নাটোরের লালপুর উপজেলার মাঠ জুড়ে এখন শুধু সোনালী রোপা আমন ধানের ঢেউ। ধানের মিষ্টি গন্ধে মুখরিত এলাকা। ধানগুলিতে সবুজ থেকে সোনালী রংয়ে রূপ নিয়েছে। আর কিছু দিন পরেই শুরু হবে রোপা আমন ধান কাটা।
অনাবৃষ্টির কারনে এ বছর রোপা আমন নিয়ে কৃষকের মনে কিছুটা আশঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এখন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। মাঠের যে প্রান্তে দৃষ্টি দেয়া যায়না কেনো, ধানের রূপই বলে দিচ্ছে রোপা আমনে এবার আশানুরূপ ফলন হবে। তবে ধানের ভালো ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশায় আছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর লালপুর উপজেলায় ৭ হাজার ২৩১ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এই জমি থেকে প্রায় ২৩ হাজার ১৩৯ মেট্রিকটন চাউল উৎপাদন হবে বলে ধারনা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলার স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, লালপুর থানা উচুঁ ও কম বৃষ্টিপাতের এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে অন্যানো ধানের চাষাবাদ তেমন হয়না। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে শুধু বর্ষা মৌসুমে রোপা আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। যদিও এ বছরের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও ধানের ভরা মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরার কারনে রোপা আমনের চাষ নিয়ে ছিলো হতাশা। তবে শেষ পর্যন্ত রোপা আমন ধানের আশানুরূপ ফলন হতে যাচ্ছে। এদিকে উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় বাম্পার ফলনেও কৃষকের মনে রয়েছে হতাশার চিহ্ন।
রায়পুর গ্রামের ধানচাষী রূপচান আলী ইনকিলাব কে বলেন, এ বছর আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী রোপা আমনের চাষ করেছি আল্লাহর রহমতে ধানও ভালো হয়েছে। তবে প্রতি বছর সরকার কর্তৃক ধানের মূল্য নির্ধারিত করে দিলেও তৃণমূল চাষী পর্যায়ে সঠিক মূল্য না পাওয়ায় চাষীদের লোকসান গুনতে হয়। তাদের অভিযোগ, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চাষী পর্যায়ে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয় করলে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে এই অঞ্চলের কৃষকরা কিছুটা লাভের মুখ দেখবে।’
নান্দ গ্রামের ধানচাষী ইনছার আলী বলেন, প্রায় কৃষকই ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে রোপা আমনের চাষ করেছেন। বর্তমানে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে টাকা ব্যয় হয় ধান বিক্রয় করে সে টাকা আয় হয় না। তাই এ বছর ধানের আশানুরূপ ফলন হলেও দাম নিয়ে কৃষকদের মনে সংশয় রয়েই গেছে ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল ইসলাম খান ইনকিলাব কে বলেন, এ বছর লালপুর উপজেলায় লক্ষমাত্রা অধিক জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে রোপা আমন ধানের চাষ করায় ফলনও আশানুরূপ ভালো হয়েছে। দামের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার কর্তৃক ধানের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও তৃণমূল কৃষকরা তা পায় না। কৃষকদের নিকট থেকে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয় করা হলে এই অঞ্চলের কৃষকরা লভবান হবেন, পাশাপাশি আগামীতে রোপা আমন ধানের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন