হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক বদু মিয়া এলাকার একজন আদর্শ চাষি হয়ে ওঠেছেন। তার খামারে এখন বার মাসী তরমুজ উৎপাদিত হচ্ছে। হলদে রঙের এ তরমুজ খেতে সুস্বাদু। দেখতেও সুন্দর।
জানা যায়, চায়না হতে আমদানি করা নতুন জাতের ফল এটি। রাজধানী ঢাকার অভিজাত হোটেলগুলোতে এ জাতীয় তরমুজের প্রচুর চাহিদা। বার মাস এ জাতের তরমুজ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করেন কৃষক বদু মিয়া। বদু মিয়ার দেখাদেখি অনেকেই এখন এ জাতীয় তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। অল্প সময়ে ফলন ও মূল্য ভাল পাওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা বদু মিয়ার খামার দেখতে আসছেন। বদু মিয়া তরমুজ চাষাবাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা দেখতে অনেক কৃষক এখন তার কাছে পরামর্শ চাইতে আসেন।
বদু মিয়া জানান, বিদেশি হলুদ জাতের তরমুজের বীজ চীন ও ভারত থেকে বীজ আমদানি করে জমিতে চাষ করেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া এ জাতীয় তরমুজ চাষের উপযোগী। এরপরই তার চিন্তায় আসে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হলুদ তরমুজ চাষ করার। এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছেন। তানীয়া মনিয়া, ব্ল্যাকবেরী, সামমাম এই তিন জাতের তরমুজে বদু মিয়ার ক্ষেত এখন ভরে গেছে। জমি চাষাবাদ করতে বীজ সার পরিচর্যাসহ প্রতি বিঘায় তার খরচ পড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তার ক্ষেতে ফলানো তরমুজ রাজধানীতে সরবরাহ করা হয়। মৌসুম ভেদে প্রতি কেজি তরমুজ ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বদু মিয়ার তরমুজের সফলতা দেখে মাধবপুরের অনেক কৃষক লাভজনক বারমাসী তরমুজ চাষ করতে এগিয়ে এসেছেন। এখন মাধবপুরে প্রায় ১৫/২০জন কৃষক বদু মিয়ার তরমুজ চাষাবাদ দেখে তরমুজ চাষাবাদ করে সফলতার মুখ দেখছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, উঁচু এলাকায় প্রায় অধিকাংশ সময় জমি পতিত পড়ে থাকত। কৃষক বদু মিয়ার নতুন জাতের তরমুজ ও অন্যান্য সবজির চাষবাদের সংবাদ কৃষি বিভাগের নজরে এলে ওই এলাকায় বিএডিসি’র উদ্যোগে শুকনো মৌসুমে সেচের জন্য সরকারিভাবে গভীর নলকূপ ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন খরা মৌসুমেও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা গভীর নলকূপ থেকে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুল হক জানান, কৃষক বদু মিয়ার নতুন জাতের হলুদ তরমুজ উৎপাদনে কৃষিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। তার হাত ধরে এখন কৃষকরা এ জাতের তরমুজ ও অন্যান্য ফসল করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বদু মিয়াকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন