বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আহলে বাইত রা. এর ফযিলত

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় সহধর্মিণীগণকে বিশ্বের সকল নারী হতে উত্তম বলেছেন। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন বলে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহপাক নবীপত্মীগণকে সম্বোধন করে ইরশাদ করেছেন : হে নবীপত্মীগণ, তোমরা অন্যান্য মহিলাদের মতো সাধারণ মহিলা নও, হে নবীগৃহের সদস্যগণ, আল্লাহপাক তোমাদের থেকে অপবিত্রতা ও নোংরামি দূরীভূত করে রেখেছেন। (সূরা আল আহযাব : আয়াত ৩২, ৩৩)। আল্লাহপাক স্বীয় নবীপত্মীগণকে পবিত্র রমণী বলে সাব্যস্ত করেছেন। তাদের ওপর অভিযোগ ও আপত্তি উত্থাপনকারীগণকে দুনিয়া ও আখেরাতে লা’নত, অভিশাপ ও কঠিন শাস্তিরযোগ্য বলে স্থির করেছেন। তবে যে সকল লোকেরা পুত-পবিত্র, সরলা মুমিন নারীগণের ওপর ভিত্তিহীন অপবাদ রটনা করে, তারা দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহর অভিসম্পাতের পাত্রে পরিণত হয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। সেদিন তাদের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত, তাদের পাসমূহ তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে। সেদিন আল্লাহ তায়ালা তাদরেকে সঠিক ও উচিত বিনিময় প্রদান করবেন ও তারা অবগত হবে যে, আল্লাহ তায়ালাই সত্য ও সুস্পষ্ট ব্যক্তকারী। চরিত্রহীনা রমনীগণ চরিত্রহীন পুরুষের জন্য, চরিত্রহীন পুরুষগণ চরিত্রহীনা নারীদের জন্য যোগ্য। পবিত্র রমণীগণ পবিত্র পুরুষদের আর পবিত্র পুরুষগণ পবিত্র নারীদের জন্য। তারা তাদের (মুনাফিকদের) কথাবার্তা হতে সম্পূর্ণ পবিত্র ও মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। (সূরা আন নূর : আয়াত ১৩, ২৬)।
হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর সাথে মহব্বত রাখো, যেহেতু তিনি স্বীয় নিয়ামতরাশি দিয়ে তোমাদের জীবন পরিচালনা ও খাদ্য সরবরাহ করে থাকেন। আল্লাহর মহব্বতের খাতিরে আমাকে মহব্বত কর। আর আমার মহব্বতের কারণেই আমার আহলে বাইতকে মহব্বত কর। (জামে তিরমিজী : খন্ড ২, পৃ. ৬৯৯)। নূরনবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. কোরআনুল কারীম ও আহলে বাইত সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন : আমি তোমাদের মাঝে দুটি অতি বৃহৎ বস্তু রেখে যাচ্ছি। প্রথম বস্তু হলো আল্লাহর কিতাব। যাতে হেদায়েত ও নূর রয়েছে। দ্বিতীয় বস্তু হলো আমার আহলে বাইত। আমি তোমাদেরকে আহলে বাইতের ব্যাপারে সতর্ক করে যাচ্ছি। তোমরা আহলে বাইতের হক ও অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। এ দু’টি বস্তুকে দৃঢ়তার সাথে ধরে রাখবে। (মুসনাদে আহমাদ : খন্ড ৫, পৃ. ৩৩৪)। হজরত ইয়জিদ বিন হাইয়্যান বলেন, একদা আমি হুসাইন বিন সাবুরাহ ও উমার বিন মুসলিমসহ যায়েদ বিন আরকাম রা. এর খেদমতে গমন করলাম। আমরা আসন গ্রহণের পর তিনি বললেন, একদা রাসূলুল্লাহ সা. খুতবা দেয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের মাঝে দন্ডায়মান হলেন। তিনি বললেন, হে লোকসকল, আমি একজন মানুষ বৈ কিছু নই। অদূর ভবিষ্যতেই আমার নিকট আল্লাহর দূত আজরাঈল আ. এসে পড়বেন। আমি তার ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যাব। আমি তোমাদের মাঝে দু’টি ভারী বস্তু রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব। যাতে হেদায়েত ও নূর রয়েছে। তোমরা আল্লাহর কিতাবকে গ্রহণ কর, দৃঢ়ভাবে ধারণ কর। তিনি কিতাবুল্লাহ এর ব্যাপারে উৎসাহ-উদ্দীপনা দান করলেন। তারপর বললেন, আর দ্বিতীয়টি হলো আমার আহলে বাইত। আমি তোমাদের স্মরণ করার নির্দেশ দিচ্ছি। আমার আহলে বাইতের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো।’ (সহিহ মুসলিম : খন্ড ২, পৃ. ৩৭৯)।
রাসূলুল্লাহ সা. আরো ইরশাদ করেছেন, ‘কারো অন্তরে ঈমান প্রবেশ করবে না যতক্ষণ সে আল্লাহর রাসূলের খাতিরে আহলে বাইতের সাথে ভালোবাসা না রাখবে’। একদা হজরত আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব রা. রাসূলুল্লাহ সা. এর খেদমতে রাগান্বিত অবস্থায় হাজির হলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তখন রাসূল সা. এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার ক্ষোভের কারণ কি’? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা., তারা পরস্পরে মিলিত হলে হাসিখুশি নিয়ে মিলিত হয়। যখন আমাদের সাথে মিলিত হয় তখন সেভাবে মিলিত হয় না। রাসূল সা. এ কথা শুনে রাগান্বিত হলেন। তারপর বললেন, ‘যার হাতে আমার জীবন তার শপথ, কোনো ব্যক্তির অন্তরে ঈমান প্রবেশ করতে পারে না যতক্ষণ সে আপনাদেরকে আল্লাহ ও তার রাসূলের খাতিরে ভালো না বাসে।’ (জামে তিরমিজী : খন্ড ২, পৃ. ৬৯৬)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
রিমন ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৩:১১ এএম says : 0
এই জ্ঞানগর্ভ লেখাগুলোর জন্য আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম জাযাহ দান করুক।
Total Reply(0)
নাঈম ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৩:১২ এএম says : 1
আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে আরও জানার তৌফিক দান করুক।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন