাসের শেষভাগে পৌঁছলেও বেশীরভাগ ডিলারদের কাছে বরাদ্দপত্র গতমাসে না পৌঁছানোর কারণে এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে চলতি বছরে এ চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু করলেও এখনো হালনাগাত তালিকা প্রণয়ন করা হয়নি। ফলে গতবছর সুবিধাভোগীদের মধ্যে যে বিপুল সংখ্যক ‘রাজনৈতিক সুবিধাবাদী’ ও দরিদ্র সীমার ওপরে বসবাসকারি এ চাল পেয়েছিলেন, এবারো তারা একই সুবিধা পাচ্ছেন। এমনকি যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের নামও রয়েছে চাল প্রাপ্তির তালিকায়। সরকারি নীতি নির্ধারক মহল মনে করছে, ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ফলে লাগামহীন চালের বাজারে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব। তবে মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা-উপজেলা খাদ্য দপ্তর থেকে বরাদ্দপত্র ইস্যুসহ টাকা জমা দিয়ে গুদাম থেকে ডিলারদের চাল উত্তোলনে যথেষ্ঠ অনিহাও কাজ করছে বলে জানা গেছে। ফলে উপকারভোগীদের হাতে এসব চাল কবে পৌঁছবে তা নিয়েঅনিশ্চয়তা রয়েছে খোদ অধিদপ্তরেরই অনেকের কাছে।
জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামে গঞ্জে ভাদ্র-আশ্বিনের কিছুটা আকাল চলছে। ফলে এ সময়ে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির সরকারি এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলেও পদ্ধতিগত সমস্যাসহ ডিলারদের অনিহার কারণে তা কতটুকু ফলপ্রসূ হয়, তা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে বাজার পর্যবেক্ষকদের মতে, এ কার্যক্রম সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগস্ট থেকে তিন মাসের জন্য চালু রাখলে তা গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২টি উপজেলার প্রায় ৪শ’ ইউনিয়নের ৪ লাখ ৮০ হাজার ২৭৮জন নারী-পুরুষ ১০ টাকা কেজি দরে দুমাস চাল কেনার সুযোগ পাবেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রস্তাবনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত¡াবধানে কমিটি যাচাই-বাছাই করেছে এ তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিমাসে ১৪ হাজার ৫শ’ টন করে চাল দশ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে ।
এ চাল বিক্রির লক্ষ্যে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলায় ইতোপূর্বেই ৯৬৩ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। এসব ডিলার ১৫% করে কমিশন লাভ করবেন। যদিও পরিবহন ব্যয় ও ঘাটতি বাদ দিলে তাদের ১০% কমিশনও থাকছেনা বলে তা ২৫%-এ বৃদ্ধির দাবি রয়েছে। ফলে এবারও অনেক ডিলারই এ চাল উত্তলন থেকে বিরত থাকার আশংকা রয়েছে। এতে করে এবারো অনেক উপকারভোগী সময়মত হ্রাসকৃত মূল্যের চাল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। গতবছরও দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ২শ’ ডিলার এ চাল উত্তোলন না করায় উপকারভোগীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
১০ টাকা কেজি দরে এ চাল বিক্রির লক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার সরকারি গুদামগুলোতে পর্যাপ্ত চাল মজুদ রয়েছে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্তÍ দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী গুদামে চাল মজুদের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার টনের মত। পাশাপাশি চলতি মাসে ও আগামী মাসে আরো বিপুল পরিমাণ চাল এ অঞ্চলের সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে আসবে বলেও জানিয়েছেন দায়িত্বশীল মহল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন