দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে এবার ‘মাঘের শীত বাঘের গায়’এর পরিবর্তে বসন্তের আবহাওয়ার সাথে গত ৩দিন ধরে ঘন কুয়াশায় আম সহ মৌসুমী ফলের মুুকল ও গুটির পাশাপাশি বোরো বীজতলার ক্ষতি তড়ান্বিত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য সহ সুস্থ্য জনজীবনেও যথেষ্ঠ বিপর্যয় নেমে আসছে। এমনকি এ বৈরী আবহাওয়ায় গমের ছত্রাকবাহী ‘ব্লাস্ট’ সহ মাঠে থাকা গোল আলুও ‘লেট ব্লাইট’ রোগে আক্রান্তের সম্ভবনা ক্রমশ বাড়ছে।
সমাপ্তপ্রায় শীত মৌসুমে পৌষের মধ্যভাগে এবার বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ায় কৃষি সহ জনস্বাস্থ্যেও ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসে। নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিতে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে প্রায় ৮ হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছে ইতোমধ্যে। শিশু ও মেডিসিন বিভাগ সমুহের মেঝেতেও রোগীদের ঠাই হচ্ছিল না। এমনকি শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে এক সপ্তাহে অন্তত ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত রোগে।
তবে ভরা শীতের মাঘের শুরু থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে এবার শীত উধাও হতে শুরু করে। এমনকি মধ্যমাঘে বরিশালে তাপামাত্রার পারদ ১৭-১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসেও উঠে যায়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৬-৭ ডিগ্রী ওপরে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রারও ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে গেছে ইতোমধ্যে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৫ ডিগ্রী বেশী।
এমনিক এ পরিস্থিতির মধ্যেই গত ৩দিন ধরে শেষরাত থেকে অনেক বেলা অবধি মেঘনা অববাহিকা সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ঘন কুয়াশায় দিগন্ত ঢেকে যাচ্ছে। শণিবারে সূর্যের দেখা মিলেছে সকাল ৮.২৪টায়। ফলে গম, গোলআলু ও বোরো বীজতলার ক্ষতির আশংকা ক্রমশ বাড়ছে। ইতোমধ্যে কয়েক দফার শৈত্য প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের বোরো বীজতলার বেশ কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। লক্ষ্যামাত্রার চেয়ে অনেক বেশী জমিতে গোল আলু ও গম আবাদ হলেও প্রকৃতির বিরূপ আচরনে নিয়ে কৃষিযোদ্ধাদের দুঃশ্চিন্তাও ক্রমশ বাড়ছে। মৌসুমের শেষের এ লাগাতর ঘন কুয়াশার সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধিরফলে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে আমের মুকুল ও গুটি ঝড়ে পরার আশংকাও প্রবল হচ্ছে। কৃষিবীদদের মতে, মাঘের শেষ প্রান্তে ঘন কুয়াশা প্রলম্বিত হওয়ায় মৌসুমী ফলের উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বা কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট-এর কারিগরি পরামর্শ প্রদানেরও তাগিদ দেয়া হয়েছে।
শণিবারও শেষরাত থেকে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ায় মেঘনা অববাহিকায় নৌযোগাযোগও বিপর্যয়ের কবলে পরে। ঘন কুয়াশয় ঢেকে যাবার ফলে বরিশাল-ভোলা এবং ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট ফেরি চলাচলও মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন