রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহপাক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

যদি কেউ এ কথাটি সঠিক বলে মনে করে যে, দোজখের আগুন হয়তো একদিন ঠান্ডা হয়ে যাবে, তাহলে কি মুশরিক ও কাফিররা নিজেদের গোনাহসমূহ হতে পাক-সাফ হয়ে দয়া ও করুণার অধিকারী হয়ে যাবে? এর উত্তর হচ্ছে এই যে, কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ রয়েছে যে, শিরক ও কুফরের গোনাহ ক্ষমা করা হবে না। অর্থাৎ এর পরকালীন শাস্তি অনিবার্য ও অপরিহার্য। আর একথাও মনে রাখতে হবে যে, শিরক ও কুফরের শাস্তি হবে চিরকালের জন্য। মোট কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত দোজখ কায়েম থাকবে তারা এই আজাব থেকে নিস্তার লাভ করবে না।
কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় এমন দিন যদি আসে যখন দোজখের আজাবের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাবে, তাহলে সে সময় সে অপরাধীরা আজাব হতে মুক্তি লাভ করাও আশ্চর্যকর নয়? এ প্রশ্নের জবাবও আল কোরআনে এভাবে দেয়া হয়েছে, আল্লাহ বলবেন, ‘দোজখের আগুনই হচ্ছে তোমাদের ঠিকানা, সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে, কিন্তু আল্লাহ পাক যা ইচ্ছা করেন, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ (সূরা আল আনয়াম : আয়াত ১২৮)
এই আয়াতের শেষ অংশটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বলা হয়েছে যে, ‘তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ এখানে নির্দিষ্টভাবে ‘রব’ শব্দটির ব্যবহারে বুঝা যায় যে, ‘আল্লাহর শানে রাবুবিয়াত অর্থাৎ প্রতিপালনের মর্যাদাসুলভ ইচ্ছা যদি কার্যকরী হয় এবং তার সীমাহীন জ্ঞান-বিজ্ঞান যদি ইচ্ছা করে, তাহলে দোজখের সমাপ্তির পর হয়তো তারা রেহাই পেতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সন্দেহ থেকে যায় যে, তারা এরপর জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে কি না? কেননা হজরত ঈসা আ.-এর জবাবে কোরআনুল কারিমে আল্লাহপাক এই ঘোষণা জারি করেছেন, ‘অবশ্যই যে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করবে, তার জন্য আল্লাহপাক জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হচ্ছে দোজখ।’ (সূরা মায়েদাহ : আয়াত ৭২)।
অপর এক আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াত বা নিদর্শনাবলিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তা মেনে নিতে অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আকাশসমূহের দরজা উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সুঁইয়ের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করতে পারে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৪০) মোটের ওপর, আল্লাহর ঘোষিত শাস্তির বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, যদি দোজখের শাস্তির সীমা শেষও হয়ে যায়, তবুও জান্নাতের সীমারেখার মাঝে তাদের পদচারণা সম্ভব হবে না। তবে আল্লাহপাকের দয়া ও মায়ার পরিমন্ডল খুবই বিস্তৃত। যেমন তিনি স্বয়ং দোজখিদের সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘তারা চিরকাল দোজখে অবস্থান করবে, যতদিন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে, যদি তোমার রব অন্যরূপ ইচ্ছা করেন। অবশ্যই তোমার প্রতিপালক যা চান, তা-ই করেন।’ (সূরা হুদ : আয়াত ১০৬-১০৭)
তার এই রহমত ও করুণার পরিমন্ডলকে কে কমাতে পারে? কেননা তিনি স্বয়ং রহমতের বিস্তৃতি সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘আমার রহমত প্রতিটি বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৬)। এই সাধারণ রহমতের বিস্তৃতি থেকে আসমান ও জমিনের কোনো অংশ খালি আছে কি? তদুপরি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর প্রতি মিথ্যারোপকারীদের সম্পর্কে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, ‘সুতরাং যদি তারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চায়, তাহলে বলে দাও যে, তোমাদের প্রতিপালক সুবিস্তৃত রহমতের অধিকারী এবং তার আজাবকে গোনাহগারদের ওপর হতে ফেরানো যাবে না।’ (সূরা আল আনআম : আযাত ১৪৮)।
অর্থাৎ এমন সাধ্য কাহারো নেই যে, তার প্রেরিত আজাবকে গোনাহগারদের থেকে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু স্বয়ং তার রহমত খুবই বিস্তৃত। তিনি ইচ্ছা করলে তাদেরকে দুনিয়াতেই হেদায়েত দান করে জান্নাত নসিব করতে পারেন, অথবা আখেরাতে শাস্তি দানের পর ক্ষমা করতে পারেন এবং তার মূল রহমতের স্থান সেটাই, যেখানে অন্য কাহারও রহমতের অস্তিত্ব নেই। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে ‘সে দিন যার ওপর হতে আজাব দূর করা হবে, সুতরাং আল্লাহ তার ওপর রহমত করেছেন, ইহাই স্পষ্ট সফলতা।’ (সূরা আল আনআম : আয়াত ১৬)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Md Rasel ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:১৬ এএম says : 2
very nice writing
Total Reply(0)
MD Abu Taher ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:১৬ এএম says : 2
thanks to the writer
Total Reply(0)
Humayun kabir ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৭:২৭ এএম says : 2
Suba han ALLAH
Total Reply(0)
Md Abu Said ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৭:৪৭ এএম says : 2
Thanks
Total Reply(0)
Tarek Aziz ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৫২ পিএম says : 2
Absolutely
Total Reply(0)
সুফিয়ান ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:১০ পিএম says : 2
এই ধরনের লেখা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে এবং এসব লেখা থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানার সুযোগ পাই। তাই আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন