রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

মোয়াবিয়া’র (রা.) দরবারে শাদ্দাদের বেহেশত দেখা আবু কালাবা

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

সাধারণভাবে প্রচলিত যে, শাদ্দাদ তার নির্মিত বেহেশতে প্রবেশ করতে পারেনি। সেখানে পা রাখার আগেই আজরাইল (আ:) তার জান কবজ করেন এবং তার বেহেশতও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায়। তবে শাদ্দাদের সাথেই তার বেহেশত ধ্বংস হয়েছিল কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, শাদ্দাদের পরও তার বেহেশতের প্রাসাদগুলো অক্ষুন্ন থাকে এবং কালের পরিবর্তনে সেগুলো লুপ্ত হয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায়। তবে অস্তিত্বহীন হয়ে যায়নি এ দাবির একটি প্রকৃষ্ট প্রমাণ হচ্ছে হজরত মোয়াবিয়া’র (রা:) সময়ে এক প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য।
এ ঘটনা সম্পর্কে তাফসিরবিদগণের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে, যা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়। তবে সূরা ‘ফাজরের’ প্রথম দিকের আয়াতগুলোতে ‘ইরামাজাত’-এর তাফসিরে শাদ্দাদের বেহেশত ধ্বংসের বিবরণ অর্থাৎ ‘আদ’ জাতির উত্থান-পতনের কথা বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাতে জানা যায়, শাদ্দাদের বেহেশতের অস্তিত্ব হজরত আমির মোয়াবিয়া’র (রা:) আমলেও অক্ষুন্ন ছিল বলে একজন প্রতক্ষদর্শী তাকে বর্ণনা করেছেন। এ দুর্লভ ও বিস্ময়কর ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ বিভিন্ন প্রাচীন তাফসিরে বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা হক্কানির ভাষায় ঘটনাটি সংক্ষেপে নিম্নরূপ : আবু কালাবা তার হারানো উট তালাশ করতে গিয়ে একটি জঙ্গলে পৌঁছেন এবং ‘ইরাম’ শহরে উপনীত হন। সেখান থেকে বহু মণি-মুক্তা নিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন। এ খবর হজরত মোয়াবিয়া’র (রা:) নিকট পৌঁছালে তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন। আবু কালাবা বিস্তারিত অবস্থা বর্ণনা করেন। তখন হজরত মোয়াবিয়া (রা:) কালাবাকে তার অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন, এটি সেই ‘ইরাম’ শহর যা শাদ্দাদ নির্মাণ করেছিলেন।
অত:পর আল্লামা হক্কানি মন্তব্য করেন; যদি এ বর্ণণাকে সঠিক বলে স্বীকার করে নেয়া হয়, তা হলে সম্ভবত তিনি ‘ইরাম’ শহরের ধ্বংসস্তুূপে পৌঁছে থাকবেন এবং সেখান থেকে মূল্যবান পাথর নিয়ে আসেন। কিন্তু এর দ্বারা এই কথা প্রমাণিত হয় না যে, ‘ইরাম’ শহর অনুরূপভাবে ইয়েমেনের জঙ্গলে বিদ্যমান এবং মানুষের দৃষ্টির অগচরে রয়েছে। (সূরা ফাজরের তাফসির)
তাফসিরে খাজেনে উট হারানো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে আব্দুল্লাহ ইবনে কালাবা এবং বর্ণনাকারীর নাম ওহাব ইবনে মোনাব্বাহ। আর তিনি যে স্থানে পৌঁছে ছিলেন তা হলো, ‘ছাহারায়ে আদন’ (এডেন মরুভূমি)। একই তাফসিরে আব্দুল্লাহ ইবনে কালাবার হারানো উট তালাশের, শাদ্দাদের বেহেশত প্রত্যক্ষ করার এবং হজরত মোয়াবিয়া’র (রা:) দরবারে গিয়ে সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বিস্তারিত বিবরণ ব্যক্ত হয়েছে এবং দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছে যে, ‘সেটি ছিল শাদ্দাদেরই নির্মিত বেহেশত।’
আব্দুল্লাহ ইবনে কালাবা কর্তৃক হজরত মোয়াবিয়া’র (রা:) সামনে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বর্ণিত এ ঘটনা এখন থেকে ১৪ শ’ বছর পূর্বের কথা। শাদ্দাদের পর হাজার হাজার বছর পরও যদি শাদ্দাদের বেহেশতের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে, আধুনিক যুগে তা আবিষ্কার করা অসম্ভব নয়। নূহ (আ:)-এর নৌকা আবিষ্কারের তথ্য বর্তমান যুগেও প্রচারিত ও প্রকাশিত হতে দেখা যায়। নূহ (আ:)-এর পরবর্তী সময়ে নির্মিত শাদ্দাদের বেহেশত আবিষ্কারের তথ্য পাওয়া গেলে তাতে অবাক ও বিস্মিত হওয়ার কিছু থাকবে না। আল্লাহ যেমন তাঁর অসীম কুদরতের নিদর্শন হিসেবে ফেরাউনের লাশ অক্ষত রেখেছেন, তেমনি শাদ্দাদের বেহেশত (ধ্বংসাবশেষ) অক্ষুন্ন রাখতে পারেন, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মাসুদ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৪:০৮ এএম says : 0
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
মোঃ হাচিনুর রহমান ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৫:৩৯ পিএম says : 0
আমার মতব্য এই যে আল্লাহর অসিম খমতার অধিকারি তিনি সব পারেন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন