শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাম্পার ফলন দামে ধস

বগুড়ায় রোপা আমন কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

মোঃ মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

বগুড়ার আদমদীঘি-সান্তাহারে এবার চলতি রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুরু হয়েছে কাটা-মাড়াই। তবে বাজারে ধানের দাম ধস নামায় ন্যায্যমুল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে হতাশায় ভুগছে কৃষকরা। কৃষকরা জানান, বাজারে ধানের যে দাম তাতে হালচাষ, রোপন, কাটামাড়াই ও মজুরি খরচ উঠছেনা। কৃষকরা বলেছেন, এখন রোপা আমনের ভরামৌসুম। এই সময়ে চাতাল ব্যবসায়ীরা হাটে-বাজারে ক্রয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু ধান ক্রয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এ কারণে দামও উঠছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার শতাধিক বন্ধ থাকা চাতাল মিল চালু হয় নি। ধানের সরকারী মূল্য নির্ধারণ হয়নি এখনও। মিল মালিকরা জানান, চালের বাজার মন্দার কারনে গত দুই বছর যাবত চাতাল মিল ও অটোরাইস মিল মালিকসহ ধানও চাল ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এতে মিল সংশিশ্লষ্ট নারীসহ শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভুগিরা জানান।
এলাকার চাতাল ও অটোমেটিক মিলমালিকদের গুদামে এখনো গত দুই বছরের শত শত টন পুরাতন চাল অবিক্রিত রয়েছে।
সান্তাহারের সালমান অটোরাইস মিল মালিক মাসুম বিল­াল জানান, গত কয়েক মাস আগে মিনিকেট চালের এক বস্তার (৫০ কেজি) দাম ছিল ২৪৫০ টাকা, এখন তা কমে ২০৫০ টাকা হয়েছে। স্বর্ণা চালের বস্তা আগে ছিল ২১৫০ টাকা। এখন হয়েছে ১৫০০ টাকা। বিআর-২৮ আগে ছিল ২১০০ টাকা বস্তা এখন তা কমে ১৬০০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য চালের দামও একই হারে কমছে।
চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, এখন প্রতি বস্তায় তাদেরকে দুই থেকে পাঁচ’শ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। একজন চাল ব্যবসায়ী বলেন, ব্যাংকের ঋণের টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা করতে হয়। লোকসানের কারণে ব্যাংকের টাকা নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। ওই ব্যবসায়ী বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন এ কারনে ভরা মৌসুমেও ধান ক্রয়ে কারোই তেমন আগ্রহ নেই। এতে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে হাটে-বাজারে ধান ক্রয় করার কারণে কৃষকরা তাদের নায্যমুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি রোপা-আমন ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যেই এবার আগাম কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রতিমন ধান ৬’শ থেকে ৭’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার কায়েত পাড়ার কৃষক ছাহের আলী ও শফির আলী জানান, এবার আগাম লাগানো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম নেই। শ্রমিকের মজুরী বেড়ে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকেই মাঠের পাকা ধান নিয়ে দুঃশ্চিতায় পড়েছেন। কৃষকদের মতে, সময়মত কাটামাড়াইয়ের কাজ শেষ করতে না পারলে সরিষা, আলু চাষে দেরি হবে- বিধায় ধান কাটা জরুরী হয়ে পড়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন