শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তৃতীয় দিনেও তীব্র যানজট

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

মহান বিজয় দিবস ও সাপ্তাহিকসহ টানা তিন দিনের ছুটির কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে শুরু হওয়া যানজট গতকাল শনিবারও তৃতীয় দিনে অবস্থা আরো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এময় মহাসড়কের মেঘনা ব্রিজ থেকে কুমিল্লার গৌরীপুর পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়। শীতকালীন পিকিনিকের বাসগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্সের অসুস্থ যাত্রীসহ হাজার হাজার যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তিন দিনের ছুটির কারণে কর্মজীবী মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে এই অবস্থা। তবে হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানালেও যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব অবহেলার করণেই এ ভোগান্তি। সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর হয়ে মেঘনা টোল প্লাজা এবং অপর প্রান্তে দাউদকান্দি সেতু থেকে গৌরিপুর এলাকা পর্যন্ত যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
অনেকেই যানজটের কারণে গৌন্তব্যে পৌঁছতে না পারায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে পিকনিকের কার্যক্রম শেষ করে ফিরে গেছেন। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পিকআপের চালক আবুল কালাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সকাল ৯টার দিকে সাইনবোর্ড থেকে মালামাল নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশে যাত্রা করেন। বেলা ১২টার দিকে মহাসড়কের মেঘনা সেতু এলাকায় এসে যানজটে আটকা পড়েন। এক ঘণ্টায় তিনি চার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে মেঘনা সেতু পর্যন্ত আসতে পেরেছেন।
কুমিল্লা থেকে ছেড়ে আসা তিশা পরিবহনের যাত্রী নাজমা বেগম, রাইমা আক্তার, হাশেম মিয়া জানান, সকাল ৮ টার দিকে গাড়িতে উঠেন। কুমিল্লা থেকে গৌরীপুর আসেন আধা ঘণ্টায়। গৌরীপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত আধা ঘণ্টার রাস্তায় আসতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। গতকাল শনিবার দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে প্রায় ১০ ঘণ্টা যাবত মহাসড়কে আটকে থাকতে হয়। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা ছিল না। যানজটের ফলে যাত্রীদের একদিকে যেমন দীর্ঘ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। তেমনি অনেক যাত্রী ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে বিপাকে পড়েন অপরদিকে তারা অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
নারায়নগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা শীতকালীন পিকনিক করতে পরিবার পরিজনদেরকে নিয়ে কুমিল্লার ময়নামতি শালবন বিহারের উদ্দেশ্য ভোর ৬ টায় রওনা হয়ে মহাসড়কের কাঁচপুর এসে যানজটে আটকা পড়ে। কাঁচপুর থেকে ইলিয়টগঞ্জ পৌঁছতে ৮ ঘণ্টা তাদের সময় লেগেছে বলে জানান পিকনিক কমিটির সভাপতি শান্তি রঞ্জন সাহা।
ঢাকা থেকে মাধাইয়া আসা যাত্রী মো. নোমান জানান, তার এক আত্মীয়র জানাজায় অংশগ্রহণ করার জন্য ভোর ৬ টায় বাসে উঠে, সিত্রনজি করে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে দুপুর ১২টায় মাধাইয়া পৌঁছেন বলে জানান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটি কার্গো গাড়ির ড্রাইভার রহমত আলী জানান, দাউদকান্দি থেকে চান্দিনা পৌঁছতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা। ভিআইপি যাত্রীসহ বিদেশ গমনের যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে বসে থাকতে দেখা গেছে। নোয়াখালী গামী যাত্রীরা জানান, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোর কারণে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। যানজটের ফলে গৌরীপুর থেকে দাউদকান্দি সেতু পেরিয়ে গজারিয়া এলাকা পর্যন্ত ১০-১২ কিলোমিটার রাস্তা বহু যাত্রী, শিশু, পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়েছে। তবে মহাসড়ক নিয়ে এই সমস্যাটি দীর্ঘদিন চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সমস্যাটি প্রকট আকার ধারন করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
রিপন ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:৩০ এএম says : 0
সড়ক. না উন্নয়নের মহাসড়ক এটি? কোন কাউয়া উড়তে দেখি না! খালি গাড়ি আর গাড়ি; কবে যাবো বাড়ি! দু' হাজার একচল্লিশ সালে নয় তো?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন