সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইসলামে ঐক্য ও নারীর মর্যাদা প্রসঙ্গ

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঐক্যবদ্ধ থাকা মুসলমানদের জন্য খুবই জরুরি। অনৈক্য পরিত্যাজ্য। মতভেদ থাকতেই পারে। তবে, এটিও হতে হবে ইসলামসম্মত পন্থায়। নিজেদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি করবেন না। যে সমস্ত বিষয় দ্বারা নিজেদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়, সে সমস্ত বিষয় বর্জন করতে হবে। কিছু হলেই আমরা সমালোচনা শুরু করি। যার মাধ্যমে আমাদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। কিভাবে সমস্যার সমাধান হবে সেই চেষ্টা করুন। কোনো জায়গায় ব্যথা করলে সেখানে ওষুধ দিতে হয়। অন্যথায় সমস্যার সমাধান হয় না। আমরা আল্লাহর কোরআন ও রাসূলের সুন্নাহ মোতাবেক চলব। এ অনুযায়ী আমাদের জীবনকে পরিচালিত করব। সাথে সাথে আমরা সাহাবায়ে কেরাম ও আকাবিরদেরকেও অনুসরণ করব। আমাদের সকল কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়ন করা। আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো বাতিলের সাথে আপস হবে না। হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা. বলেছেন, আমি জীবিত থাকব আর দ্বীনের ক্ষতি হবে? অর্থাৎ, আমি জীবিত থাকা অবস্থায় কখনো দ্বীনের ক্ষতি হতে দেবো না। আমরা সে ভ‚মিকা অবলম্বন করব। হজরত উসমান রাদিআল্লাহু আনহুর ঘটনা সবাই জানেন। উসমান রা. কে যখন মক্কায় আটকে রাখা হয়েছিল, তখন একটা গুজব ছড়িয়েছিল যে, উনি শহীদ হয়ে গেছেন। এমতাবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল, অন্যান্য কর্মসূচি পরে, শহীদের রক্তের বদলা আগে।
সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য ছিল, আমরা হজ-উমরা পরে করব, আমার ভাইয়ের খুনের বদলা আগে নেবো। এরকম ঘটনা আমাদেরও আছে। শাপলা চত্বরে আপনারা গেছেন। আমিও গেছি। এই শাপলা চত্বরের শহীদদের খুনের বদলা আগে নেবেন, তারপর অন্যকিছু। এটা সাহাবায়ে কেরামের তরিকা, এটা সাহাবায়ে কেরামের সুন্নত।
আরেকটি কথা বলতে চাই। কেবলমাত্র শাশ্বত ধর্ম ইসলামই নারীকে তার ন্যায্য অধিকার দিয়েছে, সম্মান দিয়েছে। কিন্তু নারীসমাজ তাদের নিজ মর্যাদা না বুঝে আধুনিকতার সাথে গা ভাসিয়ে পর্দাহীন চলাফেরা করার কারণে নারী নির্যাতন ব্যাপক হারে বেড়েছে। পবিত্র কোরআনের সাতটি আয়াত এবং প্রায় ৭০টির মতো হাদিস দ্বারা সর্বপ্রকারের বেপর্দা হারাম হওয়া সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়। ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা দিয়েছে, অন্য কোনো ধর্ম নারীকে এ মর্যাদা দিতে পারেনি। বাবার ঘরে মেয়ে হিসেবে নারীর মর্যাদা রয়েছে। স্বামীর ঘরে স্ত্রী হিসেবে এবং নিজ ছেলেমেয়ের জন্য ‘মা’ হিসেবে ইসলাম নারীকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছে।
নারীদের মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি জীবনের সকল স্তরে নারীদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে শুধুমাত্র ইসলাম। পশ্চিমাদের ফর্মুলায় নারী-পুরুষ সমান অধিকার কখনো সম্ভব নয়। সমান অধিকারের স্লোগানদাতারা মূলত সমান অধিকারের নামে নারীদের মাঠে নামিয়ে ভোগের পণ্য করতে চায়। তাই এদের থেকে নারীসমাজকে সতর্ক থাকতে হবে।
শরয়ী পর্দা নারীর ভ‚ষণ, ইজ্জত-আব্রু রক্ষার অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু আজ নারীসমাজ পশ্চিমাদের তালে তাল মিলিয়ে বেপর্দা উচ্ছৃঙ্খল ও উগ্রভাবে চলাফেরা করে নিজের ইজ্জত-আব্রু বিনষ্ট করছে। মানবরূপী নরপশু লম্পটদের ইভটিজিংয়ের স্বীকার হচ্ছে। বর্তমানে নারী নির্যাতনের ঘটনা চরম আকার ধারণ করেছে। পত্রিকার পাতা উল্টালেই নারী নির্যাতনের ভয়াবহ সংবাদ চোখে পড়ে। শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত আজ নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন। শুধু নির্যাতনই নয়, নির্যাতনের পর নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে তাদের।
নারী নির্যাতনের একমাত্র কারণই হচ্ছে- বেপর্দা, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা। তাই এগুলো প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হিসেবে ইসলামি অনুশাসন ও শরয়ী পর্দা মেনে চলার আহ্বান রইল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Tajul Islam Rahmani ২২ অক্টোবর, ২০১৮, ৩:৩৫ এএম says : 0
আমরা আল্লাহর কোরআন ও রাসূলের সুন্নাহ মোতাবেক চলব। এ অনুযায়ী আমাদের জীবনকে পরিচালিত করব। সাথে সাথে আমরা সাহাবায়ে কেরাম ও আকাবিরদেরকেও অনুসরণ করব।
Total Reply(0)
Nabil Mohammed Javed ২২ অক্টোবর, ২০১৮, ৩:৩৬ এএম says : 1
বিষয় দু'টো খুবই গুরুত্বপূর্ণ
Total Reply(0)
আরিফ ২২ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:৩২ এএম says : 0
জুনায়েদ বাবুনগরী আপনাকে আল্লাহ হায়াতে তায়্যিবাহ দান করুন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন